মারুফের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ঢাকার জয়

তারকা খচিত ঢাকা ডায়নামাইটস বিপিএল শুরু করেছে জয় দিয়। মুশফিকুর রহিমের বরিশাল বুলসকে উড়িয়ে দিতে ঝড় তুলেছেন মেহেদী মারুফ। কুমার সাঙ্গাকারা আর সাকিব আল হাসানের কাছ থেকে পেয়েছেন যোগ্য সঙ্গ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2016, 03:00 PM
Updated : 9 Nov 2016, 08:35 AM

মঙ্গলবারের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিবের দলের জয় ৮ উইকেটের। 

মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শাহরিয়ার নাফীস ও মুশফিকের অর্ধশতকে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে বরিশাল। জবাবে ১৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌছে যায় ঢাকা।

লক্ষ্য তাড়ায় ঢাকাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মারুফ। তাকে সঙ্গ দিয়ে যান শ্রীলঙ্কান ব্যাটিং কিংবদন্তি সাঙ্গাকারা।

আল আমিন হোসেনের দ্বিতীয় বলে মনোভাব জানিয়ে দেন মারুফ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বোলারের পরের ওভারে আরেকটি ছক্কা হাঁকান এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান, যা গিয়ে পড়ে পূর্ব গ্যালারির উপরের অংশে।

মারুফের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৪.১ ওভারে আসে ঢাকার অর্ধশতক। এমন সূচনা পাওয়ার পর আর পিছনে তাকাতে হয়নি দলটিকে।

ব্যক্তিগত ২৩ রানে আল আমিনকে সহজ ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান নিজের সহজাত ক্রিকেট খেলা সাঙ্গাকারা। ২৯ রানে বেঁচে যান ফিল্ডার অনেক সময় পেয়েও থ্রো স্টাম্পে রাখতে না পারায়। অবশেষে তাইজুল ইসলাম আক্রমণে এসে বিদায় করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে।

৮.৪ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে সাঙ্গাকারার অবদান ৩০ রান।

৩০ বলে অর্ধশতকে পৌঁছানো মারুফ ছক্কা হাঁকান স্পিনে মুশফিকের তিন ভরসা তাইজুল, মনির হোসেন খান ও দিলশান মুনাবিরার বলে। তিন নম্বরে নামা সাকিব ২০ রানের এক ইনিংস খেলে ফিরেন।

তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন ষোড়শ ওভারের শেষ বলে আল আমিনকে চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়ার সময় মারুফ অপরাজিত ৭৫ রানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটাই তার প্রথম অর্ধশতক। ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের ৪৫ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি করে ছক্কা ও চার।

এর আগে দিলশান মুনাবিরা-শামসুর রহমান ভালো সূচনা এনে দিতে পারেননি বরিশালকে। তৃতীয় ওভারেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। মোহাম্মদ শহীদের বলে মেহেদী মারুফের ক্যাচে ফিরে যান শামসুর।

শ্রীলঙ্কান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মুনাবিরা ফিরেন ডোয়াইন ব্রাভোর বলে নাসির হোসেনের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। পয়েন্টে ঝাঁপিয়ে এক হাতে ক্যাচ জমান দেশের অন্যতম সেরা ফিল্ডার।

নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট পেতে পারতেন সাকিব আল হাসান। তার বলে ডেভিড মালানকে ৪ রানে জীবন দেন উইকেটরক্ষক কুমার সাঙ্গাকারা। সেই ওভারে বিশাল এক ছক্কা হাঁকানো মালান শেষ পর্যন্ত ফিরেন সাকিবের বলেই, ব্রাভোকে ক্যাচ দিয়ে।

অষ্টম ওভারে ৪৪ রানে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়া বরিশাল ঘুরে দাঁড়ায় মুশফিক ও শাহরিয়ারের ব্যাটে।

আলাউদ্দিন বাবুর করা দ্বাদশ ওভারে ১৭ রান নিয়ে রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন মিডলঅর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান। সাকিবের এক ওভারে ছক্কা-চারে ১২ রান নেন শাহরিয়ার। চড়াও হওয়া এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন শহীদ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন শাহরিয়ার।

৩১ বলে অর্ধশতকে পৌঁছানো শাহরিয়ার শেষ পর্যন্ত ফিরেন ৫৫ রানে। তার ৩৪ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও দুটি ছক্কায় সাজানো।

৮.৩ ওভার স্থায়ী ৮২ রানের জুটি ভাঙার পর রানের গতিতেও ভাটা পড়ে। শেষের ঝড়ের দুই ভরসা থিসারা পেরেরা, রায়াদ এমরিট ফিরেন দ্রুত। শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের দৃঢ়তায় দেড়শ’ রানে কাছাকাছি লক্ষ্য দেয় বরিশাল। ৩৬ বলে মুশফিকের অপরাজিত ৫০ রানের ইনিংসে রয়েছে ৪টি চার ও দুটি ছক্কা।

২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ঢাকার সেরা বোলার শহীদ। এই ম্যাচে নয় জন বোলারকে বোলিংয়ে আনেন অধিনায়ক সাকিব।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বরিশাল বুলস: ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (শামসুর ৬, মুনাবিরা ১২, মালান ১৬, মুশফিক ৫০*, শাহরিয়ার ৫৫, থিসারা ৩, এমরিট ১, মারুফ ২*; শাহীদ ৩/২১, রাসেল ০/১০, সাকিব ১/২৩, ব্রাভো ১/২৬, নাসির ০/৮, বোপারা ১/২৩, সানজামুল ০/৭, আলাউদ্দিন ০/১৭, মোসাদ্দেক ০/১২)

ঢাকা ডায়নামাইটম: ১৬ ওভারে ১৪৯/২ (মারুফ ৭৫*, সাঙ্গাকারা ৩০, সাকিব ২০, মোসাদ্দেক ১০*; আল আমিন ০/৩৫, মনির ১/২৩, মেহেদি ০/১৩, এমরিট ০/২১, থিসারা ০/১৬, মুনাবিরা ০/২২, তাইজুল ১/১৪)

ফল: ঢাকা ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী মারুফ