মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বললেন, মাইলফলক স্পর্শ করতে চান তারা পরদিনই।
“বাংলাদেশের জন্য এটি বড় অর্জন হবে। আমরা চেষ্টা করব দ্বিতীয় ম্যাচেই যেন সেটা হয়। এজন্য আমাদেরকে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।”
১৯৮৬ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার মোরাতুয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডের আঙিনায় পা রাখে বাংলাদেশ। অভিষেক থেকে টানা ২২ ম্যাচ ছিল শুধুই হার। অবশ্য এই ২২ ম্যাচ খেলতে লেগে যায় ১২ বছরের বেশি!
২৩তম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পায় প্রথম জয়ের স্বাদ। ১৯৯৮ সালে ভারতে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে ৬ উইকেটে হারায় কেনিয়াকে। বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে সেই জয়ের কারিগর ছিলেন মোহাম্মদ রফিক।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় জয় ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই জয়ের হাত ধরেই পরের বছর ধরা দেয় টেস্ট মর্যাদা। কিন্তু ওয়ানডেতে বাংলাদেরে জয় খরা দীর্ঘায়িত হতেই থাকে।
১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত আবার টানা ২৩ ম্যাচ হেরে যায় বাংলাদেশ, ওয়ানডেতে যা এখনও কোনো দলের টানা ম্যাচ হারার রেকর্ড। ২৪তম ম্যাচটিতেও ছিল হারের শঙ্কা, কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলে ছেদ পড়ে হারের ধারায়।
২০০৩ সালে আবার টানা ১৮ ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। টানা ৪৭ ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকার পর অবশেষে আরেকটি জয় ধরা দেয় ২০০৩ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এরপর ২০০৪, ২০০৭ ও ২০১০ সালে তিন দফায় টানা ১০ ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তবে শুরুর সময়টার মতো অত লম্বা সময় জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি আর। গত কবছর ধরে তো জয় আসছে নিয়মিতই। নিউ জিল্যান্ডকে দুবার, পাকিস্তানকে একবার হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়েকে করছে নিয়মিতই।
২০০৯ সালের ১৬ অগাস্ট বুলাওয়াওয়েতে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারানোর ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের ৫০তম জয়। সেই ম্যাচেই অপরাজিত ১৯৪ রান করে সাঈদ আনোয়ারের বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন চার্লস কভেন্ট্রি। পরে তামিম ইকবালের ১৫৬ রানের ইনিংসে ৩১২ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচ পর্যন্ত মোট ৩১৩টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। প্রথম ৫০ জয়ের দেখা পেতে খেলতে হয়েছিল ২০৫ ম্যাচ। বুধবার আফগানিস্তানকে হারাতে পারলে পরের ৫০ জয় হয়ে যাবে ১০৯ ম্যাচেই!
ওয়ানডেতে সব মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ৮৮৩ ম্যাচ খেলে জিতেছে ৫৪৬টি। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান জিতেছে সমান ৪৫৪ ম্যাচ। যদিও ভারত ম্যাচ খেলেছে ৮৯৯ টি, পাকিস্তান ৮৬৩।
অনুমিতভাবেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশিবার হারিয়েছে জিম্বাবুয়েকে, ৩৯টি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮টি জয় কেনিয়া ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশ:
প্রতিপক্ষ | ম্যাচ | জয় | হার | ফল হয়নি |
আফগানিস্তান | ৩ | ২ | ১ | ০ |
অস্ট্রেলিয়া | ১৯ | ১ | ১৮ | ০ |
বারমুডা | ২ | ২ | ০ | ০ |
কানাডা | ২ | ১ | ১ | ০ |
ইংল্যান্ড | ১৬ | ৩ | ১৩ | ০ |
হংকং | ১ | ১ | ০ | ০ |
ভারত | ৩২ | ৫ | ২৬ | ১ |
আয়ারল্যান্ড | ৭ | ৫ | ২ | ০ |
কেনিয়া | ১৪ | ৮ | ৬ | ০ |
নেদারল্যান্ডস | ২ | ১ | ১ | ০ |
নিউ জিল্যান্ড | ২৫ | ৮ | ১৭ | ০ |
পাকিস্তান | ৩৫ | ৪ | ৩১ | ০ |
স্কটল্যান্ড | ৪ | ৪ | ০ | ০ |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ১৭ | ৩ | ১৪ | ০ |
শ্রীলঙ্কা | ৩৮ | ৪ | ৩৩ | ১ |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ১ | ১ | ০ | ০ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ২৮ | ৭ | ১৯ | ২ |
জিম্বাবুয়ে | ৬৭ | ৩৯ | ২৮ | ০ |