মার্শ-হেইজেলউডের নৈপুন্যে শিরোপা অস্ট্রেলিয়ার

ম্যাথু ওয়েড, মিচেল মার্শ ও জস হেইজেলউড-তিনজনের ভেলায় অস্ট্রেলিয়া পার হলো ক্যারিবিয়ান বাধা। স্বাগতিকদের হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জিতল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 June 2016, 05:39 AM
Updated : 27 June 2016, 10:24 AM

রোববার ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৮ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ব্রিজটাউনে অস্ট্রেলিয়ার ২৭০ রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় ২১২ রানে।

ইনিংসের মাঝামাঝি হঠাৎ থমকে যাওয়া অস্ট্রেলিয়াকে লড়ার মত রান এনে দেন ওয়েড। ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংসের পর দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙে দেন মিচেল মার্শ। আর নতুন বলের কারিগর হেইজেলউড এদিন জ্বলে ওঠেন পুরানো বলে।

ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার শুরুর ভাগটা ছিল ভালো-মন্দের মাঝামাঝি। উসমান খাওয়াজা শুরুতে ফিরলেও পরের চার ব্যাটসম্যানই রান পেয়েছেন। তবে কাজ অপূর্ণ রেখে ফিরেছেন চারজনই।

৪১ বলে ৪৭ করে ফিঞ্চ আউট হয়েছেন কাইরন পোলার্ডকে ছক্কা মারতে গিয়ে। চল্লিশের ঘরে আউট হয়েছেন স্টিভ স্মিথও। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বাউন্সারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বল আকাশে তোলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক (৪৬)।

এই দুজনের মাঝে ফিরে গেছেন জর্জ বেইলি (২২)। কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে থার্ডম্যানে খেলতে গিয়ে বল টেনে এনেছেন স্টাম্পে। মার্শ (৩৩) খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু তিনিও ফেরেন আলসে শটে বল স্টাম্পে টেনে এনে।

অস্ট্রেলিয়া তখন দুশ'র আশেপাশে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে কেবল ওয়েড। এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানই লোয়ার-অর্ডারদের নিয়ে এগিয়ে দিলেন দলকে। খেললেন ৫২ বলে ৫৭ রানের মহামূল্য ইনিংস। মিচেল স্টার্ক, নাথান কোল্টার-নাইল দিলেন যোগ্য সঙ্গ। অস্ট্রেলিয়া পেল ২৭০ রানের সংগ্রহ।

রান তাড়ায় আন্দ্রে ফ্লেচার ছিলেন ম্রিয়মান। আরেক পাশে জনসন চার্লসের ব্যাটে তবু শুরুটা খারাপ হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হেইজেলউড, ৪৯ রানের জুটিতে ফ্লেচারের অবদান ৯। 

এরপর দ্রুতই ম্যাচের চেহারা পাল্টে দেন মার্শ। ক্রস সিম ডেলিভারিতে নাজেহাল করে ছড়েন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের। নিজের টানা তিন ওভারে ফিরিয়ে দেন চার্লস, ড্যারেন ব্রাভো ও মারলন স্যামুয়েলসকে। মার্শের প্রথম স্পেল ৬-১-৭-৩!

খানিক পর অ্যাডাম জ্যাম্পাকে ছক্কা মারতে গিয়ে পোলার্ড আউট হলে শেষ হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের সম্ভাবনা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ৫ উইকেটে ১০৫।

রামদিন-হোল্ডার এরপর চেষ্টা করেছেন পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে হেইজেলউড নিশ্চিত করেছেন ব্যবধানটাও হচ্ছে বেশ বড়। প্রথম উইকেটের পর শেষ ৪ উইকেট নিয়ে পূর্ণ করেছেন ৫ উইকেট। ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট পেলেন তরুণ এই পেসার।

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ-সেরা যদিও মার্শ। তবে খালি হাতে ফেরেননি হেইজেলউডও। ১১ উইকেট নিয়ে তিনিই টুর্নামেন্ট সেরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৭০/৯ (খাওয়াজা ১৪, ফিঞ্চ ৪৭, স্মিথ ৪৬, বেইলি ২২, মার্শ ৩২, ম্যাক্সওয়েল ৪, ওয়েড ৫৭*, স্টার্ক ১৭, কোল্টার-নাইল ১৫, জ্যামপা ৫, হেইজেলউড ০*; হোল্ডার ২/৫১, গ্যাব্রিয়েল ২/৫৮, ব্র্যাথওয়েট ১/৩২, পোলার্ড ১/৩৩, নারাইন ১/৫৫, বেন ১/৩৮)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৫.৪ ওভারে ২১২ (ফ্লেচার ৯, চার্লস ৪৫, ব্রাভো ৬, স্যামুয়েলস ৬, রামদিন ৪০, পোলার্ড ২০, হোল্ডার ৩৪, ব্র্যাথওয়েট ১৪, নারাইন ২৩, বেন ২, গ্যাব্রিয়েল ১*; স্টার্ক ০/৩২, হেইজেলউড ৫/৫০, কোল্টার-নাইল ১/৪৬, মার্শ ৩/৩২, জ্যামপা ১/৫০)।

ফল: ৫৮ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মিচেল মার্শ।

ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: জস হেইজেলউড।