প্রাপ্তির তৃপ্তি ছাপিয়ে পরাজয়ের হতাশা

নিউ জিল্যান্ড হেরাল্ডের সংবাদকর্মীর প্রশ্নে ছিল একটু সহানুভূতির ছোঁয়া। চোট-আঘাতের দুর্ভাগ্যেই কি হারল বাংলাদেশ? অনায়াসেই চোট হতে পারতো শক্ত ঢাল। তবে তামিম ইকবাল বুকেই টেনে নিলেন তীর। বিদ্ধ করলেন নিজেদের। অকপটে মেনে নিলেন ব্যর্থতার দায়।

ক্রীড়া প্রতিবেদক ওয়েলিংটন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2017, 10:42 AM
Updated : 16 Jan 2017, 10:58 AM

মুশফিকের চোটে ওয়েলিংটন টেস্টের অনেকটা জুড়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তামিমই। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও তিনি মুশফিকের বদলি। চোট-আঘাতের ছোবল তো আছেই, তবে তামিম মূল দায় দিলেন ব্যাটসম্যানদেরই।

“দুর্ভাগ্য নয়, দায়টা আমাদের নিজেদেরই নিতে হবে। আরও ভালো ব্যাট করতে পারতাম। চোট-আঘাতের কথা বললে হয়ত দুর্ভাগা ছিলাম। কিন্তু ম্যাচ হেরেছি ব্যাটিং ভালো না হওয়ায়। আমি ও ইমরুল শুরুটা ভালো করেছিলাম। এরপর ইমরুল চোট পেল। আজকে আবার সাব্বির ও মুশি ভালো ব্যাট করছিল। তখন মুশফিক চোট পেল। কিছুটা দুভার্গ্য আর বাকিটা নিজেদের বাজে শট নির্বাচনের কারণে এই হার।”

প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করা দল দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ১৬০ রানে। রোগটা পুরোনো। অভিষেক টেস্ট থেকে শুরু করে প্রায় দেড় যুগের পথচলায় অনেক অনেকবারই বাংলাদেশের হয়েছে এই অভিজ্ঞতা। এক ইনিংসে যদি জাগে আশা, আরেক ইনিংসে হয় সর্বনাশ।

এক ইনিংসে প্রায় ৬০০ রান তুলে ফেলা মানে সামর্থ্যটা আছে। কিন্তু সমস্যা হয়ত মনস্তত্ত্বে। তামিম অবশ্য সেটি মানতে চাইলেন না। তবে জানালেন, কঠিন এই রোগের দাওয়াই খুঁজছে দল।

“আমাদের টেস্ট রেকর্ড এ রকমই বলে যে আমাদের একটা ইনিংস খালি ভালো হয়। একসঙ্গে দুই ইনিংস ভালো হয় কম। এটা চিন্তা করার বিষয়। এই টেস্টে একটা সময় ছিল যে আমরা আরেকটু ভালো ব্যাটিং করলেই ড্র করা যেত। আমরা সেটা পারিনি।”

“তবে মানসিক ব্যপার না। খেলাটাই তো এরকম যে কোনো ইনিংসে কোনো দল ভুল বেশি করে। এই টেস্টে আমাদের ক্ষেত্রে আমরা বেশি করেছি। এই তো। খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি কিভাবে ঠিক করা যায়।”

এমনিতে এই টেস্টের প্রথম ভাগ থেকে প্রাপ্তি আছে অনেক কিছুই। এক সময় যা বাস্তবতা ছিল, নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে এরকম খেলতে পারলেই খুশি থাকত দল। হারের মাঝেও খোঁজা হতো ইতিবাচকতা। এখন অন্তত সেই মানসিকতার বদল হয়েছে কিছুটা। তামিমের কণ্ঠে সেটিরই প্রতিফলন।

“অনেক ইতিবাচক কিছু আছে। অনেক প্রাপ্তি আছে। তবে দিনশেষে আমরা ম্যাচ হেরেছি। এটাই মূল ব্যাপার। আমরা খুবই হতাশ। খুবই হতাশ। ড্র করতে পারলে বা জিতলে স্পেশাল কিছু হতো।”

এই আক্ষেপ অবশ্য সফরের শুরু থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গী। সুযোগ সৃষ্টি করে নিজেদেরই সেটি হারানো। নইলে ওয়ানেডে বা টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হতে পারত ‘স্পেশাল’ কিছু। বাকি কেবল একটি টেস্ট। টেস্ট ক্রিকেটে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভাল পেসারদের স্বর্গ। আশার আলো না জ্বালানোই ভালো!