বীরত্ব আর নিবেদনের ছবিগুলোর পাশাপাশি আছে কিছু উল্টো চিত্রও। দিনের মাত্র অষ্টম বলেই সাকিব আল হাসান আউট হলেন দৃষ্টিকটু এক শটে। শরীর থেকে বেশ দূরে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন মুমিনুল হক। লড়িয়ে অর্ধশতকে দলের আশা হয়ে থাকা সাব্বির রহমান ফিরলেন অনেক বাইরের বল অযথা তাড়া করে।
চোটের ছোবল, আত্মঘাতী শট আর নিউ জিল্যান্ডের দারুণ বোলিং, ওয়েলিংটন টেস্টের শেষ দিনে বাংলাদেশের ইনিংসের গল্প এমনটিই। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ তুলেছে ১৬০। প্রথম ইনিংসে ছিল ৫৬ রানের লিড। টেস্ট জিততে নিউ জিল্যান্ডের চাই ৫৭ ওভারে ২১৭।
আগের দুদিন উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিল দারুণ। শেষ দিনে একটু মন্থর হওয়ার কথা। কিন্তু নাটকীয়ভাবে মনে হলো উইকেট হয়েছে আরেকটু গতিময়, আরও জীবন্ত।
বাংলাদেশের ইনিংস অনেকটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল আগের দিন শেষ বিকেলেই। বিনা উইকেটে ৫০ থেকে ৬৬ রান তুলতেই দল হারায় ৩ উইকেট। সেই ইনিংস গোছাবেন কী, সাকিব ফিরলেন উল্টো আরও বিধ্বস্ত করে। মিচেল স্যান্টনারকে যেভাবে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন, মনে হলো ম্যাচ জিততে বুঝি চাই ১ বলে ৬ রান! প্রথম ইনিংসের রেকর্ডে গড়া ইনিংস খেলার পর এবার ফিরলেন শূন্য হাতে।
নিল ওয়েগনার প্রত্যাশিতভাবেই ক্রমাগত বল করে যাচ্ছিলেন শরীর তাক করে। শর্ট বলে মুমিনুলকে নাড়িয়ে দিয়ে আউট করলেন ফুল লেংথ বলে।
এরপর লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে সাব্বিরের লড়াই। পেয়ে যান ম্যাচে দ্বিতীয় অর্ধশতক। শেষ দিকে ইমরুলের ফেরা। কিন্তু ইমরুলকে অসহায় ফেলে বাজে শটে সাব্বিরের ফেরা। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ইমরুলের তিন বাউন্ডারি নিউ জিল্যান্ডের লক্ষ্যকে বাড়িয়েছে একটু।
শেষ দিনে ওভারপ্রতি প্রায় চার রান করে তোলা সহজ নয়। তবে চোটাক্রান্ত বাংলাদেশের মনোবল ধরে রাখাও কঠিন। ওয়েলিংটন টেস্ট তাই রোমাঞ্চকর মোড়ে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫২ ওভারে ৫৯৫/৮ ডি.
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৩৯
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৫৭.৫ ওভারে ১৬০ (তামিম ২৫, ইমরুল ৩৬*, মুমিনুল ২৩, মাহমুদউল্লাহ ৫, মিরাজ ১, সাকিব ০, সাব্বির ৫০, মুশফিক আহত অবসর ১৩, তাসকিন ৫, রাব্বি ১, শুভাশীষ ০; বোল্ট ৩/৫৩, সাউদি ১/৩৪, স্যান্টনার ২/৩৬, ওয়াগনার ২/৩৭)।