ডিফেন্স করে ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব নয়: মুশফিক

পরিস্থিতি যাই হোক সহজাত ক্রিকেট খেলার পক্ষেই অবস্থান নিলেন মুশফিকুর রহিম। হায়দরাবাদ টেস্টের পঞ্চম দিন বাংলাদেশের অধিনায়ক নিজেই আউট হয়েছেন অহেতুক রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে উড়িয়ে মারার ঝুঁকি নিতে গিয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2017, 01:42 PM
Updated : 13 Feb 2017, 02:51 PM

চতুর্থ দিন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ জানিয়েছিলেন, ম্যাচ বাঁচাতে লক্ষ্য হওয়া উচিত উইকেট আঁকড়ে পড়ে থাকা। এক সেশন বাকি থাকতে টেস্ট হেরে যাওয়ার পর অধিনায়ক মুশফিক জানালেন, এভাবে সম্ভব নয়।

“ডিফেন্স করে কখনোই কোনো ম্যাচকে বাঁচানো কিংবা জেতা সম্ভব নয়। সাকিব (আল হাসান) তো আজকে একটা বলও মারতে যায়নি, তারপরও আউট হয়ে গেছে। আমি প্রথম ইনিংসে একটা বাজে বলও খেলিনি তারপরও আউট হয়ে গেছি।”

অধিনায়কের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে আউট তার ধরন নয়।

“কে কিভাবে আউট হবে এটা কখনো বলা যায় না। (আউট হওয়ার পর) অনেকে বলতে পারে বলটা মারা উচিত হয়নি। না মারলেই যে সারাদিন খেলা সম্ভব সেটা বলা কঠিন।”

ভারতের মাটিতে পঞ্চম দিন ৩৫৬ রান দরকার ছিল বাংলাদেশের। হাতে ছিল শেষ ৭ উইকেট। জয়ের বাস্তবিক কোনো সম্ভাবনা ছিল না। মুশফিক জানান, পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়লে আরও চেপে ধরতে পারতো ভারতীয়রা।

বাংলাদেশ ওয়ানডেতে সবেচেয়ে সফল। টেস্ট খেলার সময়ও সেই সংস্করণের অনেক কিছু থাকে ক্রিকেটারদের ভাবনায়। অন্তত মুশফিকের কথায় মিলল তারই ইঙ্গিত।

“দিনশেষে একজন ব্যাটসম্যানকে রান করতে হবে। যখন একজন ব্যাটসম্যান রান করবে তখন একজন বোলার চাপে থাকবে। একজন বোলার যদি জানে এই ব্যাটসম্যান মারবেই না। তখন কিন্তু তার কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।”

বোলাররা তেমন একটা সুবিধা পাচ্ছেন না, এমন উইকেটে মাটি কামড়ে পড়ে থাকা যে ভালো কৌশল হতে পারে সেটার প্রমাণ খুঁজতে বেশি দূর যেতে হচ্ছে না। নয় নম্বরে নেমে ৭০ বলে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ঠিক একই দৃঢ়তা এর আগের সিরিজেই দেখিয়েছিলেন তিনি।

“আজকে রাব্বি অনেক বল খেলেছে। সে স্বীকৃত একজন বোলার, ব্যাটসম্যান নয়।”

“আমাদের হয়তো ভুল সময়ে উইকেটগুলো পড়ে গেছে। প্রথম দুই ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমে সাকিব পরে আমি আউট হয়ে গেলাম। কিন্তু (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাই আর সাব্বির (রহমান) ভালো খেলেছে লাঞ্চ পর্যন্ত।”

দ্বিতীয় সেশনে শেষ ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুশফিক জানান শেষ দিনে তাদের ঠিক কী পরিকল্পনা ছিল।

“আমাদের প্রথম পরিকল্পনা ছিল আমরা যতটা কম উইকেট হারিয়ে লাঞ্চে যেতে পারি। তারপর চা বিরতি পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। তাহলে শেষ সেশনে ওদের ভিন্ন পরিকল্পনা করতে হত। কিন্তু তার আগেই আমরা আউট হয়ে গেছি।”

ভারতের পরিকল্পনা ছিল দুই সেশনের মধ্যে জয় তুলে নেওয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ করতে দারুণ বোলিং করেন ইশান্ত শর্মা, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা। তাদের প্রাপ্য কৃতিত্ব দিলেন মুশফিক।

“ওরা জানে পঞ্চম দিনে কিভাবে বোলিং করতে হয়। সেজন্যই তারা টেস্টের শীর্ষ দল।”

“এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় একটা ব্যাপার। এমন কন্ডিশনে আমরা শেষ কবে খেলেছি? এটা মেহেদী হাসান মিরাজের জন্য যেমন আমার জন্যও তেমন শিক্ষণীয় ছিল। যদিও আমি অনেক ম্যাচ খেলেছি। আমাদের বেশিরভাগ ম্যাচই ৩/৪ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যেত।”

চলতি বছর আরও অনেক টেস্ট আছে বাংলাদেশের। আগামী মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ খেলবে তারা। সেই সিরিজের জন্য হায়দরাবাদ টেস্ট থেকে অনেক কিছু নেওয়ার আছে মুশফিকদের।

“হেরেছি খারাপ লাগছে। তারপরও আমার মনে হয় এখান থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিয়ে যাওয়া উচিত।”