ওয়ার্নার ১৫৬, নিউ জিল্যান্ড ১৪৭

মেলবোর্নের উইকেট হুট করেই একটু অচেনা। খানিকটা মন্থর, ব্যাটিংয়ের জন্য দুরূহ। ধুঁকল দুই দলের ব্যাটিংই। কিন্তু অচেনা মেলবোর্নেও ঠিকই চেনা চেহারায় ডেভিড ওয়ার্নার। প্রতিকূল উইকেট, কিউইদের দারুণ বোলিং-ফিল্ডিং, দ্রুত উইকেট হারানোর চাপ, সব সামলে অসাধারণ ওয়ার্নার খেলল অসাধারণ এক ইনিংস। নিউ জিল্যান্ড ছাড়িয়ে যেতে পারল না ওয়ার্নারের ইনিংসকেও।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Dec 2016, 12:19 PM
Updated : 9 Dec 2016, 12:28 PM

চ্যাপেল-হ্যাডলি ট্রফি ফিরিয়ে আনা নিশ্চিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া আগেই। শেষ ম্যাচে ১১৭ রানের দারুণ জয়ে নিউ জিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। অস্ট্রেলিয়ার ২৬৪ রান তাড়ায় তাসমান প্রতিবেশীরা গুটিয়ে যায় ১৪৭ রানেই।

অস্ট্রেলিয়ার রানের ৫৯ শতাংশের বেশি একাই করেছেন ওয়ার্নার। আগের ম্যাচে ১১৯ রানের পর এবার বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ১২৮ বলে ১৫৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।

টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরিই শুধু নয়, এই বছর ২৩ ইনিংসে ওয়ার্নারের এটি সপ্তম সেঞ্চুরি। এক পঞ্জিকাবর্ষে বেশি সেঞ্চুরি আছে আর কেবল শচিন টেন্ডুলকারের। ১৯৯৮ সালে ভারতীয় গ্রেট করেছিলেন নয়টি সেঞ্চুরি।

কিউইদের শুরুটা ছিল দারুণ। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ট্রেন্ট বোল্টের দারুণ বোলিং আর কেন উইলিয়ামসনের বুদ্ধিদীপ্ত ফিল্ডিং সাজানোয় ১১ রানের মধ্যে ফিরে যান অ্যারন ফিঞ্চ ও স্টিভেন স্মিথ।

তৃতীয় উইকেটে জর্জ বেইলিকে নিয়ে ৬২ রানের জুটি গড়েন ওয়ার্নার। কিন্তু তিন বলের মধ্যে বেইলি ও মিচেল মার্শকে ফেরান কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। অস্ট্রেলিয়া তখন ৭৩ রানে ৪ উইকেট।

ওয়ার্নার তাতে ভড়কে যাননি। বরং দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে নেন অস্ট্রেলিয়াকে। ৬২ বলে স্পর্শ করেন অর্ধশতক। ওয়ার্নার উইকেটে থাকার পরও এক পর্যায়ে টানা ১১ ওভারে আসেনি বাউন্ডারি।

অর্ধশতকের পর ওয়ার্নারের ব্যাটে ফিরে আসে চেনা ঝড়। পঞ্চাশ থেকে সেঞ্চুরি ছুঁতে লাগে মাত্র ৩৩ বল। সেঞ্চুরি থেকে দেড়শ পর্যন্ত যেতে আরও বিধ্বংসী, লাগে ২৫ বল!

পঞ্চম উইকেটে ট্রাভিস হেডের সঙ্গে গড়েন ১০৫ রানের জুটি। ৭০ বলে ৩৭ রান করে ফেরেন হেড। শেষ দিকে ঝড় তুলতে পারেননি ওয়েড-ফকনার। তবে ওয়ার্নার একাই এগিয়ে নেন দলকে। শেষ পর্যন্ত রান আউট হয়েছেন শেষ বলে। ১২৮ বলে ১৩ চার ও ৪ ছক্কায় ১৫৬!

নিউ জিল্যান্ডের শুরুটা ছিল ভালোই। টম ল্যাথাম ও মার্টিন গাপটিল তোলেন ৪৪ রান। এরপর উইকেট পড়েছে নিয়মিত। আর কোনো জুটিই ছাড়ায়নি তিরিশ। দুর্দান্ত দুটি ইয়র্কার ও আরেকটি ফুল লেংথ বলে তিন উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক। বাকি বোলাররাও মিলেমিশে নিয়েছেন উইকেট।

ম্যাচ ও সিরিজ সেরায় ছিল না ওয়ার্নারের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৬৪/৮ (ওয়ার্নার ১৫৬, ফিঞ্চ ৩, স্মিথ ০, বেইলি ২৩, মার্শ ০, হেড ৩৭, ওয়েড ১৪, ফকনার ১৩, স্টার্ক ০*; সাউদি ০/৪৫, বোল্ট ৩/৪৯, ফার্গুসন ০/৫০, স্যান্টনার ২/৪৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ২/৫০, উইলিয়ামসন ০/৩, মানরো ০/১৯)।

নিউ জিল্যান্ড: ৩৬.১ ওভারে ১৪৭ (গাপটিল ৩৪, ল্যাথাম ২৮, উইলিয়ামসন ১৩, নিকোলস ৩, মানরো ২০, ওয়াটলিং ৮, ডি গ্র্যান্ডহোম ১১, স্যান্টনার ১৫, সাউদি ৪, ফার্গুসন ৪*, বোল্ট ১; স্টার্ক ৩/৩৪, হেইজেলউড ১/২২, কামিন্স ২/২৬, ফকনার ২/২৬, হেড ২/৩৭)।

ফল: অস্ট্রেলিয়া ১১৭ রানে জয়ী

ফল: ৩ ম্যাচ সিরিজ অস্ট্রেলিয়া ৩-০ ব্যবধানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও সিরিজ: ডেভিড ওয়ার্নার