উইকেটের সামনে মুশফিক দলের বড় ভরসা বরাবরই। তবে উইকেটের পেছনে শঙ্কার নাম। প্রায় প্রতি টেস্টেই হাতছাড়া করেন গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ বা স্টাম্পিং। হায়দরাবাদ টেস্টেই যেমন ঋদ্ধিমান সাহাকে স্টাম্পড করার সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। ভারতীয় কিপার ব্যাটসম্যান পরে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন সেঞ্চুরি করে। সেই ঋদ্ধিমানকেই অবশ্য নিজের ভুলের ঢাল বানাতে চাইলেন মুশফিক।
“পৃথিবীতে এমন কোনো কিপার নেই, যাদের ভুল হয় না। আমার দেখা সেরা কিপার এখন সাহা (ঋদ্ধিমান)। আমি ওকে অনেক কিছুতে অনুসরণ করার চেষ্টা করি। কারণ তার সব কিছুই অনেক পরিষ্কার। সেও কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যাচ মিস করেছে। আমাদের বিপক্ষেও কিন্তু সে রিয়াদ ভাইয়ের ক্যাচ মিস করেছে। এখন রিয়াদ ভাই যদি টেস্ট ড্র করে ফিরত, তখন কিন্তু দৃশ্যপট অন্যরকম হতো।”
“আমরা সব সময়ই সজাগ থাকি। তারপরও অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। যদিও আমাদের চেষ্টাটা একই রকম থাকে। সেজন্যই জাতীয় দলে আসা। ক্রিকেট আমাদের রুটি-রুজি। এখানে বেইমানি করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সব সময় সবকিছু ঠিক রাখার চেষ্টা করি। তারপরও আমরা মানুষ, ভুল হয়ে যায়। হতেই পারে।”
বরাবরই মুশফিক বলে এসেছেন, কিপিং তার ভালো লাগার জায়গা। পাশাপাশি নেতৃত্ব, চালিয়ে যেতে চান তিন দায়িত্বই। হায়দরাবাদ টেস্ট শেষে নিজের অবস্থান জানিয়ে সিদ্ধান্তের দায়িত্ব ছেড়েছিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর। শ্রীলঙ্কা যাত্রার আগেও বললেন একই কথা।
“যদি ব্যক্তিগতভাবে বলতে বলা হয়, এখনও আমার মনে হয় যে কিপার এবং ব্যাটসম্যান হিসেবেই আমি দলের জন্য সবচেয়ে ভালো অবদান রাখতে পারি। আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হবে, সেটাই পালন করব। বাকিটা টিম ম্যানেজমেন্টের উপর নির্ভর করছে।”
এমন নয় যে শুধু কিপিংয়ে ভুলের কারণেই দলের ভোগান্তি হচ্ছে। কিপিং করছেন বলেই দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হয়েও মুশফিককে ব্যাট করতে হচ্ছে ছয় নম্বরে। বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বজুড়েই বিশেষজ্ঞরা এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রায়ই। এত নীচে ব্যাট করতে হওয়ায় তার ব্যাটিং সামর্থ্যের পুরোটা পাওয়া যায় না প্রায়ই। মুশফিক এই সিদ্ধান্তও ছেড়ে দিলেন টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর।
“দলের কম্বিনেশন এখন খুব ভালো। আমি ওপরে ব্যাটিং করবো কিনা, সেটা ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। টপ অর্ডারে যারা আছে, তারা ভালো করছে না বলেই হয়তো এ কথা আসছে। ওপরে ব্যাটিং করবো কিনা, এ নিয়ে চিন্তা আছে। ভবিষ্যতে যদি সে রকম কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে হয়তো হতে পারে। এটা আসলে চিন্তার বিষয়। দলের স্বার্থে যদি করতে হয়, আমি রাজি।”
এসব সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্টের ওপর নির্ভর করে অবশ্যই। তবে সেটির অংশ তো মুশফিক নিজেও! দলের অধিনায়ক তিনি। চাইলেই প্রতিটি সিদ্ধান্তে রাখতে পারেন বড় ভুমিকা। হয়ত রাখছেনও। তিনি চাইলেই আসবে বদল। তিনি চাইছেন বলেই চালিয়ে যাচ্ছেন তিন দায়িত্ব।