আবাহনীকে শিরোপার কাছে নিলেন তামিম-সাকলাইন

ম্যাচ শেষে মাঠেই এক দফা হয়েছে উৎসব, হয়েছে ফটোসেশন। উল্লাস হয়েছে ড্রেসিং রুমেও। আনুষ্ঠানিকতা এখনও বাকি, তবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে এক রকম শিরোপা জয়ের উৎসবই করল আবাহনী।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 June 2016, 12:40 PM
Updated : 22 June 2016, 01:05 PM

তামিম ইকবালের অসাধারণ ১৪২ আর সাকলাইন সজিবের ৭ উইকেটে প্রাইম ব্যাংককে ১১৫ রানে উড়িয়ে দিয়েছে আবাহনী। ট্রফিতে এক হাতও দিয়ে ফেলেছে তারা এই জয়ে।

২২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে আবাহনী। ২০ পয়েন্ট নিয়ে ঠিক পেছনেই প্রাইম দোলেশ্বর। এই দুই দলের স্থগিত ম্যাচটাই এখন আবাহনী ও শিরোপার মাঝে আনুষ্ঠানিকতার বাধা। ওই ম্যাচটি যদি আবার হয় এবং আবাহনী হেরেও যায়, তবু পয়েন্ট, জয়ের সংখ্যা ও মুখোমুখি লড়াইয়ে থাকবে সমতা। তখন আসবে রানরেটের হিসাব। সেখানে আবাহনী এতটাই এগিয়ে যে ক্রিকেটীয় অনিশ্চয়তাও খুব বড় বাধা নয়।  

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তামিম। প্রথম ওভারেই আবাহনী হারায় লিটন দাসকে। প্রথমে নাজমুল হোসেন শান্ত, পরে দিনেশ কার্তিককে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন তামিম।

তবে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় তামিম ও মোসাদ্দেক হোসেনের জুটি। দলীয় একশ ছুঁতেই ২৪ ওভার লেগে গিয়েছিল। এরপর রানের গতিতে জোয়ার আনেন এই দুজন। চতুর্থ উইকেটে ১৭৩ রানের জুটি গড়েছেন ১৩৩ বলে!

তামিম শুরুতে ছিলেন অনেক সাবধানী। ৭০ বলে করেন অর্ধশতক। এবারের লিগের দ্বিতীয় ও লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের দশম শতক স্পর্শ করেন ১১৪ বলে। অন্যপাশে মোসাদ্দেক অর্ধশতক করেন ৫৯ বলে।

মাইলফলকের পর তান্ডব চালান দুজনই। শুভাগতর এক ওভারে দুজন মারেন ৪ ছক্কা, মনির হোসের এক ওভারে তামিম দুটি।

শেষ পর্যন্ত ১৩২ বলে ১৪২ করে তামিম আউট হয়েছেন উন্মুক্ত চাঁদকে ছক্কা মারতে গিয়ে। ১১টি চারের পাশে ইনিংসে ৪টি ছক্কা। ৫ ছক্কায় ৭৪ বলে ৭৮ করে চাঁদের বলেই ফিরেছেন মোসাদ্দেক।

এই দুজন ফিরলেও থামেনি ঝড়। দুটি করে চার ও ছক্কায় ১০ বলে ২৬ করেন আবুল হাসান। আবাহনী থামে ৩১৬ রানে। শেষ ১০ ওভারেই এসেছে ১১৭!

রান তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল প্রাইম ব্যাংক। মেহেদি মারুফ ও উন্মুক্ত চাঁদ উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৭২ রান। চাঁদকে তাসকিন এই জুটি ভাঙার পর জনি তালুকদারকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন মারুফ।

কিন্তু বল হাতে নিয়েই তাদের ধসিয়ে দেন সাকলাইন। দু-দুবার জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। সেটি না হলেও ধরেছেন একের পর এক শিকার। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে আগে কখনও ৫ উইকেটও পাননি। এবার নিয়ে নিলেন ৫৮ রানে ৭ উইকেট!

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। আব্দুর রাজ্জাকের ১৭ রানে ৭ উইকেট সেরা।

দারুণ ইনিংসটির জন্য ম্যাচ সেরা অবশ্য তামিম। আবাহনী অধিনায়ক এবার অপেক্ষায় ট্রফিতে হাত ছোঁয়ানোর জন্য!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ৩১৬/৮ (তামিম ১৪২, লিটন ০, শান্ত ১৭, কার্তিক ২৫, মোসাদ্দেক ৭৮, সাকিব ১২, আবুল হাসান ২৬, অভিষেক ৫*, সাকলাইন ০*; রুবেল ২/৬৯, শুভাগত ০/৫০, নাজমুল অপু ২/৪৮, চাঁদ ৩/৫৯, রায়হান ০/২৫, মনির ০/৬২)।

প্রাইম ব্যাংক: ৩৭.২ ওভারে ২০১(মারুফ ৬৯, চাঁদ ২৩, জনি ১৩, নুরুল ৯, সাব্বির ১২, তাইবুর ০, শুভাগত ৫১, রায়হান ৯, রুবেল ০, মনির ১*, নাজমুল অপু রিটায়ার্ড হার্ট; তাসকিন ২/৪৫, সাকিব ০/৩৯, সাকলাইন ৭/৫৮, অমিত ০/১৬, আবুল হাসান ০/১৬, মোসাদ্দেক ০/২৩)

ফল: আবাহনী ১১৫ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: তামিম ইকবাল