বাংলাদেশের সফলতম মাশরাফি

অনেকের মতেই বাংলাদেশের সবসময়ের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেটি স্বাক্ষ্য দেবে এবার পরিসংখ্যানও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক এখন মাশরাফি। তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেন সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জয়ে!

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2016, 04:50 PM
Updated : 25 Sept 2016, 07:16 PM

রোববার প্রথম ওয়ানডেতে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মাশরাফির নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের এটি ৩১তম জয়। ছাড়িয়ে গেলেন তিনি হাবিবুল বাশারকে। সাবেক অধিনায়ক ও এখনকার অন্যতম নির্বাচক অধিনায়ক হিসেবে স্বাদ পেয়েছেন ৩০টি জয়ের।

৩৪ ম্যাচে কম নেতৃত্ব দিয়েই হাবিবুলকে ছাড়িয়ে গেলেন মাশরাফি। টেস্ট-ওয়ানডে মিলিয়ে ৮৭ ম্যাচে টস করেছেন হাবিবুল। খেলার সুযোগ পাননি কোনো টি-টোয়েন্টি। মাশরাফি তিন সংস্ককরণ মিলিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন ৫৩ ম্যাচে।

৬২ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ২৪টি জয়ের মুখ দেখেছেন সাকিব। ৮৪ ম্যাচে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের জয় ২৩টি। ৬২ ম্যাচে টস করে ১০ ম্যাচ জয়ের হাসিতে শেষ করতে পেরেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

ওয়ানডে জয়ে অবশ্য এখনও শীর্ষে হাবিবুল। ৬৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন ২৯টিতে। অধিনায়ক মাশরাফির ২১ জয় হয়ে গেল মাত্র ২৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েই। ৪৯ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে ২৩টিতে জয় অধিনায়ক সাকিবের।

২১ ওয়ানডে ছাড়াও ৯টি টি-টোয়েন্টি জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। এটিও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। ৮টি টি-টোয়েন্টি জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুশফিক।

২১ ওয়ানডে, ৯ টি-টোয়েন্টি ছাড়া অধিনায়ক মাশরাফির বাকি একটি জয় টস করা তার একমাত্র টেস্টে। নামের পাশে জয় থাকলেও অবশ্য সেই টেস্টে মাশরাফির অভিজ্ঞতা অবশ্য খুব সুখকর ছিল না। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই টেস্টের তৃতীয় দিন সকালেই চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাকে। বাকি সময়টা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সাকিব।

সেই টেস্টই ছিল প্রথমবার বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফির টস করা। চোট কাটিয়ে ফিরে পরের বছর ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেন ইংল্যান্ড সফরে। তার নেতৃত্বেই ইংল্যান্ডকে প্রথমবার হারায় বাংলাদেশ।

সেই বছরই দেশের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। এবারও প্রথম ম্যাচেই চোট পেয়ে ছিটকে যান মাঠের বাইরে। পরে কিউইদের হোয়াইটওয়াশে নেতৃত্ব দেন সাকিব।

সেই দুই অভিজ্ঞতার পর অধিনায়কত্ব থেকে দূরে ছিলেন মাশরাফি। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ঘোর দু:সময়ে আবার তার কাঁধে চাপে এই ভার। নতুন এই অধ্যায়ে তার ক্যারিয়ার পেল ভিন্ন মাত্রা, দু:সময়ের অমানিশা কাটিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এল অবিস্মরণীয় সব সাফল্য।

২০১৪ সালে জিম্বাবুয়েকে দেশের মাটিতে ৫-০তে হারিয়ে শুরু। পরের বছর বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলার স্বাদ। বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করল ১৬ বছর ধরে হারাতে না পারা পাকিস্তানকে, জয় এলো টি-টোয়েন্টিতেও। সিরিজ জয় এল প্রবল পরাক্রমশালী ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে; আবারও হোয়াইটওয়াশড জিম্বাবুয়ে।

এ বছরের শুরুতে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ খেলে ফাইনালে। বিশ্বকাপে সহযোগী দেশগুলোকে হারিয়ে খেলেছে মূল পর্বে। এবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারিয়ে মৌসুমের শুভ সূচনা।

মাশরাফির হাত ধরে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাশরাফি নিজেকে তুলে নিলেন সবার ওপরে!