বল টেম্পারিংয়ের দায়ে দু প্লেসির জরিমানা

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোবার্ট টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ফাফ দু প্লেসি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক পার পাচ্ছেন জরিমানা দিয়েই। নিষিদ্ধ হতে হয়নি কোনো ম্যাচ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2016, 10:03 AM
Updated : 22 Nov 2016, 02:32 PM

মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক শুনানি শেষে আইসিসি জানায়, ম্যাচ ফির শতভাগ জরিমানা করা হয়েছে দু প্লেসিকে। পাশাপাশি তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট যোগ হয়েছে তার নামের পাশে। দুই বছরের মধ্যে চার বা ততোধিক ডিমেরিট পয়েন্ট পেলে তা পরিণত হবে কমপক্ষে ২ সাসপেনশন পয়েন্টে। তখন নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পেতে হবে দু প্লেসিকে।

ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা নিশ্চিত করেছে, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন দু প্লেসি। লিখিত রায় পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপিল করতে হবে তাকে। আপিল করলে জুডিশিয়াল কমিশনার আবার শুরু থেকে শুনানি পরিচালনা করবেন। আপিলের রায়ে দু প্লেসির শাস্তি কমতে পারে, বাড়তে পারে, রায় সংশোধনও হতে পারে।

জরিমানার ঘোষণা দিয়ে বিবৃতিতে আইসিসি জানায়, আম্পায়ারদের দেওয়া প্রমাণ ও এমসিসির ক্রিকেট প্রধান জন স্টিভেনসনের দেওয়া মতামতের উপর ভিত্তি করে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে দু প্লেসিকে।

বিবৃতিতে বলা হয়, আম্পায়াররা নিশ্চিত করেছেন, তারা ম্যাচের সময় ঘটনাটি দেখলে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নিতেন। আর স্টিভেনসন জানিয়েছেন, টেলিভিশন ফুটেজ দেখে এমসিসির অভিমত, বলে কৃত্রিম বস্তু প্রয়োগ করা হয়েছে।

হোবার্ট টেস্টের চতুর্থ দিনের টিভি ফুটেজ দেখে অনেকেই আঙুল তোলেন দু প্লেসির দিকে। ম্যাচ রেফারি তখন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানাননি। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে টেম্পারিংয়ের অভিযোগ ওঠার পর আইসিসি সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখার ঘোষণা দেয়। শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার কথা জানায় আইসিসি।

ঘটনাটি হোবার্ট টেস্টের চতুর্থ দিন সকালের, যে দিন অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ জিতে সিরিজও নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, মুখের লালা দিয়ে বল ঘষছেন দু প্লেসি। তখন তার মুখে জিহ্বায় ছিল ললি জাতীয় বস্তু।

কৃত্রিম বস্তু ব্যবহার করে বলের অবস্থা পরিবর্তন করা সংক্রান্ত আইসিসি আচরণবিধির লেভেল ২ ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয় দু প্লেসির বিরুদ্ধে। শুনানি শেষে এল শাস্তির ঘটনা।

বল টেস্পারিংয়ের অভিযোগে দু প্লেসির শাস্তি এই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে ট্রাউজারের জিপার দিয়ে বল বিকৃত করার অভিযোগে ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছিল তাকে। পাশাপাশি পাঁচটি পেনাল্টি রান দেওয়া হয়েছিল প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে। সেবার দু প্লেসি অভিযোগ মেনে নেওয়ায় আনুষ্ঠানিক শুনানির প্রয়োজন পড়েনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেম্পারিংয়ের অভিযোগও নতুন নয়। ২০১৪ সালের মার্চে এবি ডি ভিলিয়ার্সের বিরুদ্ধে টেম্পারিংয়ের অভিযোগ তুলে ম্যাচ ফির ১৫ শতাংশ খুইয়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার।

সেই বছরের জুলাইতে নখ দিয়ে বল খুটিয়ে ম্যাচ ফির ৭৫ শতাংশ জরিমানা গুণেছিলেন ভার্নন ফিল্যান্ডার। সেবার এই পেসারও মেনে নিয়েছিলেন অভিযোগ।

চলতি সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার পেসার জস হেইজেলউড অভিযোগ করেছিলেন, রিভার্স সুইং পেতে ইচ্ছে করেই বারবার উইকেটে বল ছুঁড়েছেন প্রোটিয়ারা।

এবারের অভিযোগে দু প্লেসির পাশেই ছিল ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা। গোটা দল নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হাশিম আমলা জানিয়েছেন, “অভিযোগটি স্রেফ কৌতুক।”

বিশ্ব ক্রিকেটেও গত কদিনে এটি নিয়ে বইছে নানান মতের স্রোত। এতে নতুন জোয়ার আনবে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ও জরিমানার সিদ্ধান্ত।