রয়, রুটের ব্যাটে পাকিস্তানকে হারাল ইংল্যান্ড

ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতাটাকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলা ইংল্যান্ডকে ধরা ছোঁয়ার মধ্যে লক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন বোলাররা। ব্যাটিংয়ে দলকে পথ দেখিয়েছেন জেসন রয় ও জো রুট। তাদের দুই অর্ধশতকে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ৪৪ রানে জিতেছে স্বাগতিকরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2016, 09:24 PM
Updated : 24 August 2016, 09:24 PM

এই সংস্করণে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি ইংল্যান্ডের নবম জয়। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ওয়েন মর্গ্যানের দল। আগামী শনিবার লর্ডসে হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে।   

বুধবার রোজ বৌলে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২৬০ রান করে পাকিস্তান। ২০১২ সাল থেকে সাউথ্যাম্পটনে ওয়ানডেতে প্রথম ইনিংসে গড় রান ৩১২।

ইংল্যান্ড ইনিংসের ৩৪ ওভার শেষে বৃষ্টির জন্য আধা ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকে। খেলা শুরু হলে তাদের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৮ ওভারে ২৫২ রান। কিন্তু মাত্র তিন বল খেলা হওয়ার পর আবার বৃষ্টি নামলে সেখানেই ম্যাচের সমাপ্তি হয়।

৩৪.৩ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৯৪ রান। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে জয়ের জন্য তখন তাদের দরকার ছিল ১৫১ রান। সে সময় মর্গ্যান ৩৩ ও বেন স্টোকস ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।

লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত অ্যালেক্স হেলসকে হারানো ইংল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে রয় ও রুটের ব্যাটে। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই জনে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। শুরুতেই ভাঙতে পারত এই জুটি। মোহাম্মদ আমিরের বলে ছুটে গিয়ে রয়ের ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি সরফরাজ আহমেদ। কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা উমর গুলের জন্য এটি হতে পারত খুব সহজ একটি ক্যাচ।

মাঝখানে কিছুটা অসুস্থ বোধ করা রয়ের দাপুটে ইনিংস শেষ হয় মোহাম্মদ নওয়াজের বলে বাবর আজমের দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে। ৫৬ বলে ৬৫ রান করেন ম্যাচ সেরা এই খেলোয়াড়, ৬টি চার ও একটি ছক্কায়।

টানা তৃতীয় অর্ধশতক পাওয়া রুট ফিরেন দলের সংগ্রহ দেড়শ’ ছাড়ানোর পর। রান আউট হওয়ার আগে ৭২ বলে ৬টি চারে ৬১ রান করেন স্বাগতিকদের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা শারজিল খান ঝড় তোলার আগেই ফিরে যান। দ্রুত তাকে অনুসরণ করেন টপ অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজ।

আগের ১২ ইনিংসে একবারও পঞ্চাশ ছুঁতে না পারা আজহার ফিরতে পারতেন দুই অঙ্কে যাওয়ার আগেই। ব্যক্তিগত নয় রানে একবার হেলস অন্যবার উইকেটরক্ষক জস বাটলার তার ক্যাচ ছাড়েন।

জীবন পাওয়া আজহারকে ঘিরে গড়ে উঠে পাকিস্তানের ইনিংস। দ্রুত রান তোলার দিকে মনোযোগী ছিলেন বাবর। আজহারের সঙ্গে ৬১ রানের জুটিতে তার অবদান ৪২ বলে ৪০ রান। আদিল রশিদের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি।

রানের গতি বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টায় ফিরেন আজহার। লেগ স্পিনার রশিদের ঝোলানো বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট থার্ড ম্যানে উঠা সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে কোনো ভুল করেননি মইন আলি। ১১০ বলে খেলা আজহারের ৮২ রানের ইনিংসটি গড়া ৯টি চারে।

তবে বৃষ্টির বাধায় ১০ মিনিটের জন্য খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ভালোভাবেই এগোচ্ছিল পাকিস্তানের ইনিংস। ৪২.১ ওভারে তাদের স্কোর ছিল ২১৮/৪। সেখান থেকে তিনশ’ রানের কাছাকাছি সংগ্রহ গড়া সম্ভব ছিল। কিন্তু বিরতিতে ঘটা ছন্দ পতন কাটিয়ে রানের গতি আর বাড়াতে পারেনি অতিথিরা।

আবা খেলা শুরু হওয়ার পর দুই ওভারের মধ্যে ফিরে যান শোয়েব মালিক ও অর্ধ শতক পাওয়া সরফরাজ। নওয়াজ ও ইমাদ ওয়াসিম দলের সংগ্রহ আড়াইশ’ পার করেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৬০/৬ (আজহার ৮২, শারজিল ১৬, হাফিজ ১১, বাবর ৪০, সরফরাজ ৫৫, মালিক ১৭, নওয়াজ ১৭*, ওয়াসিম ১৭*; রশিদ ২/৫১, রুট ১/২৬, ওকস ১/৪৩, প্লানকেট ১/৫২, উড ১/৫৭)

ইংল্যান্ড: ৩৪.৩ ওভারে ১৯৪/৩ (লক্ষ্য ৩৪.৩ ওভারে ১৫১) (রয় ৬৫, হেলস ৭, রুট ৬১, মর্গ্যান ৩৩*, স্টোকস ১৫*; নওয়াজ ১/৩১, গুল ১/৪৬)

ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ইংল্যান্ড ৪৪ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জেসন রয়।