মুশফিকদের চাওয়া টার্নিং উইকেট

সকালে মাঠে এসেই উইকেটে চোখ বুলিয়েছেন বাংলাদেশের কোচ-অধিনায়ক। এরপর বাংলাদেশের অনুশীলনের পরের পুরো সময়টুকু উইকেট থাকল চটে ঢাকা। দুপুরে ইংল্যান্ড দল মাঠে আসার সময়ও উইকেট ঢেকে রাখা। সংবাদ সম্মেলনে আসা আর যাওয়ার পথে কয়েক পলক সেদিকে তাকালেন অ্যালেস্টার কুক। কি রহস্য নিয়ে অপেক্ষায় ওই ২২ গজ?

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2016, 09:04 AM
Updated : 19 Oct 2016, 02:54 PM

এমনিতে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের টেস্ট উইকেটে কখনই রহস্য ছিল না। বেশিরভাগ সময়ই ছিল নিষ্প্রাণ উইকেট। কোনো কোনো টেস্টে উইকেট শুরুতে মন্থর থাকলেও শেষের দিকে ভালো হয়েছে। শেষ দুদিনে দারুণ ব্যাটিং উইকেট হয়ে ওঠার নজিরও আছে কয়েকবার।

তবে এবার বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট পরিষ্কার একটি বার্তা দিয়েছে মাঠের কিউরেটরকে; চাই টার্নিং উইকেট!

অনেক সময় চাইলেও হুট করে খুব টার্নিং উইকেট তৈরি সম্ভব হয় না। উইকেট খুব বাজে হয়ে গেলে ম্যাচ রেফারির প্রশ্নের মুখে পড়ার শঙ্কা তো আছেই। সব মিলিয়ে দলের চাওয়া অন্তত তৃতীয় দিন থেকে যেন খুব ভালো স্পিন ধরে উইকেটে।

এর আগে অনেকবারই নিষ্প্রাণ উইকেট বানিয়ে ব্যাটসম্যানে ঠাসা দল নিয়ে ড্র করার জন্য মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। এবার যে ভাবনা উল্টো, সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুশফিকুর রহিম।

“ফ্ল্যাট উইকেটে ২০ উইকেট নেওয়া কঠিন। সেদিক থেকে বলব, আমরা এবার পরিকল্পনা করেছি অন্যরকম। আমাদের যেটা মূল শক্তি, উইকেট যদি আমাদের স্পিনারদের সাহায্য করে, তাহলে আমাদের সামর্থ্য আছে, মান সম্পন্ন বোলার আছে যারা ২০টি উইকেট নিতে পারে।”

পরিকল্পনা টার্নিং উইকেটের বলেই বাংলাদেশের ১৪ জনের স্কোয়াডে পেসার মাত্র দুজন। সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি স্পিনার আরও তিন জন - মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শুভাগত হোম। স্পিনে হাত ঘোরানোর জন্য আরও আছেন মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মুমিনুল হক।

তবে আবহাওয়ার কারণে চাইলেও অনেক সময় চাওয়া মতো উইকেট গড়া সম্ভব হয় না। একাদশ গড়ায় মাথায় রাখতে হচ্ছে এটিও।

“স্কোয়াডে পেসার আছেই তো দুজন। আমরা চেষ্টা করব সেরা কম্বিনেশন গড়তে। আবহাওয়ার ব্যাপার আছে। শেষ মুহূর্তে আবাহাওয়ার কারণে উইকেট বদলে যেতে পারে। এসব আমাদের ভাবতে হচ্ছে।”

“আমাদের স্কোয়াডে যথেষ্ট স্পিনার আছে। আমরা যে পরিকল্পনা করেছি, আশা করি আমাদের সেরা কম্বিনেশন যেটা হবে, তাতে অভিষিক্ত ক্রিকেটারই হোক বা অন্য কেউ, সবার ওপরই আস্থা আছে।”

২০১০ সালে এই মাঠে টেস্ট খেলে গেছেন অ্যালেস্টার কুক। নিয়মিত অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস না থাকায় সেবার অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ডের ব্লেজার গায়ে প্রথমবার টস করেছিলেন এই চট্টগ্রামেই।

নেতৃত্বের প্রথম ইনিংসেই ১৭৩ রান করেছিলেন কুক। সেবার পাঁচ দিনে উইকেটের হেরফের কিছু হয়নি। এবারও তার প্রত্যাশা ভালো উইকেট। তবে বাংলাদেশের স্কোয়াড দেখে ইংলিশ অধিনায়কের মনে হচ্ছে অন্যরকম কিছু।

“২০১০ সালে যখন এখানে খেলেছিলাম, উইকেট ভালো ছিল। ওরা যতটা ভেবেছিল, ম্যাচের পরের দিকেও ততটা অবনতি হয়নি উইকেটের। তবে বাংলাদেশ এবার স্কোয়াডে অনেক স্পিনার রেখেছে। আমরা তাই ধারণা করছি পরের দিকে উইকেট টার্ন করবে। উপমহাদেশে তো এমনিতেই প্রথম কয়েকদিন উইকেট ব্যাটিং স্বর্গ থাকে, পরের শেষ দুদিনে দ্রুত অনেক উইকেট পড়ে।”

উইকেট সত্যিই বাংলাদেশ দলের প্রত্যাশা মতো আর কুকের ধারণা মতো হলে, দারুণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে টস। হয়ত প্রথম দুই, আড়াই দিনই ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো থাকবে উইকেট। তৃতীয় দিন বিকেল থেকেই হয়ত স্পিন-পরীক্ষা!