ঢাকার হাতে সিলেটের টানা চতুর্থ হার

কুমার সাঙ্গাকারার অর্ধশতকে সিলেট সুপার স্টার্সের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ গড়া ঢাকা ডায়নামাইটস সহজ জয় পেয়েছে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো মুশফিকুর রহিমের দল হেরেছে ৩৪ রানে।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2015, 02:33 PM
Updated : 27 Nov 2015, 04:42 PM

চার ম্যাচে এটি ঢাকার তৃতীয় জয়। অন্য দিকে চারটি ম্যাচই হারল সিলেট।

শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৬ রান করে ঢাকা। চলতি আসরে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ রান। জবাবে এক বল বাকি থাকতে ১৩২ রানে অলআউট হয়ে যায় সিলেট।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পঞ্চম ওভারেই দিলশান মুনাবিরাকে হারায় সিলেট। আবুল হাসানের স্লোয়ারে মিড অনে সাদমান ইসলামের তালুবন্দি হন মুনাবিরা (১৬)।

ব্যক্তিগত চার রানে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে নাসির হোসেনের হাতে পাওয়া জীবন কাজে লাগাতে পারেননি অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জশুয়া কব (১৫)। মোশাররফ হোসেনের বলে বোল্ড হয়ে বিদায় নেন তিনি।

দুটি চার হাকিয়ে শুরুটা দারুণ করেছিলেন মুমিনুল হক (১২)। কিন্তু নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। মোশাররফের ভেতরে আসা নিচু বল কাট করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন তিনি।

দুই অঙ্কেই যেতে পারেননি রবি বোপারা। মোশাররফের বলে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে সীমানায় ম্যালকম ওয়ালারের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো সিলেট পিছিয়ে পড়ছিল রান রেটেও। তাই ঝুঁকি নিতে হচ্ছিল অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে। শেষরক্ষা করতে পারেননি তিনি। হাসানের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফিরে যান তিনি।

লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহকে রিভার্স সুইপ-সুইপ করে পরপর দুই চার হাঁকানো মুশফিকের ইনিংস থেমে যায় ২৩ রানেই।

মুশফিক ফিরে যাওয়ার সময় প্রথম জয়ের জন্য সিলেটের প্রয়োজন ছিল ৭ ওভারে ৮৭ রান। নুরুল হাসান-নাজমুল হোসেন ৩ ওভারে লক্ষ্য নামিয়ে এনেছিলেন ৫১ রানে। ১৮তম ওভারে জোড়া আঘাতে নাজমুল হোসেন ও নাজমুল ইসলামকে বিদায় করে নাটকীয়তার সব সম্ভাবনাই শেষ করেন দেন ইয়াসির।

৩৫ রানে অপরাজিত থাকা নুরুল হাসান পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন কেবল।

১৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে ঢাকার সেরা বোলার মোশাররফ। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন ইয়াসির, হাসান ও মুস্তাফিজ।

এর আগে শেষ পর্যন্ত ভালো সংগ্রহ গড়লেও শুরুটা ভালো ছিল না ঢাকার। চতুর্থ বলেই সৈকত আলীকে (শূন্য) হারায় তারা। মোহাম্মদ শহীদের বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেন সৈকত।

আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সাদমান ইসলাম (১৫) এবার নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিন চার হাঁকানো এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ফিদেল এডওয়ার্ডসের বলে বোল্ড হয়ে যান।

৩৩ রানে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ঢাকা প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে সাঙ্গাকারা ও নাসির হোসেনের ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে এই দুই জন গড়েন ৬৬ রানের ভালো একটি জুটি। নাসুমের বলে নাসির বোল্ড হয়ে ভাঙ্গে বিপজ্জনক হয়ে উঠা এই জুটি। ২৯ বলে তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ রান করেন ঢাকার আইকন খেলোয়াড় নাসির।

বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলা লাহিরু থিরিমান্নে দুই চারে দারুণ শুরু করলেও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৩ রান করে স্বদেশের দিলশান মুনাবিরার বলে বোল্ড হয়ে যান শ্রীলঙ্কার এই ব্যাটসম্যান।

১৯তম ওভারে ফিরে যান ৯টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকানো সাঙ্গাকারা। শহীদের বলে মুমিনুল হকের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় তার ৫৬ বলে খেলা ৭৫ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংসটি।

দিনের প্রথম ম্যাচের পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বলেছিলেন, ব্যাটসম্যানরা তাড়াহুড়া করছে বলে বড় স্কোর হচ্ছে না। পরের ম্যাচেই সাঙ্গাকারা দেখালেন এই পিচে আদর্শ ব্যাটিং কেমন হওয়া উচিত।

শুরুতে দেখেশুনে খেলে উইকেটে থিতু হলেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে খেললেন দারুণ সব শট। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পেল ঢাকা।  

সাঙ্গাকারার উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিতে পারেননি সিলেটের কেনো ব্যাটসম্যান। আগের তিন ম্যাচের মতো আবারও লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে পথ হারায় দলটি।