‘মেন্টর’ গেইলের সঙ্গে বরিশালের হয়ে নামার অপেক্ষায় লুইস

ক্রিস গেইলকেই আদর্শ মানেন এভিন লুইস, মনে করেন মেন্টরও। লুইসের বিশ্বাস, বিপিএলে তার শতকটি গর্বিত করবে গেইলকেও। অপেক্ষায় আছেন তিনি বরিশাল বুলসের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ইনিংস ওপেনের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 08:29 PM
Updated : 2 Dec 2015, 12:29 PM

বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, ক্যারিবিয়ান ওপেনার, বিস্ফোরক ব্যাটিং, ছক্কা বৃষ্টি-শব্দগুলো পাশাপাশি বসালে মনে আসে আর চোখে ভাসে একজনকেই। তবে সেই ক্রিস গেইল এবার এখনও পা রাখেননি বাংলাদেশে। মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তবু বারবার উচ্চারিত হলো ওই শব্দগুলো। গেইল না এলেও বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে গেইলকেই মনে করিয়ে দিলেন এভিন লুইস!

ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে লক্ষ্য ছিল ১৫৯। লুইস-ঝড়ে লক্ষ্যটাকে ছেলেখেলা বানিয়ে জিতল বরিশাল বুলস। ৭ চার ও ৬ ছক্কায় ৬৫ বলে অপরাজিত ১০১ রান লুইসের।

এই রান-বল-ছক্কার সংখ্যাতেও আসলে ফুটে উঠছে না লুইসের বিধ্বংসী চেহারাটা। সেটা বুঝেছেন মাঠে আর টিভি পদার্য় যারা খেলা দেখেছেন। লুইসের ব্যাট ছিল খ্যাপাটে। মেরেছেন বিশাল সব ছক্কা।

বোলারদের মনোবল গুঁড়িয়ে দেওয়া ওই শটগুলোই আসলে মনে করিয়ে দিচ্ছিল গেইলকে। টি-টোয়েন্টিতে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের শেষ কথা গেইল। তার সঙ্গে তুলনা মানে প্রশংসার চূড়ান্ত।

লুইস কিন্তু একটুও বিব্রত নন এই তুলনায়। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বরং গর্বভরে শোনালেন গেইলকে নিয়ে অনেক কথা।

“গেইলই আমার প্রিয় ব্যাটসম্যান। আমার খেলার ধরন তার সঙ্গে মিলে যায়। আমিও তার মতো অনেক ছক্কা মারি, বড় বড় ছক্কা। তার মতোই ছক্কা মারতে ভালোবাসি। গেইল আমার মেন্টর, আমি তাকে অনুসরণ করি।”

বিপিএলের প্রথম আসরের প্রথম দিনেই অপরাজিত ১০১ রান করেছিলেন গেইল! লুইসই প্রথম শতকে অপরাজিত ১০১ রানে। এই ইনিংস দিয়ে বিপিএলে শতক এখন ৮টি। এর মধ্যে মাত্র ৬ ইনিংস খেলে একাই ৩টি শতকের মালিক গেইল!

লুইস আর গেইল দুজনেই ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে হলেও একই দ্বীপের নয়। গেইল জ্যামাইকান, লুইস ত্রিনিদাদের। তবে ব্যাটিংয়ের ওই ধরনের কারণেই গেইলের মন কাড়তে পেরেছেন লুইস, পেয়েছেন সংস্পর্শ।

ত্রিনিদাদের হয়েই প্রথম নজর কেড়েছিলেন লুইস। ২০১৩ সালে প্রথম ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) অবিক্রিত ছিলেন, জেদ চেপে গিয়েছিল মনে। সেই বছরই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টিতে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর হয়ে ৫ ম্যাচে ২১১ রান করেছিলেন ১৪১.৬১ স্ট্রাইক রেটে।

পরের বছর ত্রিনিদাদের হয়েই খেললেন সিপিএল। ৮ ম্যাচে রান করেছিলেন ৩২১, ছক্কা ১৯টি। গেইলের জ্যামাইকার বিপক্ষেই ৮ ছক্কায় ৭২ করে নজর কাড়লেন গেইলের। এই বছর সিপিএলে খেলেছেন সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের হয়ে। দল পাল্টালেও বদলায়নি ব্যাটিং। গেইলের জ্যামাইকার বিপক্ষেই আবার ৪৫ বলে করলেন ৮২। ত্রিনিদাদের বিপক্ষে ৪০ রানেই ছক্কা পাঁচটি!

সিপিএল সাফল্যের হাত ধরেই বিপিএলে আগমণ। প্রথম কয়েক ম্যাচে শুধুই দর্শক হয়ে সুযোগের অপেক্ষায় থাকা। আর সুযোগ পেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই বাজিমাত!

লুইসের বিশ্বাস, ঝড়ো এই ইনিংস গর্বিত করবে তার মেন্টরকেও।

“উইকেট ভালো ছিল, আমি নিজের খেলাটা খেলতে চেয়েছি। ঠিক করেছিলাম নিজের জোনে বল পেলেই মারব। গেইল অবশ্যই গর্বিত হবে। আমরা দুজনই ক্যারিবিয়ানের, সে অবশ্যই গর্বিত হবে আমাকে নিয়ে।”

গেইলের কতটা গর্ব হলো, সেটা জানার সুযোগও আসতে পারে কদিন পর। লুইসের জন্যও অপেক্ষা করছে দারুণ রোমাঞ্চ।  এক মৌসুম পর আবার বরিশালের হয়ে খেলতে আসবেন গেইল। এবারের আসরে ঢাকায় পরের পর্বে বরিশালের প্রথম ম্যাচ থেকেই তার খেলার কথা। মেন্টরের সঙ্গেই হয়ত তাই ব্যাটিং ওপেন করার সুযোগ পাবেন লুইস!

সম্ভাবনাটায় শিহরিত লুইস নিজেও।

“আমার জন্য এটি হবে অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। কখনই তার সঙ্গে ওপেন করার সুযোগ হয়নি। আশা করি, এবার সুযোগ হবে। আমার জন্য সেটি হবে স্বপ্ন পূরণ!”