বোলারদের নৈপুণ্যে তামিমদের দারুণ জয়

ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শুরুর পর ভেঙে পড়া, বড় কিছুর সম্ভাবনা জাগিয়েও মাঝারি স্কোর। বোলিংয়েও দারুণ শুরুর পর প্রতিপক্ষের প্রতিরোধ, ম্যাচ হাতাছাড়া হওয়ার শঙ্কা। সেখান খেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানো – উত্থানপতনের রোমাঞ্চকর এক লড়াই শেষে আবাহনী মাঠ ছাড়ল দারুণ এক জয় নিয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 May 2016, 12:59 PM
Updated : 4 May 2016, 02:48 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে ফতুল্লায় ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবকে ৯ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। আবাহনীর ২২১ রান তাড়ায় ২১২ রানে অলআউট হয়ে ভিক্টোরিয়া পেল লিগে প্রথম হারের স্বাদ।

বল হাতে ৬ উইকেট, ব্যাটিংয়ে ২৫ রান নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েও পরাজিত দলে শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার চতুরঙ্গা ডি সিলভা।

আবাহনীর হয়ে লিগে দ্বিতীয় অর্ধশতক করেছেন তামিম ইকবাল। এক পর্যায়ে দলের রান ছিল ১ উইকেটে ১২২। সেখান থেকে তারা করতে পারেনি আর একশ’ রানও!

উদ্বোধনী জুটিতে অভিষেক মিত্রকে নিয়ে ৯৭ রানে জুটি গড়েন তামিম। অভিষেককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙার পর বাঁহাতি স্পিনে তামিমকেও ফেরান চতুরঙ্গা। 

সঙ্গে কামরুল ইসলাম রাব্বিও উইকেট শিকারে যোগ দিলে আবাহনীর ইনিংসে নামে ছোটো ধস। ৯ রানের মধ্যে হারায় তারা ৪ উইকেট।

আবাহনীকে উদ্ধার করে ষষ্ঠ উইকটে মোসাদ্দেক হোসেন ও আবুল হাসানের ৭২ রানের জুটি। দৃশ্যপটে তখন আবার আবির্ভাব চতুরঙ্গার। ৪৩ রান করা আবুল হাসানকে ফেরানোর পর শেষ ওভারে নেন আরও দুটি উইকেট।

১৮ রানে আবাহনী হারায় শেষ ৫ উইকেট। ৩৫ রানে ৬ উইকেট চতুরঙ্গার, লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথমবার পেলেন ৬ উইকেট।

রান তাড়ায় দুই ওপেনারকে শুরুতে হারায় ভিক্টোরিয়া। এক প্রান্ত আগলে রাখার দায়িত্ব যার, সেই আব্দুল মজিদকে ফেরান তাসকিন আহমেদ।

নাজমুল হোসেন শান্তকে চতুর্থ ওভারেই আক্রমণে আনেন তামিম ইকবাল। প্রথম বলেই ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে ফিরিয়ে দেন অনিয়মিত এই অফ স্পিনার।

সেখানেই থামেননি শান্ত। পরে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফিরিয়েছেন আল আমিনকেও। আগের ৩ ম্যাচে ১০২, ২৭ ও ৫৪ রান করা তরুণ ব্যাটসম্যান এদিনও খেলছিলেন দারুণ। চাপের মধ্যে প্রতিআক্রমণে অর্ধশতক তুলে নেন ৪৬ বলে। কিন্তু খানিক পরই বোল্ড শান্তর বলে (৫৩ বলে ৫৬)।

সাকলাইন সজিব এর আগেই ফিরিয়েছেন থিতু হয়ে যাওয়া মুমিনুল হককে (২০)। লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন পরপর দুই ওভারে বোল্ড করেন অধিনায়ক নাদিফ চৌধুরী ও চতুরঙ্গাকে। ভিক্টোরিয়ার রান তখন ৬ উইকেটে ১১৪।

সপ্তম উইকেটে দারুণ এক জুটিতে আবাহনীর জন্য হুমকি হয়ে উঠছিলেন ধীমান ঘোষ ও সোহরাওয়ার্দী শুভ। ধীমানকে ফিরতি ক্যাচ আউট করে ৬১ রানের জুটি ভাঙেন মোসাদ্দেক।

সোহরাওয়ার্দী চেষ্টা করেছেন এরপরও। শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি। বল বাকি ছিল ১৫টি, কিন্তু ভিক্টোরিয়া গুটিয়ে যায় জয় থেকে ৯ রান দূরে।

চার ম্যাচে আবাহনী জয় তিনটি। ভিক্টোরিয়া জিতেছে ২ ম্যাচ; হার ও টাই একটি করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ৫০ ওভারে ২২১ (তামিম ৬৩, অভিষেক ৪৪, লিটন ১৩, উদয় ৩, শান্ত ১, মোসাদ্দেক ৩৪, আবুল হাসান ৪৩, সাকলাইন ৫, শাহজাদা ৪, জুবায়ের ২*, তাসকিন ১; কামরুল রাব্বি ৩/৩৮, ডলার ০/২২, এনামুল ০/২৮, আল আমিন ০/৪৬, সোহরাওয়ার্দী ০/৪৪, চতুরঙ্গা ৬/৩৫)।

ভিক্টোরিয়া: ৪৭.৩ ওভারে ২১২ (মজিদ ৭, ফজলে রাব্বি ১, মুমিনুল ২০, আল আমিন ৫৬, চতুরঙ্গা ২৫, নাদিফ ১, ধিমান ৩১, সোহরাওয়ার্দী ৪৫, এনামুল ২, ডলার ৭*, কামরুল রাব্বি ০; তাসকিন ২/২৯, শাহজাদা ০/১২, শান্ত ২/৪৩, মোসাদ্দেক ২/৩৪, সাকলাইন ২/৪৬, জুবায়ের ২/৪১)।

ফল: আবাহনী ৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: চতুরঙ্গা ডি সিলভা।