দুর্গের আড়ালে দুর্গ

অনেক দূর থেকেই নজর কেড়ে নেয় চারশ’ বছরের পুরানো গল ফোর্ট। দুই ধারে দেখা মিলে ভারত সাগরের। তারই মাঝে গল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম- লঙ্কান গ্রেটদের নিজেদের জাত চেনানোর মঞ্চ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতগল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2017, 11:18 AM
Updated : 4 March 2017, 11:26 AM

দুর্গ, ঘড়ি টাওয়ার, সমুদ্র, মাঠের সবুজ গালিচা- সব মিলিয়ে গল ক্রিকেট স্টেডিয়াম বিশ্বের সুন্দরতম মাঠের একটি। সেই সৌন্দর্য্য উপভোগের সুযোগ অতিথি দলের সহজে মিলে না। মাঠে নিজেদের বাঁচাতেই তো বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। অন্তত পরিসংখ্যান তাই বলছে।

লঙ্কান রাজত্বে হানা দেওয়ার চেষ্টায় থাকা বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ পড়েছে খোদ সিংহের ডেরায়। গলে খেলা ২৮ ম্যাচে স্বাগতিকরা ১৬টিতেই জিতেছে, হেরেছে ৬টিতে। ড্র হয়েছে ৬টি ম্যাচ।

লঙ্কান ক্রিকেট দুর্গ ঢাকা পড়ে থাকে ১৫৮৮ সালে পতুর্গিজদের বানানো এক দুর্গের আড়ালে। মাঝে ডাচদের স্পর্শ পাওয়া এই স্থাপত্য সোয়া চারশ’ বছর পরও তেমনি অটল দাঁড়িয়ে। ২০০৪ সালের ভয়ঙ্কর সুনামিতে গলের মাঠ পুরোপুরি ভেসে গিয়েছিল। নতুন করে গড়ে তুলতে হয় এটি।

১০ বছর আগে এই মাঠ পুনর্গঠন করা শ্রীলঙ্কা এখন আছে নতুন করে দল সাজানোর প্রক্রিয়ায়। মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, তিলকারত্নে দিলশানরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন, রঙ্গনা হেরাথেরও যাওয়ার পালা। তবে বরাবরের মতোই গলে নিজেদের পারফরমার পেয়ে গেছে দেশটি।

গলে সবচেয়ে বেশি রান করা জয়াবর্ধনে (২ হাজার ৩৮২) আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাঙ্গাকারার (১ হাজার ৯২১) ধারে কাছে যেতে এখনও অনেক বাকি দিনেশ চান্দিমালের। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজিত ১৯০ রানের চমৎকার ইনিংস খেলা উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান এই মাঠেও দারুণ খেলেন। গলে ৭ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ৬৩.২০ গড়ে ৬৩২ রান করেছেন তিনি।

১৫ ম্যাচে ১৮.৫০ গড়ে ১১১ উইকেট নিয়ে গলে সবার ওপরে মুত্তিয়া মুরালিধরন। তার ১১ বার ৫ উইকেট আর চারবারের ১০ উইকেটকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হেরাথ ২৩.৮৮ গড়ে নিয়েছেন ৮৪ উইকেট। বাঁহাতি এই স্পিনারের পাঁচ উইকেট ৮ বার, ১০ উইকেট ৩ বার।

গলে মাত্র ৪ টেস্টেই ২৯ উইকেট নিয়েছেন দিলরুয়ান পেরেরা। ৩৪ বছর বয়সী এই অফ স্পিনার এরই মধ্যে এখানে একবার দশ উইকেট, দুইবার পাঁচ উইকেট নিয়েছেন।

গলে প্রাপ্তি আছে বাংলাদেশেরও। শ্রীলঙ্কায় একমাত্র এই মাঠেই তারা হারেনি। ২০১৩ সালে এখানে খেলা একমাত্র টেস্টে রানের পাহাড় গড়ে ড্র করেছিল মুশফিকুর রহিমের দল। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের ৬৩৮ রান এখনও গলে টেস্টে সর্বোচ্চ সংগ্রহ। মোহাম্মদ আশরাফুল-মুশফিকের ২৬৭ রানের জুটি পঞ্চম উইকেট তো বটেই গলে যে কোনো উইকেটেই সর্বোচ্চ।

এবার নিশ্চয়ই আরও ভালো কিছু করার দিকেই থাকবে বাংলাদেশ দলের নজর।