‘আইকন’ সাব্বির উড়িয়ে দিলেন শেখ জামালকে

ব্যাটিংয়ে দারুণ এক শতক, বল হাতে এক ওভারে ২ উইকেট। ফিল্ডিংয়ে তো বরাবরই দুর্দান্ত; যথারীতি ছুটলেন, ঝাঁপালেন। সত্যিকারের আইকন ক্রিকেটারের মতোই পারফর্ম করলেন সাব্বির রহমান। প্রাইম ব্যাংককে এনে দিলেন উড়ন্ত এক জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2016, 02:30 PM
Updated : 4 May 2016, 02:39 PM

প্লেয়ার্স ড্রাফটে অনেক প্রতিষ্ঠিত তারকাদের রেখে সাব্বিরকে বেছে নিয়ে প্রাইম ব্যাংক চমকে দিয়েছিল অনেককে। সেই আস্থার প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন সাব্বির। আগে ম্যাচে ফিফটির পর এবার চমৎকার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। মিরপুরে মাহমুদউল্লাহর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ১১৩ রানে হারাল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

শের-ই-বাংলার উইকেট যথারীতি ছিল ব্যাটিং স্বর্গ। মেহেদি মারুফ ও শানাজ আহমেদ উদ্বোধনী জুটিতে প্রাইম ব্যাংককে এনে দেন ৭৯ রান।

লিগে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইনিংস শুরু করলেন এই দুজন, দুবারই গড়েছেন অর্ধশত রানের জুটি।

দ্বিতীয় উইকেটে শানাজ ও সাব্বিরের জুটি ৬১ রানের। শানাজকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার জীবন মেন্ডিস। ঢাকা লিগে এবার প্রথম ম্যাচ খেলেছেন তিনি স্বদেশী অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জোলো পেরেরার জায়গায়।

দুই ওপেনারের বিদায়ে কমেনি রানের গতি। বরং আরও বড় জুটি গড়েন সাব্বির ও চারে নামা নুরুল হাসান। তৃতীয় উইকেটে ১৩২ রানের জুটি গড়েন দুজন ১২৬ বলে।

লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেন নুরুল। আউট হন মাহমুদউল্লাহর দারুণ এক ফিরতি ক্যাচে।

সাব্বির শতক ছুঁয়ে ফেলেন এর আগেই। ২০১০ সালের অক্টোবরে পেয়েছিলেন প্রথম লিস্ট ‘এ’ সেঞ্চুরি, দীর্ঘ অপেক্ষার পর পেলেন দ্বিতীয়টি। ইনিংসটি ছিল দারুণ নিয়ন্ত্রিত। সময় নিয়ে থিতু হয়েছেন, এক-দুই করে নিয়ে এগিয়েছেন। বাজে বলকে দিয়েছে প্রাপ্য সাজা।

শতকের পরই অবশ্য আউট হয়ে যান শফিউল ইসলামের স্লোয়ারে লং অফে ক্যাচ ক্যাচ দিয়ে। ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৯৭ বলে ১০০। সিঙ্গেল নিয়েছেন ৪৯টি, এটিই বলে দিচ্ছে এটা আদর্শ ওয়ানডে ইনিংস।

সাব্বির-নুরুলের বিদায়ের পর শেষ দিকের দাবি মিটিয়েছেন পরের ব্যাটসম্যানরা। শফিউলকে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের মাঝে আছড়ে ফেলেছেন শুভাগত (৮ বলে ১৯)। মাহমুদউল্লাহকে সোজা পুলে ছক্কা মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন ইয়াসির (৫ বলে ১১)। শেষ ওভারে স্লগ সুইপে মাহমুদউল্লাহকে ছক্কা মেরেছেন তাইবুর রহমান (৮ বলে ১৩)।

ওই তাইবুরকে ফেরানো সহ শেষ চার বলে তিন উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। লিস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত পেয়েছেন ৫ উইকেট।

প্রাইম ব্যাংক তোলে ৩১৮, এবারের লিগে বুধবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান।

রান তাড়ায় প্রথম ১০ ওভারেই ছিটকে যায় শেখ জামাল। বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপুর বলে দৃষ্টিকটু বাজে শটে আউট হন দুই ওপেনার। ছক্কা মারতে গিয়ে তাইবুরের দারুণ ক্যাচের শিকার তিনে নামা মার্শাল আইয়ুব। দুর্দান্ত প্রথম স্পেলের পথে রুবেল হেসেন ফেরান লঙ্কান মেন্ডিসকে। শেখ জামাল তখন ৪ উইকেটে ২৪।

খানিকটা প্রতিরোধ গড়া মাহমুদউল্লাকে ফেরান সাব্বির। এক প্রান্ত আগলে ব্যবধান কমানোর লড়াই চালিয়ে যান নাজমুস সাদাত (৭৬)। শেষ দিকে মুক্তার আলির ৩৬ বলে ৪০ রানের ইনিংসে কোনো রকমে শেখ জামাল পেরোয় দুইশ’।

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংকের এটি চার ম্যাচে তৃতীয় জয়। প্রথম দুই ম্যাচে জয়ী শেখ জামাল হারল টানা দুই ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ৫০ ওভারে ৩১৮/৯ (মেহেদি ৩৫, শানাজ ৬৬, সাব্বির ১০০, নুরুল ৬৩, শুভাগত ১৯, তাইবুর ১৩, ইয়াসির ১১, রায়হান ০*, নাজমুল অপু ০; শফিউল ২/৬২, মুক্তার ০/৩৪, রহমান ০/৩৪, সোহাগ ০/৫৬, সাদাত ১/২৩, মেন্ডিস ১/৪২, মাহমুদউল্লাহ ৫/৬৬)।

শেখ জামাল: ৫৬.২ ওভারে ২০৫ (আব্দুল্লাহ ৯, মাহবুবুল ০, মার্শাল ৯, মাহমুদউল্লাহ ৩৭, মেন্ডিস ০, সাদাত ৭৬, সোহাগ ০, জাবিদ ১৫, মুক্তার ৪০, শফিউল ১৬, রহমান ০*; রুবেল ১/৯, নাজমুল অপু ৩/৩৬, শুভাগত ১/৩১, মনির ০/৩৬, সাব্বির ২/৩৫, রায়হান ৩/৫৭)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ১১৩ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাব্বির রহমান।