অস্ট্রেলিয়া ৮৫, দক্ষিণ আফ্রিকার লিড ৮৬

কেপ টাউনের বাউন্স আর সুইং সহায়ক উইকেটে ৪৭। ট্রেন্ট ব্রিজের সিমিং উইকেটে ৬০। নিকট অতীতে ভয়াবহ ব্যাটিং ধসের অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ার আছে আরও কয়েকটি। তবে সে সব ছিল দেশের বাইরে। এবার দেশের মাটিতেও বিব্রত হলো এক সময়ের প্রবল পরাক্রমশালী দল। গুটিয়ে গেল ৮৫ রানেই!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2016, 08:10 AM
Updated : 12 Nov 2016, 10:58 AM

অস্ট্রেলিয়াকে ৮৫ রানে গুটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ১৭১ রানে। এগিয়ে আছে ৮৬ রানে। শনিবার হোবার্ট টেস্টের প্রথম দিনে উইকেট পড়েছে ১৫টি।

ব্যাটিংয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই দক্ষিণ আফ্রিকাও। তবে বোলাররা যা করেছেন, তাতে টেস্টের লাগাম প্রথম দিনই প্রোটিয়াদের হাতে। অথচ খেলতে নেমেছে তারা দলের মূল স্ট্রাইক বোলার ডেল স্টেইনকে ছাড়াই। ২০০৪ সালের পর এই প্রথম দলের সেরা দুই তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স ও স্টেইনকে ছাড়া খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মাঠে সেটার প্রভাব পড়ল সামান্যই।

৩২ বছরের মধ্যে দেশের মাটিতে এটাই অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন স্কোর। সবশেষ ১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৭৬ রানে অল আউট হয়েছিল তারা। তবে সেটি ছিল পেস স্বর্গ ওয়াকায়, মার্শাল-গার্নার-হোল্ডিংয়ের সামনে। এবার উইকেট বা প্রতিপক্ষের বোলিং, কিছুই ছিল না খুব ভয়াবহ।

বেলেরিভ ওভালের উইকেট এমনিতে ব্যাটিং সহায়ক। তবে এবার ছিল খানিকটা ভিন্ন। সকালে আকাশ ছিল মেঘলা, উইকেটে ছিল আর্দ্রতা। টস জিতে সেটা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন ভার্নন ফিল্যান্ডার ও কাইল অ্যাবট। আগের টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের অন্যতম নায়ক ফিল্যান্ডার আবারও অস্ট্রেলিয়াকে ভুগিয়েছেন ৫ উইকেট নিয়ে।

তবে প্রোটিয়াদের বোলিং যতটা ছিল ভালো, তার চেয়েও বাজে ছিল অস্ট্রেলিয়ানদের ব্যাটিং। কন্ডিশন একটু কঠিন, তাতেই বেরিয়ে পড়ল ব্যাটিং টেকনিকের কঙ্কাল। লড়েছেন কেবল স্টিভেন স্মিথ, অধিনায়ককেই মনে হয়েছে ভিন্ন জাতের।

অস্ট্রেলিয়ার ভোগান্তির শুরু প্রথম ওভার থেকেই। ফিল্যান্ডার ফিরিয়ে দেন ডেভিড ওয়ার্নারকে। শন মার্শের চোটে দলে ফেরা জো বার্নসকে ফিরিয়ে দেন অ্যাবট। ফিল্যান্ডার পরপর দু বলে ফেরান উসমান খাওয়াজা ও অ্যাডাম ভোজেসকে। ৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কাঁপছে অস্ট্রেলিয়া!

ব্যাটিং ক্ষত সারাতে অলরাউন্ডার মিচেল মার্শের জায়গায় নেওয়া হয়েছে ক্যালাম ফার্গুসনকে। ৩২ ছুঁইছুঁই বয়সে অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানও পারেননি দলকে উদ্ধার করতে। টিকতে পারেননি উইকেটকিপার পিটার নেভিল। অস্ট্রেলিয়া লাঞ্চে যায় ৬ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে।

লাঞ্চের পরও টেনেছেন কেবল স্মিথই। অধিনায়ককে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। দু অঙ্ক ছুঁয়েছেন আর কেবল অভিষিক্ত পেসার জো মেনি। লায়নকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিযাকে গুটিয়ে দেন ফিল্যান্ডার। ৩৫ টেস্টে ৫ উইকেট নিলেন ১০ বার। ৮০ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থেকে যান স্মিথ।

ব্যাটিংয়েও শুরুটা ভালোই করে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্টিভেন কুক ও ডিন এলগার তোলেন ৪৩ রান। দারুণ এক স্পেলে মিচেল স্টার্ক ৩ উইকেট নিয়ে নেন দুই ওভারের মধ্যে। তবে হাশিম আমলা ও টেম্বা বাভুমার ব্যাটে এগিয়ে যায় প্রোটিয়ারা।

দারুণ খেলতে থাকা আমলাকে (৪৭) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন জস হেইজেলউড। তবে বাভুমা ও কুইন্ট ডি কক দিনটা শেষ করেন স্বস্তিতে। সতীর্থদের করতালিতে দিন শেষে মাঠ ছাড়েন দুজন।

কঠিন একটি দিন শেষে অস্ট্রেলিয়ার অপেক্ষায় হয়ত আরও কঠিন সময়!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৩২.৫ ওভারে ৮৫ (ওয়ার্নার ১, বার্নস ১, খাওয়াজা ৪, স্মিথ ৪৮*, ভোজেস ০, ফার্গুসন ৩, নেভিল ৩, মেনি ১০, স্টার্ক ৪, হেইজেলউড ৮, লায়ন ২; ফিল্যান্ডার ৫/২১, অ্যাবট ৩/৪১, রাবাদা ১/২০, মহারাজ ০/২)।

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৭১/৫ (কুক ২৩, এলগার ১৭, আমলা ৪৭, দুমিনি ১, দু প্লেসি ৭, বাভুমা ৩৮*, ডি কক ২৮*; স্টার্ক ৩/৪৯, হেইজেলউড ২/৩৬, মেনি ০/৪৭, লায়ন ০/৩০)।