নিউ জিল্যান্ড সফরে এসে প্রথম ম্যাচে হার এমনিতে খুব নাড়া দেওয়ার মত কিছু নয়। তবে ভাবনার খোরাক জোগাচ্ছে হারের ধরণ। খুব একটা লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, তিন বিভাগেই এক সঙ্গে খারাপ করল দল বেশ অনেক দিন পর।
সুনির্দিষ্ট করে বললে, গত বছরের এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে এমনটা দেখা গিয়েছিল। ১৬০ রান করে ৮ উইকেটে হারা এই ম্যাচের পর তিন বিভাগেই এতটা বিবর্ণ বাংলাদেশকে আর দেখা যায়নি। ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সব দায়ই মেনে নিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
“আমাদের ফিল্ডিং অনেকটাই ছিল জরাগ্রস্থ। অনেক দুই-তিন নিয়েছে ওরা, যেগুলো চেক দিতে পারতাম। ২০ রানের মত ওখানেই বেশি হয়েছে। বোলিংয়ে শর্ট বল বেশি করেছি। ২৮০-৩০০ রান এখানে হবেই। বোলিং-ফিল্ডিং ভালো হলে আমরা ৪০ রান কম দিতে পারতাম। সেক্ষেত্রে শুরুতে দ্রুত উইকট হারানোর পরও আমাদের সুযোগ থাকত। বাড়তি ওই রানটাই আমাদের ভুগিয়েছে।”
শর্ট বল বেশি করার কথা মেনে নিচ্ছেন মাশরাফি নিজেই। তবে এখানে এটির বিকল্পও দেখছেন না অধিনায়ক। তার চাওয়া, কার্যকর শর্ট বল।
“আমরা একটু বেশিই শর্ট বল করেছি। এই কন্ডিশনে শর্ট বল অবশ্যই করতে হবে। তবে সেটা কার্যকরভাবে করতে হবে, নিউ জিল্যান্ডের বোলাররা যেমন করেছে। ওদের শর্ট বলগুলো এসেছে আমাদের মাথা বরাবর। আমাদের শর্ট বল ছিল ওদের বুক উচ্চতায়, যেটা ওরা অনায়াসেই খেলতে পেরেছে।”
এক সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ছোট ছোট ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা ছিল নিত্য ব্যাপার। টানা হারার দিনগুলোতে ছোট ভুলগুলো শোধরানো তাগিদ শোনা যেত প্রায়ই। বেশ কিছুদিন পর আবার অধিনায়কের কণ্ঠে শোনা গেল প্রায় হারিয়ে যাওয়া সেই কথাগুলো।
“যদি ছোট ছোট জায়গা আমরা ঠিক করতাম, তাহলে আরেকটু ভালো হত। যেটা বললাম, বড় হতাশার জায়গা ছিল ফিল্ডিংয়ে আমরা হতোদ্যম ছিলাম। ফিল্ডিংয়ে একটু ভালো করলে বোলাররাও হয়ত একটু অনুপ্রাণিত হতো। বোলিং-ফিল্ডিং বাজে হওয়াতেই ৪০-৫০ রান বেশি হয়েছে। এই রান তাড়া করতে হলে শুরুতে দ্রুত রান করতে হবে। উল্টো শুরুতে উইকেট পড়েছে।”
“ভালো লেগেছে যে এত কিছু হওয়ার পরও আমরা ইতিবাচক থাকতে পেরেছি ব্যাটিংয়ে। শুরুতে দ্রুত উইকেট হারালেও পরে মোটামুটি একটা রান করেছি। সামনে যদি আমরা ওদের ২৮০-৩০০ রানে আটকে রাখতে পারি, এই ম্যাচ তাহলে বিশ্বাস জোগাবে যে আমরা সেই রান তাড়া করতে পারি।”
চাইলে ইতিবাচক দিক আরও বের করা যায়। তিন বিভাগেই যেভাবে খারাপ হয়েছে, এর চেয়ে খুব বেশি খারাপের তো কিছু নেই। সামনে তাই কেবল ভালোই হতে পারে!
তবে সেজন্য ব্যাটিং-বোলিংয়ের আগে চাই শরীরী ভাষার বদল। সেই আগ্রাসী চেহারা ফিরে পাওয়া। এ রকম সময়ে দলকে উদ্দীপ্ত করার জন্য মাশরাফির চেয়ে যোগ্য আর কে আছেন! ভরসা তাই যথারীতি অধিনায়কই।