গাজীর জয়ে এনামুলের ঝড়ো শতক

বড় লক্ষ্যের চাপ ছিল না। প্রতিপক্ষ ক্রিকেট কোচিং স্কুলের (সিসিএস) কাগজে-কলমে দুর্বল বোলিং মাঠেও হলো যাচ্ছেতাই। সব কিছুকে দারুণ ভাবে কাজে লাগালেন এনামুল হক। জাতীয় দলের বাইরে থাকা ব্যাটসম্যান উপহার দিলেন ঝড়ো এক সেঞ্চুরি। জিতল তার দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2016, 11:39 AM
Updated : 2 May 2016, 11:40 AM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে সিসিএসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

শক্তি-সামর্থ্যের বিচারের এবারের লিগের দুর্বলতম দল সিসিএস। সোমবারের পারফরম্যান্সেও যথারীতি সেটিরই প্রতিফলন। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় প্রথম ইনিংস শেষেই। সিসিএসকে ১৭৬ রানেই গুটিয়ে দেয় গাজী গ্রুপের বোলার-ফিল্ডাররা।

এই পুঁজি নিয়ে লড়াই করতে হলেও প্রয়োজন ছিল দারুণ কিছু। হলো উল্টো, বাজে বোলিংয়ের পাশাপাশি আলগা ফিল্ডিং। নতুন বলে অবশ্য দারুণ বোলিং করেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তুলে নেন আগের দুই ম্যাচে অর্ধশত করা শামসুর রহমান ও লিগের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান মেহেদি হাসানের উইকেট। কিন্তু বাকি সবাই শর্ট পিচ, হাফ ভলি, ফুল টস আর লেগ স্টাম্পে বোলিং করে গেছেন ক্রমাগত। সেটির ফায়দা পুরো তুলেছেন এনামুল।

প্রথম ওভারেই সাইফুদ্দিনকে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে শুরু করেছিলেন এনামুল। যথারীতি বাজে বলকে প্রতিবারই দিয়েছেন প্রাপ্য সাজা। এদিন সিঙ্গেল নেওয়ার দিকেও মন ছিল তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। বাঁহাতি স্পিনার শাওন গাজীকে ছক্কা মেরে অর্ধশতক স্পর্শ করেছেন ৫৩ বলে।

পঞ্চাশের পর আরও বেশি খুলেছেন হাত। অফ স্পিনার সাইদ সরকারের টানা দুটি ফুল টসে দুটি ছক্কা। শাওনের তিন বলে দুটি চার ও এক ছক্কায় ছুটেছেন ঝড়ের গতিতে। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের দুটি শর্ট বলে ছক্কা ও চারে গিয়েছেন শতকের কাছে। সাইফুদ্দিনকে মিড অফে ঠেলে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন ৮৩ বলে।

তৃতীয় উইকেটে ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে এনামুল গড়েছেন ১৩৯ রানের জুটি। জয়ের খুব কাছে গিয়ে রাজিন সালেহকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েছেন ফরহাদ (৭৫ বলে ৪৫)।

শতকের পর সাইফুদ্দিনের ওই ওভারেই পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান এনামুল। ৪টি চার ও ৭ ছক্কায় ৮৫ বলে রান ঠিক ১০০।

লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে এনামুলের এটি সপ্তম শতক। সবশেষটি করেছিলেন গত ঢাকা লিগের শেষ ম্যাচে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে কলাবাগান একাডেমির হয়ে ১৫০।

সকালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সিসিএসকে জোড়া ধাক্কায় নাড়িয়ে দেন অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ। ফিরিয়ে দেন পিনাক ঘোষ ও আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাইফ হাসানকে।

আগের ম্যাচের আরেক সেঞ্চুরিয়ান সালমান হোসেন এদিনও খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু রান আউট হয়ে যান অর্ধশতকের পরপরই। এরপর এক প্রান্তের ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ার মাঝেই সিসিএসকে একা টেনে নেন উত্তম সরকার।

৫৪ রান করা উত্তম নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন মেহেদির অফ স্পিনে। শেষ উইকেটটিও নিয়ে সিসিএসকে ১৮০ রানের আগেই বেঁধে ফেলেন মেহেদি।

এই রান গাজী গ্রুপ অনায়াসেই তাড়া করে ফেলে এনামুলের ব্যাটে। তৃতীয় ম্যাচে গাজীর এটি দ্বিতীয় জয়। সিসিএস হারল তিন ম্যাচই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিসিএস: ৪৭ ওভারে ১৭৬ (অমিত ২৮, পিনাক ৭, সাইফ ৫, সালমান ৫২, রাজিন ০, উত্তম ৫৪, সাইফুদ্দিন ১, সাইদ ০, নবী ১, নাসুম ১৫*, শাওন ২; শরিফ ২/২২, সাজেদুল ১/২৭, মেহেদি ২/২৭, সাঈদ আনোয়ার ১/৩৫, ফুরকান ১/২৬, শাদ ০/২০, অলক ১/১৪)।

গাজী গ্রুপ: ৩৩.৪ ওভারে ১৭৯/৪ (এনামুল ১০০, শামসুর ৫, মেহেদি ৯, ফরহাদ ৪৫, সাঈদ আনোয়ার ৭*, অলক ৪*; সাইফুদ্দিন ২/২৬, সালমান ০/২১, নাসুম ০/৩৯, শাওন ০/৪৯, সাইদ ০/২৪, রাজিন ১/১৯)।

ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: এনামুল হক।