দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ দুই উইকেটে ৩২ রান। ডিন এলগার ১০ ও হাশিম আমলা ৩ রানে ব্যাট করছেন। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে এই দুই জনই ক্রিজে ছিলেন। আবার যখন দুই জন ক্রিজে এলেন ততক্ষণে ২০ উইকেটের পতন দেখেছে নাগপুর। স্বাগতিকদের বাড়তি সুবিধা এনে দিতে বানানো পুরোপুরি স্পিনিং উইকটে জয়ের জন্য আরও ২৭৮ রান চাই অতিথিদের।
চতুর্থ ইনিংসে ৩১০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অষ্টম ওভারেই স্টিয়ান ফন জিলকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ফন জিল।
প্রথম দিনও নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছিলেন ইমরান তাহির, সেদিনও শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় দিনও পারেননি তাহির, অমিত মিশ্রর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি।
এর আগে ১৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ১৭৩ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। তাহির ও মর্নে মরকেলের দারুণ বোলিংয়ে ৪৬.৩ ওভার স্থায়ী হয় স্বাগতিকদের ইনিংস।
শিখর ধাওয়ানের ৩৯ আর চেতেশ্বর পুজারার ৩১ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস ভারতকে এক সময়ে দুই উইকেটে ৯৭ রানের দৃঢ় অবস্থানের ওপর দাঁড় করায়। তাহির ধাওয়ানকে উইকেটরক্ষক ড্যান ভিলাসের গ্লাভসবন্দি করার পর দিক হারায় স্বাগতিকরা।
রোহিত (২৩), অধিনায়ক বিরাট কোহলি (১৬) ও মিশ্র (১৪) ছাড়া ভারতের শেষ আট ব্যাটসম্যানের আর কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি।
৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার তাহির। পেসার মর্কেল তিন উইকেট নেন ১৯ রানে।
বৃহস্পতিবার সকারে ২ উইকেটে ১১ রান নিয়ে নাগপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। লাঞ্চের আগেই তাদের ইনিংস গুটিয়ে যায় ৭৯ রানে।
১৯৯২ সালে বর্ণবাদের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর এটাই দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে কম রান।
অবশ্য ৭৯ করতে পেরেও নিজেদের কিছুটা ভাগ্যবান ভাবতে পারে প্রোটিয়ারা। এক সময় তো শঙ্কা ছিল আরও কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার! ১২ রানেই হারিয়েছিল তারা প্রথম ৫ উইকেট! টেস্ট ইতিহাসেই এটি দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বাজে শুরু। এর আগে ১৯০২ সালে কেপটাউনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা ১৪ রানে।
যথারীতি প্রোটিয়াদের মূল হন্তারক ছিলেন অশ্বিন। ৩২ রানে ৫ উইকেট নেন এই অফ স্পিনার। ৩১ টেস্টেই ৫ উইকেট পেলেন তিনি ১৪ বার!
বাঁহাতি স্পিনার রবিন্দ্র জাদেজা ৪ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ রানে। বাকি একটি উইকেট লেগ স্পিনার মিশ্রর। প্রথম দিন শেষ বিকেলে দুটি ওভার বোলিং করেছিলেন ইশান্ত শর্মা। ইনিংসের বাকি সব ওভার করেছেন ভারতের তিন স্পিনার।
প্রথম দিন লাঞ্চের আগেই বোঝা গিয়েছিল এই উইকেট স্পিন স্বর্গ। প্রচণ্ড শুষ্ক, মন্থর ও টার্নিং উইকেটে অনুমিতভাবেই খাবি খেয়েছে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। ভারতীয় স্পিনারদের সামনে অসহায় ব্যাটসম্যানদের ছিল আসা-যাওয়ার মিছিল।
১ রানে আউট হয়েছেন অধিনায়ক আমলা, রানের খাতা খোলার আগেই জাদেজাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। যা একটু লড়াই করেছেন কেবল জেপি ডুমিনি। সাতে নেমে ৩৫ রান করেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। দু অঙ্ক ছুঁয়েছেন আর কেবল ফাফ ডু প্লেসি (১০) ও সাইমন হার্মার (১৩)।
অভাবনীয় কিছু না হলে ৯ বছর পর বিদেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজ হার এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।