মাশরাফির চাওয়া পূরণ করা জয়ে শীর্ষে কুমিল্লা

পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্সকে ব্যাটে-বলে উড়িয়ে দিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নিষিদ্ধ সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলতে নেমে রংপুর হেরেছে ৯ উইকেটে।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Nov 2015, 10:03 AM
Updated : 27 Nov 2015, 01:25 PM

আগের টানা দুই ম্যাচ জিতলেও রান রেট আরও বাড়াতে না পারার আক্ষেপ ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার। কুমিল্লা অধিনায়কের সব চাওয়া পূরণ হয়েছে এই ম্যাচে। রংপুরকে রেকর্ড সর্বনিম্ন ৮২ রানে গুটিয়ে দিয়ে কুমিল্লা জিতেছে ১১.৫ ওভারেই।

আগের ম্যাচেই বরিশাল বুলসকে ৮৯ রানে অলআউট করেছিল কুমিল্লা। আগে ব্যাট করে বিপিএলে সবচেয়ে কম রান ছিল সেটিই। একদিন পরই রংপুরকে এই তেতো স্বাদ দিল কুমিল্লা।

প্রথম ম্যাচ হেরে শুরু করলেও টানা তিন জয়ে এই ম্যাচ শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে কুমিল্লা। সমান ৬ পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে পিছিয়ে থেকে দুইয়ে আছে রংপুর।

বোলিংয়ে আবারও কুমিল্লার নায়ক নুয়ান কুলাসেকারা। আগের ম্যাচে বিপিএলে প্রথমবার খেলতে নেমেই শ্রীলঙ্কার এই পেসার ম্যাচ-সেরা হয়েছিলেন ৩ উইকেট নিয়ে। সেদিন যেখানে শেষ করেছিলেন, শুক্রবার শুরু করলেন যেন সেখান থেকেই। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে এবার নিয়েছেন ১২ রানে ৪ উইকেট।

শুরুতে উইকেট কিন্তু এতটা দুরূহ ছিল না। উইকেটের আচরণেও খুব একটা অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। একের পর এক বাজে শটে উইকেট উপহার দিয়ে এসেছে রংপুরের ব্যাটসম্যানরা।

পরে কুমিল্লায় ব্যাটিংয়েও প্রমাণ হয়েছে, চাইলে এই উইকেটে রান করা খুব কঠিন নয়। ওপেনার মাহমুদুল হাসান আউট হয়েছিলেন ১১ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৫৫ রানের জুটিতে ম্যাচ শেষ করে দেন ইমরুল কায়েস ও মারলন স্যামুয়েলস। ২৯ বলে ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ইমরুল, ২৪ বলে ৪২ রানে অপরাজিত স্যামুয়েলস।

এর আগে রংপুরকে হারের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরাই।

বড় আশা নিয়ে ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’-এ প্রথম ডাকেই যাকে নিয়েছিল রংপুর, সেই সৌম্য সরকার ব্যর্থ আরও একবার। কুলাসেকারাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়েছেন ৫ রানে। টুর্নামেন্টের ৫ ম্যাচে সৌম্যর রান মোটে ৬৭!

পরের বলেই লেন্ডল সিমন্স অনুসরণ করেছেন উদ্বোধনী জুটির সঙ্গীকে। কুলাসেকারার বলেই বাজে এক শটে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে (৩)।

কুলাসেকারার জোড়া আঘাতের পর রংপুরকে চেপে ধরেন কুমিল্লার অন্য বোলাররা। সুনিল নারাইনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন জহুরুল ইসলাম (৪)। আবু হায়দার রনির বলে এলবিডব্লিউ সাকিবের বদলে এই ম্যাচে রংপুরের অধিনায়ক মিসবাহ (৬)। যদিও নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন মিসবাহ, বলটি পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে।

তিনে নামা মোহাম্মদ মিঠুন আগলে রেখেছিলেন এক প্রান্ত। জুটি গড়ার চেষ্টা করেছিলেন থিসারা পেরেরাকে নিয়ে। তবে সম্ভাবনাময় সেই জুটিও ভাঙে রান তেষ্টায়। আবু হায়দারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৯ রানে আউট পেরেরা।

মিঠুনের ২৬ রানে ফলো থ্রুতে অসাধারণ এক ফিরতি ক্যাচ নিয়েছিলেন আবু হায়দার। কিন্তু বলটি হতে জমানোর পরও শেষ মুহূর্তে মাটি স্পর্শ করলে বেঁচে যান মিঠুন। তবে কাজে লাগাতে পারেননি সেই সুযোগ। পরের ওভারেই কুলাসেকারাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন সেই আবু হায়দারের হাতেই (২৮)।

তৃতীয় ওভারের পর ১৩তম ওভারের আগে আর একটিও চার মারতে পারেনি রংপুর। গোটা ইনিংসে সব মিলিয়ে চার মোটে ৬টি! মিঠুন ছাড়া দু অঙ্ক ছুঁয়ছেন আর কেবল সাকলাইন সজীব (১১*)।

৮৩ টি-টোয়েন্টিতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ৪ উইকেটে পেলেন কুলাসেকারা। আগের বার ৪ উইকেট ছিল ৩২ রানে।

আরও একবার দুর্দান্ত বোলিংয়ে নজর কেড়েছেন আবু হায়দার রনি। ১২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন ১৯ বছর বয়সী এই বাঁ হাতি পেসার। নারাইন ও আসার জাইদি নিয়েছেন একটি করে।

বোলারদের গড়ে দেওয়া ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে পরে দলকে দারুণ জয় এনে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা।