দুর্দান্ত শেষ ওভারে ভারতের জয়ের নায়ক বুমরাহ

আগের তিন ওভারে আঁটসাঁট বোলিং করা আশিষ নেহরার খরুচে শেষ ওভারে ম্যাচ চলে যায় ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয়। সিংহের থাবা থেকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ছিনিয়ে নিতে অসাধারণ এক শেষ ওভার করেন জাসপ্রিত বুমরাহ। মাত্র দুই রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতের জয়ের নায়ক এই পেসারই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2017, 05:45 PM
Updated : 29 Jan 2017, 05:45 PM

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটের নাটকীয় জয়ে সিরিজে টিকে থাকল ভারত, আনল ১-১ সমতা।

ম্যাচের শেষ ওভারে ৮ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। হাতে ছিল ৬ উইকেট। কিন্তু বুমরাহর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে সেই ওভারে জো রুট, জশ বাটলারকে হারানো অতিথিরা দুই রানের বেশি নিতে পারেনি।

রোববার নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান করে ভারত। জবাবে ৬ উইকেটে ১৩৯ রান করে ইংল্যান্ড। 

লক্ষ্য তাড়ায় চতুর্থ ওভারে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারায় অতিথিরা। পরপর দুই বলে স্যাম বিলিংস ও জেসন রয়কে ফিরিয়ে দেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার নেহরা। অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যানের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন রুট।

একাদশ ওভারের প্রথম বলে মর্গ্যানকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ ভাঙেন অমিত মিশ্র। এক বল পরে দারুণ এক ডেলিভারিতে বেন স্টোকসের উইকেট পেতে পারতেন এই লেগ স্পিনার। কিন্তু ‘নো’ বলের কল্যাণে বেঁচে যান ইংলিশ অলরাউন্ডার। জীবন দারুণভাবে কাজে লাগান তিনি।

রুটের সঙ্গে ৫২ রানের জুটিতে দলকে সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যান ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিং করা স্টোকস। ২৭ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৩৮ রান করেন তিনি। নিজের তৃতীয় ওভারে ফিরে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন নেহরা।

পরপর দুটি আঁটসাঁট ওভারে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে ইংল্যান্ড। ২ ওভারে ২৪ রান দরকার এমন সময়ে নেহরার এক ওভারে ১৬ রান নিয়ে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন রুট ও বাটলার।

নাটকীয়তার তখনও অনেক বাকি। শেষ ওভারের প্রথম বলে রুটকে এলবিডব্লিউ করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান বুমরাহ। আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বিদায় নেওয়ার আগে ৩৮ বলে দুটি চারে ৩৮ রান করেন ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। রিপ্লেতে দেখা গেছে বল ব্যাটর কানায় লেগেছিল।

নতুন ব্যাটসম্যান মইন আলি প্রথম বলেই এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন বাটলারকে। ডট খেলে পরের বলে এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হন বোল্ড। সমীকরণ কঠিন হয়ে যায় অতিথিদের জন্য।

পরের বলে লেগ বাই থেকে ইংলিশরা এক রান নিলে স্ট্রাইকে আসেন মইন। জয়ের জন্য তখন দরকার ১ বলে ৬ রান। সেই বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। 

ভারতের পেসার নেহরা ২৮ রানে নেন ৩ উইকেট। প্রথম ২ ওভারে ১৬ রান দেওয়া বুমরাহ শেষ দুই ওভারে ৪ রানে নেন ২ উইকেট।

এর আগে ব্যাটিংয়ে লড়েন কেবল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা লোকেশ রাহুল।  এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ২১ রান করে ফিরেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

দুই অঙ্কে যেতে পারেননি তিন ব্যাটিং ভরসা সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিংহ ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। বলার মতো জুটি একটাই, চতুর্থ উইকেটে মনিশ পান্ডের সঙ্গে রাহুলের ৫৬ রান। ৪৭ বলে ৬টি চার আর দুটি ছক্কায় ৭১ রান করে ফিরেন তিনি।

টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের আগের সর্বোচ্চ রান ছিল বিরেন্দর শেবাগের অধিকারে। ২০০৭ সালে ডারবানে ৬৮ রান করেছিলেন তিনি।

শেষ তিন ওভারে দুই রান আউটসহ ৫ উইকেট হারানোয় দেড়শ’ পর্যন্ত যায়নি ভারতের সংগ্রহ। ২৬ বলে একটি ছক্কায় ৩০ রান করে ফিরেন পান্ডে।

২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার পেসার জর্ডান।

আগামী বুধবার বেঙ্গালুরুতে হবে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৪৪/৮ (কোহলি ২১, রাহুল ৭১, রায়না ৭, যুবরাজ ৪, পান্ডে ৩০, ধোনি ৫, পান্ডিয়া ২, মিশ্র ০, বুমরাহ ০*; ডসন ০/২০, মিলস ১/৩৬, জর্ডান ৩/২২, স্টোকস ০/২১, মইন ১/২০, রশিদ ১/২৪)

ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৩৯/৬ (রয় ১০, বিলিংস ১২, রুট ৩৮, মর্গ্যান ১৭, স্টোকস ৩৮, বাটলার ১৫, মইন ১*, জর্ডান ০*; চাহাল ০/৩৩, নেহরা ৩/২৮, বুমরাহ ২/২০, মিশ্র ১/২৫, রায়না ০/৩০)

ফল: ভারত ৫ রানে জয়ী।