ট্রিপল সেঞ্চুরির পরও বাদ!

আগের টেস্টেই নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসে। মুখে ছিল গৌরবের হাসি। এবারও গড়লেন নতুন ইতিহাস। তবে মন মন ভার থাকারই কথা। এমন রেকর্ডে নিশ্চয়ই নাম লেখাতে চাননি করুন নায়ার!

ক্রীড়া প্রতিবেদক হায়দরাবাদ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2017, 06:01 AM
Updated : 9 Feb 2017, 12:54 PM

ভারতের সবশেষ টেস্টেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ এক ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন নায়ার। বাংলাদেশের বিপক্ষে হায়দরাবাদ টেস্টেই জায়গা পেলেন না একাদশে। যার চোটের কারণে নায়ার জায়গা পেয়েছিলেন, সেই অজিঙ্কা রাহানে যে ফিরেছেন!

খুব একটা চমক হয়ে অবশ্য আসেনি এই সিদ্ধান্ত। টেস্টের আগের দুদিনে ভারত কোচ অনিল কুম্বলে ও অধিনায়ক বিরাট কোহলি একরকম নিশ্চিতই করে দিয়েছিলেন, চোট কাটিয়ে ফেরা রাহানে ফিরে পাবেন তার জায়গা।

নায়ারের মতোই অভিজ্ঞতা হয়েছিল অ্যান্ডি স্যান্ডহ্যামের। টেস্ট ক্রিকেটকে প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছিলেন অ্যান্ডি স্যান্ডহ্যাম। তবে দলে জায়গা নিশ্চিত করতে পারেননি। ১৯৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জ্যামাইকা টেস্টে। তবে পরের টেস্টেই ফিরেছিলেন নিয়মিত দুই ওপেনার হাবার্ট সাটক্লিফ ও জ্যাক হবস। পরের টেস্ট তো বটেই, তার কখনোই টেস্ট খেলতে পারেননি স্যান্ডহ্যাম। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে স্যান্ডহ্যামের রান ৩২৫ ও ৫০!

ট্রিপল সেঞ্চুরি করে দলের পরের টেস্টটিই খেলতে পারেননি লেন হাটন ও ইনজামাম-উল-হকও। তবে বাদ পড়েনিনি দুজনের কেউই।

বড় রান করেও বাদ পড়ার সবচেয়ে বিখ্যাত ঘটনাটি সম্ভবত জিওফ বয়কটের। ১৯৬৭ সালে ভারতের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে করেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ২৪৬ রান। তবে অতিরিক্ত ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে প্রশংসার বদলে বেশি জুটেছিল গঞ্জনা! যেটির ফল, বাদ পড়েছিলেন পরের টেস্টের একাদশ থেকে।

ডাবল সেঞ্চুরি করেও পরের টেস্টে জায়গা না পাওয়ার আলোচিত উদাহরণ আছে আরও দুটি। দুবারই জড়িয়ে বাংলাদেশের নাম। ২০০২ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এক দিনে ৫০৯ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। সেদিন ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন অরবিন্দ ডি সিলভা। তরুণদের সুযোগ দেওয়ার জন্য পরের টেস্টে বিশ্রাম দেওয়া হয় ডি সিলভাকে। পরে আর কখনোই টেস্ট খেলা হয়নি লঙ্কান গ্রেটের।

আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি তো টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে অদ্ভুত ডাবল সেঞ্চুরিগুলোর একটি। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন জেসন গিলেস্পি। নাইটওয়াচম্যানের ডাবল সেঞ্চুরি সেটিই প্রথম ও একমাত্র। কিন্তু ততদিনে আসল কাজ বোলিংয়ে ধার অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই হারালেন জায়গা। সেটিই হয়ে থাকল তার ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট!

ট্রিপল-ডাবল সেঞ্চুরি নয়, তবে বড় রান করেও জায়গা হারানোর গল্পে নাম আসতে পারে কেভিন পিটারসেনেরও। পূর্বসূরি বয়কটের মতো তার ইনিংসটি ছিল হেডিংলিতেই। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৪৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ওই টেস্টের পরই তার তুমুল আলোচিত-সমালোচিত এসএমএস কেলেঙ্কারি। যেটির জের ধরে জায়গা হারিয়েছিলেন দলে। পরে আবার দলে ফিরলেও শেষের শুরু ছিল ওখানেই।

এই রেকর্ডে পাশাপাশি থাকলেও নায়ার নিশ্চয়ই চাইবেন না স্যান্ডহ্যাম-গিলেস্পিদের মত ক্যারিয়ার শেষ করতে!