বাংলাদেশ সফরে সব ক্রিকেটারই আসবে, আশা ইসিবির

বাংলাদেশ সফরে আসা নিয়ে ব্যক্তিগত অবস্থান জানানোর জন্য ক্রিকেটারদের সময় দেবে ইংল্যান্ডে ক্রিকেট বোর্ড। তবে ক্রিকেট পরিচালক অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস আশা করছেন, ক্রিকেটাররা সবাই মিলে সফর করার সিদ্ধান্ত নেবেন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2016, 09:16 AM
Updated : 27 August 2016, 10:36 AM

গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ইসিবির সভায় পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সভায় খেলোয়াড়দের সফর নিয়ে কোনো কথা অব্যক্ত না রাখার উৎসাহ দিয়েছিলেন স্ট্রাউস। ইসিবির নিরাপত্তা প্রধান রেজ ডিকাসনের পরামর্শ পাওয়ার পর স্ট্রাউস মনে করছেন বাংলাদেশ সফর শতভাগ নিরাপদ। তবে যে কোনো শঙ্কা নিয়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনার জন্য স্ট্রাউস তার দরজা খোলা রেখেছেন।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর দেশ ছাড়ার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাবে ইসিবি। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ফতুল্লায় ইংল্যান্ড দলকে কোন পর্যায়ের নিরাপত্তা দেওয়া হবে সে বিষয়ে ইসিবিকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সফলভাবে হয়েছিল, যাতে ইংল্যান্ড দল পাঠিয়েছিল। এটিও সিদ্ধান্তটির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 

স্ট্রাউস বলেন, “কোনো পর্যায়েই আমরা খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করিনি তাদের পাওয়া যাবে কিনা। আমরা এখনও এই পর্যায়ে যাইনি। আমি আশাবাদী যে খেলোয়াড়দের আমরা বোঝাতে পারব সফরটি নিরাপদ। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে সফরটা নিরাপদ। ডিকাসন আর তার অভিজ্ঞতায় আমার সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস আছে।”

“ইসিবি আর রেজের কাজ হচ্ছে খেলোয়াড়দের নিশ্চিত করা, (সফরে) যাওয়াটা নিরাপদ। আমি নিশ্চিত, একবার তারা (খেলোয়াড়রা) এই নিশ্চয়তা পেলে আমাদের পুরো স্কোয়াড একসঙ্গে হয়ে বলব, চলো দল হিসেবে যাওয়া যাক।”

স্ট্রাউস অবশ্য সফরের বিষয়ে কাউকে জোর করে রাজি করানোর পক্ষে নন।

“আমরা কাউকে কোনো সফরে যাওয়ার জন্য জোর করতে পারি না এবং আমরা এটা চাইও না। আমাদের কাজ হচ্ছে তাদের নিশ্চয়তা দেওয়া যে এটা নিরাপদ। আর এটাই যদি হয় তাহলে সফর বাতিল করার আর কোনো কারণ নেই। তাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে আমরা উত্তর দেব এবং আশা করি, তাদের মনে কোনো ভয় থাকলে তা দূর করতে পারব।”

২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর কেভিন পিটারসেনের নেতৃত্বে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে ভারতে ফেরা দলে ছিলেন স্ট্রাউস ও বর্তমানে ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক অ্যালেস্টার কুক। বৃহস্পতিবারের সভায় কুকও উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য স্টুয়ার্ট ব্রড ও জেমস অ্যান্ডারসনও ভারত সফরের সেই দলে ছিলেন। 

ইংল্যান্ডের ভারতে ফেরাটা অনেক সুনাম কুড়িয়েছিল এবং বাংলাদেশেও তারা উষ্ণ অভ্যর্থনা পাবে। সম্প্রতি বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছেন, ‘এই সিরিজ খেললে আমাদের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে। এটা শুধু সিরিজ খেলার বিষয় নয়’।”

ইংল্যান্ডে ক্রিকেটারদের মনের অবস্থা নিয়ে স্ট্রাউস বলেন, “আমি জানি, এটা একটা আবেগী বিষয় এবং অনেকে এই প্রথম এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটা সহজ নয়।…তাদের এটা হজম করা আর প্রশ্ন করতে দেওয়ার সময় দেওয়াটা সত্যি গুরুত্বপুর্ণ।”

ভারতের অভিজ্ঞতা থেকে স্ট্রাউসের আশা, একবার যদি প্রাথমিক অনিশ্চয়তা কেটে যায় এবং সফরটি শুরু হয় তাহলে দলের চারপাশে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা বলয় থাকার পরও ক্রিকেট খেলোয়াড়দের স্বস্তি দেবে।   

“আমরা যখন ভারতে ফিরে গেলাম তখন আমাদের চারপাশে ব্যাপক নিরাপত্তা ছিল কিন্তু প্রথম কয়েক দিন পর আপনি ক্রিকেটে ফিরবেন এবং ম্যাচ জেতার চিন্তা করবেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি না বাংলাদেশেও এটাই হবে; কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে এ রকমই হবে।”

স্ট্রাউস জানান, তিনি নিজে, ইসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টম হ্যারিসন ও ইসিবি চেয়ারম্যান কলিন গ্রেভস সফরের বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আসবেন। আগামী মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি শেষের পরপরই দল ঘোষণা করবে ইংল্যান্ড।