বোলার রাব্বির ব্যাটিং ভাবনা

আমার পরিকল্পনা ছিল সময় নষ্ট করা। কারণ, আমি জানতাম আমরা জিততে পারবো না। পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা শেষ করা- বলছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। শুধু মুখের কথা নয় এই পেসারের কাজেই আছে মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকতে চাওয়ার প্রমাণ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2017, 01:27 PM
Updated : 15 Feb 2017, 01:27 PM

এই ভাবনা আর সংকল্পে যদি অটুট থাকতেন দলের মূল ব্যাটসম্যানরা তাহলে হায়দরাবাদ টেস্টের চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো।

বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন রাব্বি। সেই সময়ই জানান নিজের ব্যাটিং ভাবনা।

“আমার মনে ওই মুহূর্তে কাজ করছিল যে, তাসকিন (আহমেদ) ও তাইজুল (ইসলাম) ভালো ব্যাটিং করে। আমার চিন্তা ছিল, যদি শেষ পর্যন্ত অন্য সব উইকেট পড়েও যায় তাহলে তাসকিনকে নিয়ে এক ঘণ্টা খেলা সম্ভব।”

“আমার কথা হল, আমি তখন পাঁচটা ছক্কা মারলেও জেতার সম্ভাবনা একেবা্রেই ছিল না, আবার আউট হয়ে গেলে তখনই খেলা শেষ হয়ে যায়। আমার পরিকল্পনা ছিল সময় নষ্ট করা। কারণ, আমি জানতাম আমরা জিততে পারবো না। পরিকল্পনা ছিল ম্যাচটা শেষ করা।”   

৭০ বলে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন রাব্বি। ব্যাট হাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার প্রবণতা নিউ জিল্যান্ডে আগের সফরেই দেখিয়েছিলেন তিনি।

দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২ রান করতে খেলেন ৬৩ বল, টিকে ছিলেন ৯২ মিনিট। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯ বলে করেন অপরাজিত ২৫ রান।

বোলার হলেও সব সময়ই ব্যাট হাতে অবদান রাখার চেষ্টা করেন রাব্বি। বোঝার চেষ্টা করেন ম্যাচের পরিস্থিতি, মেটানোর চেষ্টা করেন সময়ের দাবি।

“আমার পরিকল্পনা একটাই থাকে, দলের প্রয়োজনে আমি যে কোনো কিছু করবো। নিউ জিল্যান্ডে যেদিন রক্ষণাত্মক খেলা দরকার ছিল সেদিন রক্ষণাত্মক খেলেছি আর যেদিন রান করা দরকার ছিল সেদিন রান করেছি।”

“হায়দরাবাদ টেস্টে আমার কাজ ছিল সময়টা কাটিয়ে দেওয়া, আমার ব্যাটসম্যানকে সাপোর্ট দেয়া- আমি ওটাই করার চেষ্টা করেছি। আমার পরিকল্পনা ছিল, ম্যাচ শেষ করে বের হব, ওই পর্যন্ত আমাকে ব্যাটিংয়ে থাকতে হবে। আমি ওই চিন্তা করেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম।”

রাব্বির বিশ্বাস টেলএন্ডার ব্যাটসম্যানরা মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে পারলে মূল ব্যাটসম্যানরা তাদের ওপর আস্থা রেখে খেলতে পারবেন।

“এই জিনিসটা অবশ্যই দলকে সাহায্য করবে। সবার বিশ্বাস থাকবে শেষের দিকে নেমেও ও শেষ করে আসতে পারবে।”

ব্যাট হাতে মুগ্ধ করলেও নিজের আসল কাজ অর্থাৎ বোলিং খুব একটা ভালো হয়নি রাব্বির। এই ডানহাতি পেসার মনে করেন, এই ক্ষেত্রেও ধৈর্যের কোনো বিকল্প নেই।

“বোলিংটা যদি আরও ভাল করতে পারতাম তাহলে ওদের রান এত বেশি হত না। আর রান কম হলে আমরা শেষে আরও ভাল করতে পারতাম এবং ম্যাচের ফলও ভিন্ন হত।”

“আমরা যারা পেসার তাদের উচিত ছিল আরও ধৈর্য ধরে এক জায়গায় বল করা। তবে যেহেতু খুব কম ম্যাচ খেলেছি তাই আমাদের আরও শেখার আছে। এই ম্যাচ দিয়ে সামনের দশ বছর কিভাবে খেলবো সেটা বুঝেছি। উপমহাদেশে কিভাবে কিভাবে খেলা উচিত সেটা বুঝেছি।”

৫ টেস্টে ৫৬.৮৫ গড়ে ৭ উইকেট নেওয়া ২৫ বছর বয়সী রাব্বি মরিয়া উন্নতির পথে থাকতে।

“ইংল্যান্ডের সাথে আমার ভুলগুলো ঠিক করে নিউ জিল্যান্ড সিরিজে ভালো পারফর্ম করেছি। তেমনি ভারতের সাথে আমার যে সমস্যাগুলো হয়েছে সেগুলো সংশোধন করতে পারলে শ্রীলঙ্কা সিরিজে আরও ভালোভাবে পারফর্ম করতে পারবো, যদি দলে থাকি।”

কদিন পরেই শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ দলের।