গ্যালারিভরা দর্শক আর গোটা দেশের প্রত্যাশার চাপটাকে ভার হিসেবে নিচ্ছেনই না মেহেদি। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জানালেন, সেমি-ফাইনাল ম্যাচটি আর দশটা ম্যাচের মতোই!
পরিণতি বোধ দিয়ে অবশ্য বেশ আগেই নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন মিরাজ। দুটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কোনো দলকে নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম অধিনায়ক তিনি। এই দলের কাছে তিনি সত্যিকার অর্থেই নেতা। সতীর্থদের শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছেন মাঠের ভেতরে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে, মাঠের বাইরে ব্যক্তিত্ব দিয়ে।
বয়সের তুলনায় মেহেদির পরিণতিবোধের প্রমাণ মেলে মাইক্রোফোনের সামনেও। সংবাদমাধ্যমের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেও ভড়কে যান না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেমি-ফাইনাল ম্যাচের আগের দিন, বুধবার শের-ই-বাংলায় সংবাদ সম্মেলনেও দারুণ ‘খেললেন’ মিরাজ। ২২ গজে চাপের মাঝে যেমন বরাবরই স্বচ্ছন্দ ব্যাট হাতে, সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্নের পর প্রশ্ন সামলালেন সহজাত দক্ষতায়।
দেশের মাটিতে এত বড় একটা ম্যাচের আগে রোমাঞ্চ, চাপ, খুশি, উত্তেজনা, অনেক অনুভূতিই দোলা দেওয়ার কথা মনে। মিরাজের কোনটা বেশি? প্রাণখোলা হাসিতে অধিনায়কের উত্তরে মিশে থাকল দারুণ আত্মবিশ্বাস।
“এগুলোর কোনোটাই আসলে বেশি না। আমরা যদি এখনই খুশি হয়ে যাই, তাহলে তো এখানেই সব শেষ। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য, একটা করে ম্যাচ ভাববো আর জিতব। এখন হয়ত আমরা সেমি-ফাইনাল স্টেজে আছি; কিন্তু সেমি-ফাইনাল খেলছি, এই চিন্তাও কেউ করছি না। অন্য সব ম্যাচের মতোই কালকে একটা ম্যাচ হবে, আমাদের জিততে হবে। এই তো!”
প্রত্যাশার ভার নিয়ে তবু প্রশ্ন হতে থাকেই, নানা ভাবে। ১৮ বছর বয়সী অধিনায়ক পরিচয় দেন বয়সকে ছাপিয়ে যাওয়া পরিণতিবোধের।
“আমরা যদি রোমাঞ্চিত হয়ে যাই, তাহলে কিন্তু ম্যাচ জিততে পারব না। ক্রিকেট খেলাটাই এমন যে একটা প্রসেসের ভেতর থাকতে হবে। প্রসেস থেকে বের হলেই বিপদ। আমরা অতি রোমাঞ্চিত হলে চাপ কাজ করবে, স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারবে না কেউ। সেমি-ফাইনালের ভাবনা তাই মাথায়ই নিচ্ছি না। কালকে একটা ম্যাচ, আমাদের জিততে হবে। ব্যস।”
চাপটা নিতে না চাইলেও দেশের মানুষের প্রত্যাশার কথা ভাবনায় চলে আসতেই পারে। বৃহস্পতিবারবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিও থাকবে হয়ত টইটম্বুর।
মিরাজ আবারও হাসেন; জানালেন, এসব ভাবনাকে প্রশ্রয়ই দিচ্ছেন না।
“আমি যখন থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, তখন থেকেই মাঠে নামলে পরিবার, দর্শক, এসব চিন্তাও করি না। তখন একটাই চিন্তা থাকে, বলটা আসছে, ভালো খেলতে হবে। রান করতে হবে, কিংবা বল হাতে আছে, উইকেট নিতে হবে। বাইরের কোনো চিন্তা আমার মাথায় ঢোকে না।”