‘স্পিন স্বর্গে’ এনামুল-অলকদের দারুণ জয়

বরাবরের ব্যাটিং স্বর্গ থেকে বিকেএসপির উইকেট হঠাৎ করে হয়ে গেল পুরোপুরি স্পিন বান্ধব। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তুষার ইমরান তাই হয়ে গেলেন উইকেট শিকারি স্পিনার। ব্যাটিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান অফস্পিনে হয়ে গেলেন যেন মুরালিধরন!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2016, 12:22 PM
Updated : 30 May 2016, 12:22 PM

স্পিন প্রদর্শনীতে শেষ পর্যন্ত জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। সুপার লিগে ওঠার গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়ন হেরেছে ৪৩ রানে। ১৬৮ তাড়া করতে গিয়েই ব্রাদার্স মুখ থুবড়ে পড়ে ১২৪ রানে।

গাজী গ্রুপের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মতে, উইকেট ভালো ছিল না একটুও, “প্রথম ওভার থেকেই বল ঘুরেছে বনবন করে। যেসব স্পিনাররা সাধারণত বল একটু-আধটু ঘোরাতে পারে মাঝে মধ্যে, তাদের বলও বিশাল টার্ন করেছে। খুব কঠিন ছিল খেলা।”

এর মধ্যেও গাজীকে দারুণ সূচনা এনে দেন এনামুল হক ও শামসুর রহমান। ১৪ ওভারে ৭০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন দুজন। যার বড় কৃতিত্ব এনামুলের। ৪টি ছক্কা ৩ চারে ৪৬ রান করেছেন ৫২ বলে।

এনামুলকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন ইফতেখার সাজ্জাদ। পরের ওভারে এই অফ স্পিনার তুলে নেন নাসিরুদ্দিন ফারুককে। প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ভারতীয় অলরাউন্ডার গুরকিরাত সিং মান শিকার হন নাবিল সামাদের বাঁহাতি স্পিনে।

এরপরই দৃশ্যপটে তুষার। অনিয়মিত স্পিনার নিজের প্রথম ৩ ওভারেই তুলে নেন ৪ উইকেট। ৩২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে তখন ধ্বংসস্তুপ গাজী। বিনা উইকেটে ৭০ থেকে ৮ উকেটে ১০২!

লোয়ার অর্ডার থেকে আসে মূল্যবান কিছু রান। আটে নেমে অপরাজিত ২৯ করেন ফারুক হোসেন। দশে নেমে সালেহিন শাদ ১৬। আর এগারোতে নেমে ৩ ছক্কায় ১৮ বলে ২৬ রানের মহামূল্য ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ শরীফ।

কোচ সালাউদিদন জানালেন, উইকেটের কারণেই ১৬৭ রানের পুঁজি নিয়েও জয়ের আশা ছিল গাজীর। হয়েছেও সেটিই। এমনিতে জোরের ওপর উইকেট সোজা বল করেন মেহেদি। টার্ন করে কদাচিৎ। তার বল সেখানে টার্ন করল বিশাল।

সঙ্গে গাজীর অন্য স্পিনাররা তো ছিলেনই। বল হাতে ৪ উইকেটের পর ব্যাটিংয়েও যা একটু লড়েছেন ওই তুষারই। তিনে নেমে ৮১ বলে করেছেন ৪১। বিশ রানও করতে পারেনি আর কেউ। ৪০ ওভারে গুটিয়ে যায় ব্রাদার্স।

১০ ওভারে ৩ মেডেন, মাত্র ১৬ রান দিয়ে মেহেদি নিয়েছেন ৪ উইকেট। তিন স্পিনার ভাগাভাগি করেছেন বাকি ৬ উইকেট।

স্পিনাররা জেতালেও গাজীর জয়ের বড় কৃতিত্ব কোচ দিলেন ওপেনার এনামুলকে।

“উইকেট সুবিধের নয় বুঝতে পেরে বিজয় (এনামুল) দারুণ চার্জ করে খেলেছে। কিছু ছক্কা মেরে রান বাড়িয়েছে। ওর ইনিংসটা না হলে হয়ত আমরা একশতে অলআউট হয়ে যেতাম।”

ব্রাদার্সের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফীসও দায় দিলেন উইকেটকেই, “বিকেএসপিতে জীবনে কখনোই এত টার্ন দেখিনি। বল গ্রিপ করেছে ও টার্ন করেছে। সেটাও শার্প টার্ন। জোরে বল করা স্পিনাররাও বড় টার্ন পেয়েছে। খেলা খুব কঠিন ছিল।”

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ: ৩৫.২ ওভারে ১৬৭ (এনামুল ৪৬, শামসুর ২৮, ফারুক ১, গুরকিরাত ১, সাজেদুল ২, অলক ২, মেহেদি ১, ফারুক ২৯*, ফরহাদ ৩, শাদ ১৬, শরিফ ২৬; নূর ০/১৯, আসিফ ১/২৮, নাবিল ১/৩১, ইফতেখার ৩/৩৩, তুষার ৪/২৭, সঞ্জিত ০/১৫, মিলিন্দ ০/১০)।

ব্রাদার্স: ৪০.১ ওভারে ১২৪ (শাহরিয়ার ৮, ইমরুল ১৩, তুষার ৪১, জাকির ১৯, মিলিন্দ ০, ইফতেখার ১২, আরমান ১৪, সঞ্জিত ০, নূর ০, আসিফ ১১*, নাবিল ৫; শামসুর ০/১১, মেহেদি ৪/১৬, গুরকিরাত ২/৩২, অলক ২/৩১, শরিফ ০/১১, শাদ ২/২৩)।

ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৪৩ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মেহেদি হাসান।