শামসুরের দুর্দান্ত শতক ছাপিয়ে নায়ক তাসকিন

নতুন বলে তাসকিন আহমেদের আগুনে বোলিং। শামসুর রহমানের প্রতিআক্রমণ, হাল ধরা; অসাধারণ শতকের পর সেই তাসকিনেরই শিকার। আবাহনী ও গাজী গ্রুপের লড়াইটি পরিণত হয়েছিল যেন তাসকিন ও শামসুরের দ্বৈরথে। যেখানে শেষ হাসি তাসকিনের। জিতেছে তার দল আবাহনীও।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 May 2016, 10:18 AM
Updated : 25 May 2016, 12:17 PM

সুপার লিগে জায়গা করে নেওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৩২ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। বুধবার বিকেএসপিতে রিজার্ভ ডেতে গড়ানো ম্যাচ দেখেছে তাসকিনের গতির ঝড় আর শামসুরের দারুণ শতক।

আবাহনীর হয়ে খেলতে এসে প্রথম ম্যাচেই ভারতীয় অলাউন্ডার রজত ভাটিয়ার অপরাজিত ৯০ ও তামিম ইকবালের ৫৫ রানে আগের দিন ২৭৬ রান তুলেছিল আবাহনী। বৃষ্টিতে পরে আর রান তাড়ায় নামতে পারেনি গাজী।

বুধবার সাত-সকালেই গাজীকে নাড়িয়ে দেন তাসকিন। ইনিংসের প্রথম দুই বলেই ফিরিয়ে দেন এনামুল হক ও মেহেদি হাসানকে!

এক বছরের বেশি সময় পর মাঠে নেমে শাহাদাত হোসেন উইকেট নিয়েছেন নিজের দ্বিতীয় ওভারেই। ফিরিয়ে দিয়েছেন সাঈদ আনোয়ার জুনিয়রকে।

তাসকিনের গতির ঝড় তখনও চলছিল। বিপর্যয়ে ঠাণ্ডা মাথায় খেলতে পারেন যিনি, সেই ফরহাদ হোসেনকেও খুলতে দেননি রানের খাতা। ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন বিপাকে গাজী। প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে ১৩ রান দিয়ে তাসকিনের উইকেট ৩টি।

আরেক প্রান্তে উইকেট পতনের মিছিলেও শামসুর খেলে গেছেন দারুণ সব শট। ছোট দুটি জুটিতে সঙ্গ দিয়ছেন অলক কাপালি ও ইলিয়াস সানি। কিন্তু লম্বা সময় টেকেনি কেউই। গাজীর রান দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১০৩, শামসুর তখন ৬৬ বলে অপরাজিত ৬৬!

একার লড়াইয়ে শামসুর প্রথমবার ভালো একজন সঙ্গী পান আট নম্বরে নামা ফারুক হোসেনকে। সপ্তম উইকেটে ৭৫ রানের জুটি গড়েন দুজন। রান রেটও এই জুটি নিয়ে আসে নাগালে। মোসাদ্দেককে চার মেরে শামসুর স্পর্শ করেন এবারের লিগে নিজের প্রথম শতক।

গাজীর আশা জাগানিয়া এই জুটি ভাঙে ফারুকের বিদায়ে। রজত ভাটিয়ার নতুন স্পেলের প্রথম বলেই বোল্ড ফারুক (২৯)।

আশা হয়ে তবু টিকে শামসুর। সেঞ্চুরির পর আরও ধারালো তার ব্যাট। সাকলাইন সজীবকে মারেন ছক্কা, ভাটিয়ার এক ওভারে ছক্কা ও চার। শেষ ৯ ওভারে গাজীর প্রয়োজন ৭১ রান।

আবাহনীর ত্রাতা হয়ে আবারও তখন দৃশ্যপটে তাসকিন। দ্বিতীয় স্পেলের তৃতীয় বলেই এলবিডব্লিউ করে দেন আবাহনী ও জয়ের মাঝে বাধা হয়ে থাকা শামসুরকে। গাজীর সম্ভাবনাও শেষ তখনই। এগারোতে নেমে মোহাম্মদ শরীফের ২০ বলে ২৫ শুধু কমিয়েছে ব্যবধান।

৪৮১ রান নিয়ে লিগে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় ইমতিয়াজ হোসেনের (৪৯০) ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন শামসুর।

৮ ম্যাচে গাজী ও আবাহনীর পয়েন্টও সমান, ৮। রান রেটে একটু এগিয়ে পাঁচ নম্বরে গাজী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী : ৫০ ওভারে ২৭৬/৬ (তামিম ৫৫, অভিষেক ১০, লিটন ৩৭, শান্ত ২২, ভাটিয়া ৯০*, মোসাদ্দেক ৪৭, আবুল হাসান ২, সাকলাইন ০*; শামসুর ১/৩৬, আশিকুজ্জামান ০/৩১, অলক ১/৫২, সাঈদ আনোয়ার ১/৪৬, মুস্তাফিজ ০/১৮, মেহেদি ২/৩২, সানি ০/১৬, শরিফ ০/৩৩, ফারুক ১/১২)।

গাজী গ্রুপ: ৪৮.১ ওভারে ২৪৪ (এনামুল ০, শামসুর ১৩৬, মেহেদি ০, সাঈদ আনোয়ার ১, ফরহাদ ০, অলক ১৫, সানি ১৩, ফারুক ২৯, মুস্তাফিজ ৫, আশিকুজ্জামান ১০, শরীফ ২৫; তাসকিন ৪/৩২, শাহাদাত ১/৪৯, আবুল হাসান ২/৩৮, ভাটিয়া ২/৪৬, সাকলাইন ১/৪৪, মোসাদ্দেক ০/২২, অমিত ০/১৩)।

ফল: আবাহনী ৩২ রানে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: তাসকিন আহমেদ