মাহমুদউল্লাহ, হাসানের ব্যাটে শেষ চারে খুলনা

শুরুতে পথ দেখালেন ঝড় তোলা হাসানুজ্জামান। মাঝখানে টানলেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁচা-মরার ম্যাচে অধিনায়ককে সঙ্গ দিলেন বেনি হাওয়েলও। ঢাকা ডায়নামাইটসকে সহজেই হারিয়ে শেষ চারে উঠে এল খুলনা টাইটানস।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2016, 01:43 PM
Updated : 4 Dec 2016, 04:08 PM

বিপিএলে টিকে থাকতে ঢাকার বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না খুলনার। ডোয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেল, সানজামুল ইসলামদের বিশ্রাম দেওয়া ঢাকাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে তারা পেছনে ফেলেছে রংপুর রাইডার্সকে। এর আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও বরিশাল বুলস।

এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে উঠে এসেছে খুলনা। পরের দুটি স্থানে রয়েছে চিটাগং ভাইকিংস ও রাজশাহী কিংস।

কুমার সাঙ্গাকারার অর্ধশতক, মোসাদ্দেক হোসেন-নাসির হোসেনদের ছোটো ছোটো অবদানে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান করে ঢাকা। মাহমুদউল্লাহর অর্ধশতকে ১৮ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় খুলনা।

খুলনা ইনিংসের প্রথম বলটি করেই মাঠ ছাড়েন ঢাকার পেসার আবু জায়েদ। তার অসমাপ্ত ওভার শেষ করেন আলাউদ্দিন বাবু। ব্রাভো-রাসেলের অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে ঢাকার পেস বোলিং আক্রমণের নেতৃত্বে ছিলেন জায়েদ।

দ্বিতীয় ওভারেই আন্দ্রে ফ্লেচারককে ফিরিয়ে দেন সাকিব। তবে বাঁহাতি এই স্পিনারের ওপর চড়াও হন অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হাসানুজ্জামান। এই তরুণ ১৯ বলে তিনটি করে ছক্কা-চারে করেন ৪০ রান। ফিরেন রবি বোপারার স্লোয়ারে রনসফোর্ড বিটনকে ক্যাচ দিয়ে।

লম্বা সময় ক্রিজে থাকলেও রানের গতি বাড়াতে পারছিলেন না আব্দুল মজিদ। তার মন্থর ব্যাটিংয়ে অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানের ওপর চাপ বাড়ছিল। অবশেষে ৩৫ বলে প্রথম চারের দেখা পান এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ফিরেন ঠিক পরের বলেই বোল্ড হয়ে। ৩৬ বলে ২১ রান করা মজিদ খেলেন ২০টি ডট বল। 

প্রথমবারের মতো খেলতে নামা তানভীর আহমেদের বলে মেহেদী মারুফের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে ২৮ বলে ৫০ রানের ঝড়ো এক ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। হাওয়েলের সঙ্গে মাত্র ৩.৪ ওভারে ৪৪ রানের বিধ্বংসী জুটিতে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান অধিনায়ক। তার ইনিংসটি গড়া ৫টি চার ও দুটি ছক্কায়।

নিকোলাস পুরানকে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সারেন হাওয়েল। ১৬ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন এই অলরাউন্ডার।

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ঢাকাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন সাঙ্গাকারা ও মারুফ। ৬.৫ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটিতে এই দুই জন সংগ্রহ করেন ৫৮ রান।

একটি করে ছক্কা-চারে ১৬ রান করে মারুফের রান আউটে ভাঙে বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি। শুভাগত হোম চৌধুরীর বলে ২ রানে আরিফুল হকের হাতে জীবন পাওয়া সাঙ্গাকারা ফিরেন ৫৯ রান করে। তার ৪১ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি গড়া ৮টি চারে।

তিন নম্বরে নামা নাসির ১৭ বলে দুটি চারে ১৯ রান করে ফিরেন রান আউট হয়ে।

আগ্রাসী শুরু করা সাকিব ও সিকুগে প্রসন্ন পারেননি নিজেদের ইনিংস বড় করতে। ১৫তম ওভারে জুনায়েদ খানের প্রথম বলে ফ্লেচারকে ক্যাচ দেন সাকিব। শেষ বলে এলবিডব্লিউ হন প্রসন্ন।

জোড়া উইকেট হারানোর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে দেড়শ’ রানে নিয়ে যান মোসাদ্দেক (২০)।

২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার বাঁহাতি পেসার জুনায়েদ। ইংলিশ পেসার হাওয়েল মাত্র ১৪ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। অন্য কোনো বোলার খুব একটা ভালো করায় বড় লক্ষ্যই পেয়েছে খুলনা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৫৮/৭ (মারুফ ১৬, সাঙ্গাকারা ৫৯, নাসির ১৯, সাকিব ১১, প্রসন্ন ১৪, মোসাদ্দেক ২০, বোপারা ৬, আলাউদ্দিন ১*, তানভীর ২*; মাহমুদউল্লাহ ০/২৭, শুভাগত ০/২১, শফিউল ১/২৯, জুনায়েদ ৩/২২, মোশাররফ ০/৩৫, হাওয়েল ১/১৪)

খুলনা টাইটানস: ১৮ ওভারে ১৫৯/৪ (ফ্লেচার ৯, হাসান ৪০, মজিদ ২১, মাহমুদউল্লাহ ৫০, হাওয়েল ২৬*, পুরান ১*; জায়েদ ০/০, আলাউদ্দিন ০/২৯, সাকিব ১/৪০, বিটন ০/৩৫, বোপারা ২/১৭, প্রসন্ন ০/২২, তানভীর ১/১৪)

ফল: খুলনা টাইটানস ৬ উইকেটে জয়ী।