দুর্দান্ত স্টার্কে অস্ট্রেলিয়ার নাটকীয় জয়

চার দিনে দুই দলের একটি করে ইনিংস শেষ হয়নি, এমন ম্যাচে ফল আনতে কারোর অসাধারণ পারফরম্যান্সের দরকার ছিল। অস্ট্রেলিয়ার জন্য শেষ দিন সেটি করেছেন মিচেল স্টার্ক। ব্যাটে-বলে তার দারুণ নৈপুণ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেলবোর্ন টেস্টে নাটকীয় জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে ঘরে তুলেছে সিরিজও।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Dec 2016, 07:26 AM
Updated : 30 Dec 2016, 03:07 PM

ইনিংস ও ১৮ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্টিভেন স্মিথের দল।

এনিয়ে টানা সর্বোচ্চ পাঁচ টেস্টে হারল পাকিস্তান। ১৯৯৯-২০০০ সালেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাদের।

ম্যাচ বাঁচাতে লাঞ্চের আগে ১৬ মিনিট আর দিনের শেষ দুটি সেশন কাটিয়ে দিতে হত মিসবাহ-উল-হকের দলকে। তবে শূন্য রানে ফেরা অধিনায়কের মতো ব্যর্থ তার দলও। পঞ্চম দিনের উইকেটও ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো কিন্তু পরিস্থিতি অনুয়ায়ী খেলতে পারেননি অতিথিরা।

পাকিস্তান ৫৩.২ ওভারে ১৬৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয়। তখনও খেলা বাকি প্রায় এক ঘণ্টা।

১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান ৫ ওভারের মধ্যে হারায় সামি আসলাম ও বাবর আজমকে। ২০তম ওভারে ৩ বলের মধ্যে ইউনুস খান ও মিসবাহকে ফিরিয়ে দেন নাথান লায়ন। থিতু হওয়া আসাদ শফিককে বিদায় করে অতিথিদের আরেকটি বড় ধাক্কা দেন এই অফ স্পিনার।

প্রথম ইনিংসে দ্বিশতক করা আজহার আলির প্রতিরোধ ভাঙেন জশ হেইজেলউড। মোহাম্মদ আমিরকে বিদায় করে অতিথিদের ঘুরে দাঁড়ানোর আরেকটি চেষ্টা ব্যর্থ করে দেন তিনি।

তখনও সরফরাজ আহমেদ ছিলেন বলে আশা ছিল পাকিস্তানের। রানের ব্যবধানও কমে আসছিল। তবে শেষ দিকে রিভার্স সুইং পাওয়া স্টার্ক ছিলেন ভয়ঙ্কর। শুরুতে বাবরকে ফেরানো এই পেসার তুলে নেন শেষ তিন উইকেট। যার শুরুটা পাকিস্তানকে হতাশায় ডুবিয়ে সরফরাজকে বোল্ড করে।

১০ নম্বর ব্যাটসম্যান ওয়াহাব রিয়াজকেও বোল্ড করেন স্টার্ক। পরের ওভারে ফিরে ইয়াসির শাহর উইকেট তুলে নিয়ে দলকে অসাধারণ এক জয় এনে দেন তিনি।

৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার স্টার্ক। ৩৩ রানে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নেন লায়ন।

এর আগে শুক্রবার ড্রয়ের পথে থাকা মেলবোর্ন টেস্টে দলকে জয়ের চেষ্টার সুযোগ করে দিতে সকালে পাকিস্তানের বোলারদের ওপর চড়াও হন স্মিথ ও স্টার্ক।

মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড বা এমসিজিতে ৬ উইকেটে ৪৬৫ রান নিয়ে খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়কের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিং আর স্টার্কের দাপটে ৮ উইকেটে ৬২৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। এই মাঠে এটাই টেস্টে দলীয় সর্বোচ্চ।

সপ্তম উইকেটে ১৫৪ রানের চমৎকার জুটিতে দলকে ছয়শ’ রানে নিয়ে যান স্মিথ-স্টার্ক। মনে হচ্ছিল প্রথম শতকটি পেয়েই যাবেন স্টার্ক। তবে সোহেল খানের বলে ক্যাচ দিয়ে ৮৪ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস। ৯১ বলের ইনিংসে চার তিনটি কিন্তু ছক্কা ৭টি। পুরো ম্যাচে যত ছয় হয়েছে তার অর্ধেক হাঁকিয়েছেন তিনি একাই।

নয় নম্বর ব্যাটসম্যান নাথান লায়ন আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইনিংস ঘোষণা করেন স্মিথ। সে সময় অন্য প্রান্তে ১৬৫ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক। ম্যাচ সেরার পুরস্কার এনে দেওয়া ইনিংসটি সাজানো ১৩টি চার ও একটি ছক্কায়। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪৪৩/৯ ডিক্লে.

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৪২ ওভারে ৬২৪/৮ ডিক্লে. (রেনশ ১০, ওয়ার্নার ১৪৪, খাওয়াজা ৯৭, স্মিথ ১৬৫*, হ্যান্ডসকম ৫৪, ম্যাডিনসন ২২, ওয়েড ৯, স্টার্ক ৮৪, লায়ন ১২; আমির ০/৯১, সোহেল ৩/১৩১, ইয়াসির ৩/২০৭, ওয়াহাব ২/১৪৭, আজহার ০/৩৫)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ৫৩.২ ওভারে ১৬৩ (সামি ২, আজহার ৪৩, বাবর ৩, ইউনুস ২৪, মিসবাহ ০, শফিক ১৬, সরফরাজ ৪৩, আমির ১১, সোহেল ১০*, ওয়াহাব ০, ইয়াসির ০; স্টার্ক ৪/৩৬, হেইজেলউড ২/৩৯, বার্ড ১/৪৬, লায়ন ৩/৩৩)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ১৮ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: স্টিভেন স্মিথ

সিরিজ: অস্ট্রেলিয়া ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।