হয়ত মিসফিল্ড দেখে হাসি। ভেবেছিলেন সিঙ্গেলই হবে, বুঝে উঠতে পারেননি যে তিন অঙ্ক ছুঁয়েই ফেলেছেন! হেলমেট খুলে যখন উঁচিয়ে ধরলেন ব্যাট, তখনও হাসছেন। সঙ্গী তাসকিন আহমেদ এসে জড়িয়ে ধরার পর আরও চওড়া সেই হাসি। হাসছে তখন গোটা বাংলাদেশও। ভারতে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে রাঙালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বীরোচিত ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরেছিলেন আগের দিনই। এদিন ছিল কেবল টেনে নেওয়ার পালা। দিনের প্রথম ওভারেই হারিয়েছেন আগের দিন লড়াইয়ের সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজকে। খানিক পর নেই তাইজুল ইসলামও। মুশফিকও নিজের করণীয়টা বুঝে নিলেন। বদলাতে হবে ছুটে চলার গতি। পরের ওভারেই ইশান্ত শর্মাকে পুল করে ছক্কা। উমেশ যাদবকে ফ্লিক করে ইশান্তের মিস ফিল্ডিংয়েই সেঞ্চুরি, ২৩৪ বলে।
মুশফিকের এটি পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি। ছাড়িয়ে গেলেন মুমিনুল হক ও সাকিব আল হাসানকে। মুশফিকের ওপরে এখন মোহাম্মদ আশরাফুল (৬) ও তামিম ইকবাল (৮)।
মুশফিক পাঁচটি সেঞ্চুরি করলেন পাঁচটি ভিন্ন দেশে! প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল ভারতের বিপক্ষেই ২০১০ সালে চট্টগ্রামে। এরপর বাংলাদেশকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে করেছিলেন আরেকটি সেঞ্চুরি। এবার হায়দরাবাদের এই সেঞ্চুরির আগের টেস্টেই ওয়েলিংটনে অসাধারণ ১৫৯।
বাংলাদেশের হয়ে তিনটির বেশি দেশে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানও আর নেই। তামিমের ৮ সেঞ্চুরির ৫টি বাংলাদেশে; ইংল্যান্ডে দুটি, একটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে। আশরাফুলের ৬ সেঞ্চুরির তিনটি দেশে, তিনটি শ্রীলঙ্কায়। সাকিবের চার সেঞ্চুরির দুটি বাংলাদেশে, দুটি নিউ জিল্যান্ডে। মুমিনুল হকের চারটিই দেশে।
টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান মুশফিক। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে করেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১৪ সালে আবার টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মাঝে ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই টেস্টে করেছিলেন মুমিনুল।
সেঞ্চুরির পরও থামেননি মুশফিক। অশ্বিনকে টানা দু বলে মেরেছেন চার ও ছক্কা। লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে এগিয়ে নিয়েছেন দলকে। শেষ পর্যন্ত শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে অশ্বিনের বলে আউট হয়েছেন ১২৭ রানে।
সব অর্থেই তাই নিজের সীমানা আরও ছাড়িয়ে, আরও বাড়িয়ে নিচ্ছেন মুশফিক। সেটি ভিন্ন ভিন্ন দেশে সেঞ্চুরিতে যেমন, তেমনি ব্যাটসম্যানশিপেও!