সৌম্যর অর্ধশতক, চিটাগংয়ের আরেকটি হার

ঘরের মাঠেও হারের বলয় থেকে বেরোতে পারছে না চিটাগং ভাইকিংস। তামিম ইকবালের দলকে ৯ উইকেটে হারিয়ে আপাতত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠেছে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2015, 09:39 AM
Updated : 1 Dec 2015, 02:33 PM

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১১১ রান করেছিল চিটাগং। রংপুর সেটা পেরিয়ে যায় ১ উইকেট হারিয়েই, ৩ ওভার বাকি থাকতে। অনায়াস এই জয়ে রানরেটও বাড়িয়ে নিয়েছে সাকিবের দল।

১০২ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের খুব কাছে চলে যায় রংপুর। পরে জহুরুল ইসলাম আউট হলেও আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার অপরাজিত থাকেন ৫৬ বলে ৫৮ রানে।

নিজেদের মাঠে এই নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ হারল চিটাগং, ছয় ম্যাচে পঞ্চম হারে তলানিতেই থাকল তারা। ষষ্ঠ ম্যাচে রংপুরের এটি চতুর্থ জয়।

জয়ের পাশাপাশি রংপুরকে স্বস্তি দিয়েছে সৌম্য ও জহুরুলের ইসলামের রানে ফেরা। লক্ষ্য ছোট থাকায় ফর্মে না থাকা দুই ব্যাটসম্যান নিয়েছেন উইকেটে সময় কাটানোর সুযোগটি। দেখেশুনে খেলার পাশাপাশি দারুণ কিছু শটও খেলেছেন দুজন।

প্লেয়ার্স বাই চয়েজ-এ প্রথম ডাকেই দলে নেওয়া সৌম্য এই ম্যাচের আগে ছিলেন হতাশার প্রতিশব্দ। চোট কাটিয়ে ফিরে ৫ ম্যাচে করেছিলেন ৬৭ রান। এই মাচে নিজের সেরা বিধ্বংসী চেহারায় না থাকলেও খেলেছেন আত্মবিশ্বাস জাগানিয়া দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস।

আগে তিন ম্যাচে জহুরুল করেছিলেন ১৯ রান। পছন্দের জায়গা টপ অর্ডারে সুযোগও পাচ্ছিলেন না। মঙ্গলবার ইনিংস উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগালেন দারুণ ভাবে। প্রাপ্য অর্ধশতকটি পাননি নিজের দায়েই। ৪৪ বলে ৪৭ রান করে উইকেট উপহার দিয়ে এসেছেন শফিউল ইসলামকে। পরের ওভারেই জিতে যায় রংপুর।

চিটাগংয়ের হারের বীজ বোনা হয়ে গিয়েছিল ব্যাটিং ব্যর্থতাতেই। উমর আকমলকে উড়িয়ে এনেও মেলেনি ব্যাটিং ব্যর্থতার সমাধান।

উমরকে এই ম্যাচে পেতে মরিয়া ছিল চিটাগং। আগের রাতেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে সকাল ১০টায় ঢাকায় এসেছেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান। ঢাকা থেকে উমরকে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে সরাসরি মাঠে উড়িয়ে আনে চিটাগং। খেলার ক্লান্তি আর ভ্রমণ ক্লান্তি মিলিয়ে শ্রান্ত ব্যাটসম্যান প্রতিদান দিতে পেরেছেন সামান্যই। ৮ বলে করেছেন ১!

ব্যর্থ উমরের বড় ভাই কামরান আকমলও। দলের বিদেশি ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিয়ে না খেলায় আগের ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। লাভ তাতেও কিছু হয়নি। দীর্ঘক্ষণ উইকেটে থেকেও ডানা মেলতে পারেননি অধিনায়ক নিজেও।

দিলশানের কাছে দলের দাবিটা সংবাদ সম্মেলনে আলাদা করে বলেছিলেন তামিম। মঙ্গলবার দিলশানের শুরুটায় ছিল দায়িত্ব নিয়ে খেলারই ইঙ্গিত। শুরু থেকে সতর্ক ছিলেন তামিমও। দুজন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান উইকেটে থাকার পরও পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে ৩৬।

অমন শুরুর পর প্রয়োজন ছিল উইকেট ধরে রেখে রানের গতি বাড়ানো। সেটি পারেননি কেউই। আরাফাত সানিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন দিলশান (১৯ বলে ১৮)। ১৩ ওভারের বেশি উইকেটে থেকে মাত্র দুটি চারে ৪৩ বলে ৩৬ করেছেন তামিম!

আগের দিন হাস্যকর রান আইটে তুমুল আলোচনার জন্ম দেওয়া কামরান আকমল এদিনও প্রথম ৬ বলে তিন দফায় শঙ্কা জাগিয়েছিলেন রান আউটের। পরে আরাফাত সানিকে পরপর দুই বলে ছক্কা-চার মারার পর আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটু ভাবে। স্টাম্প সোজা বল কাট করতে গিয়ে বোল্ড (১২)।

টানা ব্যর্থতার ধারা ধরে রেখে সাকলাইন সজীবকে ছক্কা মারার পরের বলেই আউট হয়েছেন এনামুল হক (১৪)। টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া সাকিবের দারুণ এক ফ্লাইটেড বলে কটবিহাইন্ড হয়েছেন উমর আকমল।

শেষ পর্যন্ত নাঈম ইসলাম (১৬ বলে ১৬) চিটাগংয়ের রানকে নিয়ে যান ১১০ এর ওপারে। শেষ ৭ ওভারে মাত্র দুটি চার মারতে পেরেছে চিটাগং!

এক মাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিব ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। আরাফাত সানি দুটি নিয়েছেন ২৭ রানে।

বোলারদের সৌজন্যে পাওয়া ভিত্তিটা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে পরে রংপুরকে দুর্দান্ত জয় এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার।