সাকিবের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

তামিম ইকবালের অর্ধশতকে ভালো অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ লিড নিতে তাকিয়ে সাকিব আল হাসানের দিকে। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারকে সহায়তা করতে এখনও আছেন দুই ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2016, 04:08 AM
Updated : 21 Oct 2016, 02:31 PM

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২২১ রান। সাকিব ৩১ ও নাইটওয়াচম্যান শফিউল ইসলাম শূন্য রানে ব্যাট করছেন। শেষ সেশনে ৩০.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা।   

দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে বেন স্টোকসের বলে ফিরে যান মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট ছুঁয়ে আসা বল কোনোমতে গ্লাভসে নেন জনি বেয়ারস্টো। ৭২তম ওভারে মুশফিক (৭৭ বলে ৪৮) ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২২১/৫। 
রানের চাকা সচল রেখে পঞ্চম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েছেন মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান। পঞ্চাশ ছুঁতে তারা খেলেন ৬৬ বল।

মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের দৃঢ়তাভরা ব্যাটিংয়ে ৬৪তম ওভারে দুইশ’ পার হয় বাংলাদেশের সংগ্রহ।

১১ বছরের বেশি সময় পরে টেস্ট খেলতে নেমে তামিম ইকবালের মহামূল্যবান উইকেট পান গ্যারেথ ব্যাটি। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১৭৯ বলে ৭৮ রান করেন তামিম। ৫৫তম ওভারে বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফেরার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৬৩/৪।

আবার বিরতির ঠিক আগে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগের ওভারে দুই উইকেট হারানো স্বাগতিকরা চা-বিরতির আগের ওভারে হারায় মাহমুদউল্লাহকে। লেগ স্পিনার আদিল রশিদের বলে স্লিপে জো রুটকে নিচু ক্যাচ দেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৪৪তম ওভারে মাহমুদউল্লাহ ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১১৯/৩। দ্বিতীয় সেশনে তার উইকেট হারিয়ে ২৯.৩ ওভারে ৯০ রান যোগ করে স্বাগতিকরা।

আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা আউট দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তামিম ইকবাল। মইন আলির বল তার কনুইয়ে লেগে স্লিপে জো রুটের হাতে জমা পড়লেও বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে আউট দেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন তামিম, সিদ্ধান্তও পাল্টায়।

মইন আলির বলে কাভার দিয়ে চার হাঁকিয়ে অর্ধশতকে পৌঁছান তামিম ইকবাল। ১৩১ বলে পঞ্চাশ ছুঁতে ছয়টি চার হাঁকান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার নয় ইনিংসের এটি তার পঞ্চম অর্ধশতক, দলটির বিপক্ষে তার দুটি শতকও রয়েছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নয় ইনিংসের মধ্যে কেবল দুবার পঞ্চাশ ছুঁতে পারেননি তামিম।

অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়তে ৮৭ বল খেলেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ।

শুরু থেকে একপ্রান্তে স্পিন দিয়ে আক্রমণ করা ইংল্যান্ড সাফল্য পায় দ্রুতই। অফ স্পিনার মইন আলি বোলিংয়ে এসেই আঘাত হানেন। চার বলের মধ্যে বিদায় করেন ইমরুল কায়েস ও মুমিনুল হককে। দারুণ এক বলে বোল্ড হন ইমরুল (৫০ বলে ২১)। স্লিপে বেন স্টোকসের তালুবন্দি হন মুমিনুল হক (তিন বলে ০)। দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২৯/২।

ইংলিশ বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ের সামনে শুরুতে দেখেশুনে খেলেন তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস। বড় শট খেলা থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন তামিম। প্রথম ১০ ওভারে দুটি চার আসে ইমরুলের ব্যাট থেকে।

এর আগে মুশফিকুর রহিমের সফল রিভিউয়ে দ্বিতীয় দিন প্রথম ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ২৯৩ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। ১০৬তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে স্টুয়ার্ট ব্রডের ব্যাট ছুঁয়ে ক্যাচ আসে মুশফিকের কাছে। আম্পায়ার আউট না দিলে সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন অধিনায়ক। তাতে সিদ্ধান্ত পাল্টায়, ৩৭ বলে ১৩ রান করে ফিরে যান ব্রড।

ব্রডের ক্যাচে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসাল (৮৮) এখন মুশফিকের। ৮৭ ডিসমিসাল নিয়ে এতদিন শীর্ষে ছিলেন খালেদ মাসুদ।

৮০ রানে ৬ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। টেস্টে অভিষেকে এটি বাংলাদেশের কোনো বোলারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। সেরা ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আরেক অফ স্পিনার সোহাগ গাজীর ৬/৭৪।

এর আগে তাইজুল ইসলামের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরে আদিল রশিদকে (৫৪ বলে ২৬) বিদায় করেন সাব্বির রহমান। অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বল জায়গা করে নিয়ে খেলেছিলেন রশিদ। তবে শর্ট কাভারে তৎপর সাব্বিরকে ফাঁকি দিতে পারেননি। ১০১তম ওভারে ইংলিশ অলরাউন্ডার ফিরে যাওয়ার সময় দলের সংগ্রহ ২৮৯/৯।  

চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই আঘাত হেনেছিলেন তাইজুল ইসলাম। একটু ঝুলিয়ে দেওয়া বল এগিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ক্রিস ওকস। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল যায় শর্ট লেগে মুমিনুল হকের হাতে। ৯৩তম ওভারে ৭৮ বলে ৩৬ রান করে ওকস ফিরে যাওয়ার সময় ইংল্যান্ডের স্কোর ২৫৮/৮। 

শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করে ইংল্যান্ড।