বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জয়াসুরিয়ার পরামর্শ

‘আমার ক্লাব মোহামেডান, সেখানে সময়টা আমি দারুণ উপভোগ করছি’- বক্তা সনাথ জয়াসুরিয়া। বিস্ফোরক বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এখন দ্বিতীয় দফায় শ্রীলঙ্কার প্রধান নির্বাচক। লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে কাছ থেকে দেখা লঙ্কান গ্রেট কুসল মেন্ডিসের ইনিংস থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

ক্রীড়া প্রতিবেদক গল থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2017, 08:22 AM
Updated : 10 March 2017, 04:40 PM

ঢাকার ক্রিকেটের অন্যতম জনপ্রিয় দল মোহামেডানের ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে ও ২০০৯ সালে খেলেছিলেন জয়াসুরিয়া। ২০১২ সালে বিপিএলের প্রথম আসরে ছিলেন খুলনা রয়েল বেঙ্গল দলে। 

গল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার টেস্টের চতুর্থ দিন সাবেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কথা বলেন বাংলাদেশের সংবাদকর্মীদের সঙ্গে।

“বাংলাদেশ খুব ভালো করছে, ওরা উন্নতি করেছে আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তরুণরা উঠে আসছে। এই মুহূর্তে ওদের খুব ভালো একটি দল রয়েছে। এই দল অনেক বছর ধরে খেলছে। পারফরম্যান্সে উত্থান-পতন আছে, তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট অনেক কিছু করেছে।”

আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের থিতু হলে বড় ইনিংস খেলার জন্য আরও প্রত্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দিলেন জয়সুরিয়া।

“থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে না পারা ভালো কথা নয়। টেস্টে আপনি ৫০ পেরুতে পারলে আপনাকে শতক করতে হবে। চেষ্টা করতে হবে সেটিকে আরও বড় করার জন্য।”

“এটা পুরোপুরি মানসিক ব্যাপার। যদি কেউ সুযোগ পায় তার কুসল মেন্ডিসের মতো বড় শতক করা উচিত। এটা দলকে সহায়তা করবে। আপনার সব সময় দলের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান থেকে একটি বড় শতক প্রয়োজন।” 

ক্রিকেটের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানদের একজন জয়াসুরিয়া। এক সময়ে দ্রুততম শতক ও অর্ধশতকের রেকর্ড ছিল তার অধিকারে। পিঞ্চ হিটিংকে দিয়েছিলেন অন্য মাত্রা। রুমেশ কালুভিথারানার সঙ্গে গড়েছিলেন ওয়ানডের সবচেয়ে বিধ্বংসী উদ্বোধনী জুটির একটি। খেলার ধরন দারুণভাবে মানিয়ে যেত টি-টোয়েন্টির সঙ্গে। তবে তার কাছে টেস্ট ক্রিকেটই সবার আগে।

“আমার খেলার ধরন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। এটা টেস্ট, ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি সব ধরনের ক্রিকেটের সঙ্গেই মানানসই। সবাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উপভোগ করে, আমিও। তবে আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট ক্রিকেট। আমি টেস্ট ক্রিকেট ভালোবাসি এবং এটা অব্যহত থাকবে।”

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ১২ হাজার রান ও তিনশ’ উইকেট নিয়েছিলেন জয়াসুরিয়া। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাকে রাখা হয় সেরা অলরাউন্ডারদের ছোট্ট তালিকায়। ১৯৯৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক, ১৯৯৬ সালে দলের বিশ্বকাপ জয়ে ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

গত এপ্রিলে দ্বিতীয়বারের মতো নেন প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব। রাজনীতিকে পেছনে ফেলে তার পূর্ণ মনোযোগ এখন শ্রীলঙ্কা দল পুনর্গঠনের দিকে।

“তরুণদের নিয়ে শ্রীলঙ্কার দল পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি আমরা। তরুণ প্রতিভাবান কয়েকজন ক্রিকেটার রয়েছে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের থিতু হতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। আমরা দেশের মাটিতে ভালো করছি কিন্তু প্রধান নির্বাচক হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি নই। আমরা পালা-বদলের মধ্যে আছি। ছেলেদের থিতু হতে সময় দিতে হবে।”

রাতারাতি কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনের বিকল্প পাওয়া যাবে না। তবে উঠে আসছে তরুণরা। জয়াসুরিয়ার বিশ্বাস, মেন্ডিসের মতো তরুণরাই হতে পারেন নতুন তারকা।

“সে বড় ইনিংসের খেলোয়াড়। দক্ষিণ আফ্রিকায় কঠিন সময় কাটিয়ে এসেছে। দুয়েকটা অর্ধশতক করেছে কিন্তু শতক পায়নি। এর আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বড় একটি শতক করেছিল, আমরা ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিলাম। সে এই ম্যাচে একটি সুযোগ পেয়েছে আর ১৯৪ রান করেছে। ব্যাপারটা এমনই হওয়া উচিত।”

সুযোগ পেলে বড় ইনিংস খেলা উচিত- মানেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও। মাঠে কাজটা করে দেখাতে পারলেই টেস্টে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।