তাসকিনকে নিয়ে কোচের এবার উল্টো দাবি!

১৫ অক্টোবর থেকে ১৮ জানুয়ারি। সাধারণ হিসেবে তিন মাসের একটু বেশি। আসলে হয়তো তিন যুগ! নইলে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে ক্রাইস্টচার্চের বেসিন রিজার্ভে গিয়ে কেন নিজের কথা ভুলে যাবেন চন্দিকা হাথুরুসিংহে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক ক্রাইস্টচার্চ থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Jan 2017, 12:23 PM
Updated : 18 Jan 2017, 04:13 PM

চট্টগ্রামে হাথুরুসিংহের কথাটি আলোড়ন তুলেছিল বেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে তাসকিন আহমেদের খেলার সম্ভাবনা নিয়ে চলছিল গুঞ্জন। সেরকম কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক। কিন্তু সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে কোচ বলেছিলেন, এখনই টেস্টে নামিয়ে তাসকিনের ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে চান না।

সেই তাসকিন তিন মাস পর খেলতে যাচ্ছেন টানা দ্বিতীয় টেস্ট। ওয়েলিংটনে অভিষেক টেস্টে খুব খারাপও করেননি। যদিও তার বোলিং ফিগারে প্রতিফলন নেই তার প্রচেষ্টার। তবে বেশ কয়েকটি স্পেলে দারুণ গতিময় ও আগ্রাসী বোলিং করেছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে বোলিং করেছেন ৩৫ ওভার। এটিও তার ফিটনেসে দারুণ উন্নতির প্রমাণ।

তাসকিনের সামর্থ্য নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠছে না। কিন্ত কৌতুহল আছে কোচের সেই কথার সূত্রে। তিন মাসের মধ্যে নিশ্চয়ই পরিবর্তন কিছু হয়েছে! হয়ত কোচের ভাবনাও বদলেছে।

বুধবার সেটাই জানতে চাওয়া হয়েছিল কোচের কাছে। রঙিন পোশাকের সিরিজের পর প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন কোচ। উঠল তাসকিনকে নিয়ে সেই মন্তব্যের প্রসঙ্গ। বিস্ময়করভাবে কোচ দাবি করলেন একটু অন্যরকম।

“আমার ধারণা, আপনার প্রশ্নে একটু অংশ বাদ আছে। আমি বলেছিলাম, ওই ধরনের উইকেটে খেলার কথা। আমার সবসময়ই পরিকল্পনা ছিল এই ধরনের উইকেটে তাসকিনকে টেস্ট খেলানো। আপনি গিয়ে রেকর্ডটা শুনে দেখতে পারেন আমি কি বলেছিলাম।”

কোচের কথার রেশ ধরেই আরেকটি প্রশ্ন, তাসকিন কি তাহলে টেস্টের পরিকল্পনায় বরাবরই ছিল? কোচের উত্তর, “হ্যাঁ, অবশ্যই!”

একটু ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলা কোচের দাবির আকস্মিকতায় পাল্টা কিছু বলার মত অবস্থা এই সময়ে ছিল না। তবে অক্টোবরে কোচ আসলে কি বলেছিলেন, সেটির সাক্ষী হয়ে আছে সেই সময়ের সংবাদমাধ্যমের খবর।

কোচ যা বলেছিলেন, সেটি হুবুহু এই রকম, “সে কি কোনো চারদিনের ম্যাচ খেলেছে? আপনারা কি মনে করছেন সে এসেই সরাসরি জাদু দেখাবে? না! ওরা তো মানুষ। জীবনে কখনো চারদিনের ম্যাচ না খেললে কাজটা কঠিন। মাঠে চারদিন দাঁড়িয়ে থাকা, দিনে ১৫ ওভার বোলিং করার মত ব্যাপারগুলি ওর জন্য পুরোপুরি নতুন। আমি কারও ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে চাই না।”

কোচ উইকেটের প্রসঙ্গই তোলেননি সেদিন। তাসকিনকে না খেলানোর ব্যাপারে তার মূল শঙ্কার জায়গা ছিল প্রথম শ্রেণির ম্যাচ না খেলা। কোচের ওই কথার পরও কিন্তু প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেননি তাসকিন। টেস্টের আগে সবশেষটি সেই ২০১৩ সালে।

নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে তাসকিনের টেস্ট খেলাটা খুব অভাবনীয় কিছু হয়ত নয়। তিন মাসের মধ্যে কোচের ভাবনা বদলে যাওয়াটাও বিস্ময়কর নয়। হতেই পারে। কিন্তু বিস্ময়কর হলো কোচের উল্টো দাবি করা! তাসকিনের বোলিং বা ক্যারিয়ারে এসব অবশ্যই প্রভাব ফেলবে না। তবে বার্তাটা তো দেওয়া হলো ভুল!