ব্যাটিং তাণ্ডবে ইংল্যান্ডের বিশ্বরেকর্ড ৪৪৪!

ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংসের রেকর্ড গড়লেন অ্যালেক্স হেলস। জস বাটলারের ব্যাটে এলো ইংল্যান্ডের দ্রততম অর্ধশতক। ওয়েন মর্গ্যানের ব্যাটেও ঝড়। কথা বলেছে জো রুটের ব্যাটও। সবকিছুর যোগফল, ওয়ানেডে ইতিহাসে রানের চূড়ায় ইংল্যান্ড। রেকর্ড ৪৪৪ রান!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2016, 05:31 PM
Updated : 31 August 2016, 05:54 AM

সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানি বোলিং আক্রমণকে গুঁড়িয়ে ৫০ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৪৪ করেছে ইংল্যান্ড। ওয়ানডে ক্রিকেটই এটিই দলীয় সর্বোচ্চে রান। পেছনে পড়ে গেছে শ্রীলঙ্কার ৪৪৩।

২০০৬ সালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আমস্টেলভিনে ৯ উইকেটে ৪৪৩ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর দুবার রেকর্ডটিকে হুমকির মুখে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে কাছেও গিয়েও পারেনি দুবারই। একবার থেমেছিল ৪৩৯ রানে, আরেকটা ৪৩৮। অবশেষে পারল ইংল্যান্ড।

রেকর্ড গড়তে শেষ ওভারে ৬ রান প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। পাকিস্তানের নবীন পেসার হাসান আলির প্রথম পাঁচ বল থেকে আসে মাত্র একটি সিঙ্গেল, একটি বাই। শেষ বলে বাটলারের বাউন্ডারিতে ইংল্যান্ড উঠে যায় নতুন উচ্চতায়।

ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের এটি দ্বিতীয় চারশ’ রানের স্কোর। এর আগে গত বছর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছিল তারা ৯ উইকেটে ৪০৮।

পাকিস্তানের বিপক্ষে এই প্রথম চারশ রান হলো ওয়ানডেতে। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৯২।

এমন রেকর্ড ভাঙা রান উৎসবের ইঙ্গিত ছিল না ইনিংসের প্রায় অর্ধেক জুড়েই। ২০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ১২৩। রান রেট ছয়ের একটু বেশি।

প্রথম অর্ধশতক করতে হেলস খেলেন ৫৫ বল। এরপরই ঝড় ওঠে হেলসের ব্যাটে। জোয়ার আসে ইংল্যান্ডের রানের গতিতেও। ৮৩ বলে সেঞ্চুরি করেন হেলস।

সেখানেই না থেমে ছাড়িয়ে যান ইংল্যান্ডের হয়ে আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রবিন স্মিথের ১৬৭ রানকে। ১২২ বলে ১৭১ করে আউট হন হেলস। ৪টি ছক্কার পাশে মেরেছেন ২২টি বাউন্ডারি। যেটিও ইংল্যান্ডের রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল স্ট্রাউসের ১৯ বাউন্ডারি।

ওপেনার জেসন রয় ১৫ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে জো রুটের সঙ্গে হেলসের জুটি ২৪৮ রানের। ৮৬ বলে ৮৫ করে আউট হন রুট।

এই দুজন বিদায় নিলেও থামেনি ঝড়। জস বাটলার ও ওয়েন মর্গ্যান বরং ব্যাট হাতে তোলেন টর্নেডো। উইকেটে যাওয়ার পরপরই বাটলার জোড়া ছক্কা মারেন বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজকে। একটু পর শোয়েব মালিকের এক ওভারে চারটি ছক্কায় বাটলার স্পর্শ করেন অর্ধশতক। মাত্র ২২ বলে, ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতে যা দ্রুততম।

আরেক পাশে মর্গ্যানও চালিয়েছেন তাণ্ডব। অর্ধশতক করেছেন ২৪ বলে। শেষ পর্যন্ত ৩ চার ও ৫ ছক্কায় ২৭ বলে ৫৭ করে অপরাজিত মর্গ্যান। আর ৭টি করে চার ও ছক্কায় ৫১ বলে অপরাজিত ৯০ বাটলার।

চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রান এসেছে মাত্র ৭২ বলে ১৬১! শেষ ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তুলেছে ১৩৫ রান।

পাকিস্তানের বোলারদের বোলিং বিশ্লেষণের চেহারা করুণ। ‘সেঞ্চুরি’ করেছে তাদের এক বোলারও। রান দেওয়ার সেঞ্চুরি! ১০ ওভারে ১১০ রান গুণেছেন ওয়াহাব রিয়াজ।

এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো বোলার রান দেওয়ার সেঞ্চুরি করল। তাদের হয়ে আগের সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ডও ছিল ওয়াহাবেরই। ৯ ওভারে ৯৩ রান দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২০১৩ সালে।

১০ ওভারে ৭৪ রান দিয়েছেন হাসান আলি, ৭২ মোহাম্মদ আমির। ৬ ওভারে ৬৮ ইয়াসির শাহ, ৩ ওভারে ৪৪ মালিক। আর ১ ওভারে ২০ অধিনায়ক আজহার আলি।

মাঝ বিরতিতে ইংল্যান্ডের জয় মনে হচ্ছিল অবশ্যম্ভাবী! হয়েছেও তাই। পাকিস্তান ৪২ ওভার ৪ বলে অলআউট হয়েছে ২৭৫ রানে।

ইংল্যান্ড জিতেছিল সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচই। রেকর্ডময় তৃতীয় ওয়ানডে ১৬৯ রানে জিতে ৫ ম্যাচের সিরিজ জিতে নিল স্বাগতিকরা।