গলায় ঝোলানো হাত আর ব্যথার তীব্রতায় প্রায় অবশ হয়ে যাওয়া আঙুল নিয়ে অন্য কিছু ভাবা কঠিন। তবে মাশরাফি এমনই একজন, যার পক্ষে দল ছাড়া অন্য কিছু ভাবাও কঠিন!
চোট নিয়ে কথা বলতে বলতেই তাই বারবার বলে ওঠেন দলের কথা। সেই আফসোস, সেই হতাশা। আরও একবার সুযোগ হাতছাড়া করার আক্ষেপ। আঙুল ভাঙার বেদনাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে দলের হারের যন্ত্রণা।
“বোলিংটা একটু ভালো করলে ১৭০ রানের আশেপাশে আটকে রাখা যেত। ক্যাচগুলি মিস না হলে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ওদের মোমেন্টাম থমকে যেত। আর ব্যাটিংয়েও চান্স ছিল। ৮ ওভারে ৮০ রান, এ রকম এটা শুরুর পর স্রেফ ধরে রাখার ব্যাপার। আবারও আমরা পারলাম না।”
ব্যাটসম্যানদের সামগ্রিক ব্যর্থতা তো আছেই। মাশরাফি বেশি হতাশ স্পিনে অনেক উইকেট উপহার দিয়ে আসায়।
“দ্বিতীয় ওয়ানডেতে উইলিয়ামসন তিনটা উইকেট নিয়ে নিল। এখানে আগের ম্যাচে নিল দুটি। আজকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট (সাব্বির)। জিতান প্যাটেল এসে ভালো করল, ইশ সোধি করল। অথচ ওদের খুব ভালোভাবেই সামলানো উচিত আমাদের।”
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের ছয় ম্যাচ শেষে ফল নিউজিল্যান্ড ৬, বাংলাদেশ শূন্য। তবে মাশরাফির আক্ষেপ বেশ সুযোগ হাতছাড়া করায়।
“অন্তত একটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি আমাদের জেতা উচিত ছিল। আর সেটি জিতলে হয়ত সিরিজও জিততে পারতাম। দ্বিতীয় ওয়ানডে যদি আমরা জিততে পারতাম, তাহলে পুরো সিরিজ অন্যরকম হতে পারত। নিউ জিল্যান্ডে এসে কোনো দলই ভালো করে না। তবে আমরা চেয়েছিলাম যদি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি, সেটা নেব। কিন্তু বারবার সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছি।”
শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফির নিজের বোলিংও খুব ভালো হয়নি। দলে অবদান রাখতে না পারাও পোড়াচ্ছে তাকে। পরে তো চোট পেয়ে ছিটকেই গেলেন। শেষ করতে পারেননি ওভার, বাকি ছিল ৪ বল।
আঙুল ভেঙে প্রায় আলাদা হয়ে গেলেও ওভারটি শেষ করতে চেয়েছিলেন মাশরাফি। ফিরে যাচ্ছিলেন বোলিং রান আপে। শেষ পর্যন্ত সেটি সম্ভব হয়নি।
“তখন আমার মাথায় চিন্তা বাকি চার বল কে করবে! এজন্যই চেষ্টা করেছিলাম নিজেই ওভার শেষ করতে। বল গ্রিপ করতে পারলে চারটা বল করেই ফেলতাম!”
এটিই মাশরাফি। ভাঙা আঙুল নিয়েও বোলিং করার কথা ভাবেন, যদি দলের একটু কাজে লাগে!
তাই আঙুল ভাঙায় নয়, মাশরাফির মন ভেঙেছে দল হারায়।