শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে ভারত

ম্যাচের আগে লঙ্কানদের কণ্ঠে ছিল লড়াইয়ের প্রত্যয়। কিন্তু সেটির প্রতিফলন পড়ল না মাঠে, ম্যাচ হলো একতরফা। প্রথম সেমি-ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৯৭ রানে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2016, 10:23 AM
Updated : 9 Feb 2016, 10:23 AM

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৬৭ রান তুলেছিল ভারত। শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কা ৪২.৪ ওভারে গুটিয়ে যায় ১৭০ রানে।

এই নিয়ে পাঁচবার অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ভারত। আগের চার ফাইনালে তারা জিতেছিল তিনবারই।

ম্যাচের শুরুটা ছিল লঙ্কানদের জন্য আশা জাগানিয়া। গুমোট সকালে ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে ভারতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার নতুন বলের দুই পেসার। কিন্তু ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ ঠিকই পথ খুঁজে নিয়েছে বড় স্কোর গড়ার। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের সামর্থ্য ছিল না সেই রানকে টপকে যাওয়ার।

ব্যাট হাতে ঝড় তুলে টুর্নামেন্টের আলোচিত নাম রিশাব পান্তকে এদিন উইকেটে আটকে রাখেন লঙ্কান পেসাররা। আগের চার ম্যাচের মতো এবার দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন আসিথা ফার্নান্ডো, ফিরিয়ে দেন পান্তকে (২৮ বলে ১৪)। আরেকপাশে লাহিরু কুমারা ফিরিয়ে দেন ভারতীয় অধিনায়ক ইশান কিশানকে (২৫ বলে ৭)।

শুরুর ধাক্কা ভারত সামাল দেয় আনমোলপ্রিত সিং ও সরফরাজ খানের ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে ৯৬ রানের জুটি গড়েন দুজন।

এই টুর্নামেন্টে আসার আগেই সরফরাজ ছিলেন মোটামুটি তারকা। ভারতের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে রানের বন্য বইয়ে দিয়েছেন, রঞ্জি ট্রফিতে দেড়শ’ রানের ইনিংস খেলেছেন, আইপিএলে তারকাখচিত রয়াল চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খেলেছেন ম্যাচ জেতানো ইনিংস। এই টুর্নামেন্টেও তিনি ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি, ব্যাটিংয়ের ধরনে অনূর্ধ্ব-১৯ মানের চেয়েও অনেকটা এগিয়ে। আগের চার ম্যাচে ৭৪, ৭৪, অপরাজিত ২১ ও ৭৬ রানের পর এবার সরফরাজ থেমেছেন ৫৯ রানে।

টুর্নামেন্টে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমে আনমোলপ্রিত খেলেছেন ৭২ রানের দারুণ এক ইনিংস। আম্পায়ারের সংশয়পূর্ণ সিদ্ধান্তে শেষ হয় পাঞ্জাবের ১৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের ইনিংসটি।

পাঁচে নেমে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ৪৩ করেছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। শেষ দিকে আরমান জাফর (১৬ বলে ২৯) ও ময়াঙ্ক ডাগারের (১০ বলে ১৭) কার্যকর ব্যাটিংয়ে ভারত তুলে ২৬৭। শেষ ১০ ওভারে আসে ৮৯ রান।

লঙ্কানদের ব্যাটিং সামর্থ্য বিবেচনায় লক্ষ্যটাকে বেশি মনে হচ্ছিলো তখনই। ২২ গজেও মিলেছে সেটির প্রমাণ। আগের ম্যাচে ৯৫ রান করা আভিশকা ফার্নান্দোকে প্রথম ওভারেই হারিয়ে শুরু। কখনোই গতি পায়নি লঙ্কান ইনিংস। ৩৯ রান করতে ৬৭ বল খেলে ফেলেন কামিন্ডু মেন্ডিস। একটু স্বচ্ছন্দে খেলতে থাকা শাম্মু আশান (৪৮ বলে ৩৮) কাটা পড়েন রান আউটে।

ভারতের পেসার রাহুল বাথাম চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন ৬.৫ ওভার বোলিং করে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি স্পিনার মাহিপাল লমরোর চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন মাত্র ৩ বল করেই। কিন্তু ২ বোলার না থাকার সুবিধাও কাজে লাগাতে পারেনি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ৩ উইকেট নেন ভারতের বাঁহাতি স্পিনার ময়াঙ্ক ডাগার, পেসার আবেশ খান দুটি।

উপমহাদেশের দলের বিপক্ষেও দুর্দান্ত জয়ে ভারত ফাইনালের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষকেও দিয়ে রাখল বার্তা। এই কন্ডিশনের জন্য প্রায় পরিপূর্ণ এই দলকে হারানো খুবই কঠিন।