রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারতকে হারাল দ.আফ্রিকা

বিফলে গেল রোহিত শর্মার দারুণ শতক। এবি ডি ভিলিয়ার্সের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে তিনশ’ রানের বড় সংগ্রহ গড়া দক্ষিণ আফ্রিকা নখ কামড়ানো উত্তেজনার প্রথম ওয়ানডেতে ৫ রানে হারিয়েছে ভারতকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2015, 07:36 AM
Updated : 11 Oct 2015, 11:56 AM

শেষ ওভারে গড়ানো ম্যাচটি জিততে দারুণ ভূমিকা রাখেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই বোলার কাগিসো রাবাদা আর ইমরান তাহির।

রোববার কানপুরের গ্রিন পার্কে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৩০৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই মাঠে ওয়ানডেতে এটাই প্রথম তিনশ’ রানের ইনিংস। জবাবে রাবাদা (২/৫৮), তাহিরের (২/৫৭) দারুণ বোলিংয়ে ৭ উইকেটে ২৯৮ রানের বেশি তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অষ্টম ওভারেই শিখর ধাওয়ানকে হারায় ভারত। বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মর্নে মর্কেল। তবে দ্বিতীয় উইকেটে অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ১৪৯ রানের জুটি গড়ে দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেন রোহিত।

রাহানেকে ডেভিড মিলারের ক্যাচে পরিণত করে ২৬.১ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন বেহারদিন। এরপর বিরাট কোহলি দ্রুত ফিরে গেলেও ভারতকে এগিয়ে নিতে থাকেন রোহিত। তাহিরকে ফিরতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে ১৫০ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

অষ্টম ওয়ানডে শতক পাওয়া রোহিতের ১৩৩ বলের ইনিংসটি ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা সমৃদ্ধ। এর আগে ধর্মশালায় প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১০৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি; প্রথম ওয়ানডেও হল তার পুনরাবৃত্তি।  

৪৭তম ওভারের প্রথম বলে রোহিত ফিরে গেলেও মহেন্দ্র সিং ধোনি ও সুরেশ রায়না ক্রিজে ছিলেন বলে ম্যাচে ভালোভাবেই ছিল ভারত। কিন্তু সেই ওভারের পঞ্চম বলে রায়নাকে লেগ স্পিনার তাহির ফিরিয়ে দিলে ভারতের অধিনায়কের জন্য কাজ অনেক কঠিন হয়ে যায়।

চেষ্টা করেছিলেন ধোনি; কিন্তু তা দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। রাবাদার করা শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১১ রান প্রয়োজন ছিল স্বাগতিকদের। প্রথম তিন বলে চার রান নেন ধোনি-স্টুয়ার্ট বিনি। পরের দুই বলে এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের জয়ের স্বপ্ন ভেঙে দেন তরুণ রাবাদা।

এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভালো সূচনা এনে দেন কুইন্টন ডি কক ও হাশিম আমলা। ডি কককে (২৯) ফিরিয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ৮.৪ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেও দলকে ১ উইকেটে ১০৪ রানে পৌঁছে দেন আমলা ও ফাফ দু প্লেসি।

২৪তম ওভারে লেগ স্পিনার অমিত মিশ্রর বলে আমলা (৩৭) বোল্ড হলে ক্রিজে আসেন ডি ভিলিয়ার্স। দু প্লেসির সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়ার সময় সতর্কই ছিলেন এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান।

উমেশ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে অর্ধশতক করা দু প্লেসির বিদায় কোনো প্রভাব ফেলেনি দক্ষিণ আফ্রিবার ইনিংসে। দু প্লেসির (৬২) বিদায়ের পর হাত খুলে খেলা শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।

ভারতের মাটিতে ৪৯টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা থাকা মিলার এখানে খেলা প্রথম ওয়ানডেতে ভালো করতে পারেননি। ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটিতে তার অবদান ১৫ রান।

মিলারের পর দ্রুত বিদায় নেন আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জেপি দুমিনি। তারা ব্যর্থ হলেও বেহারদিন ১৯ বলের ছোট্ট ইনিংসে ঝড় তুললে তিনশ’ পার হয় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে ৪.৫ ওভারে ৬৫ রানের জুটি গড়েন ডি ভিলিয়ার্স-বেহারদিন।

শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শতকে পৌঁছানো ডি ভিলিয়ার্স অপরাজিত থাকেন ১০৪ রানে। তার ৭৩ বলের বিধ্বংসী ইনিংসটি সাজানো ৬টি ছক্কা ও ৫টি চারে। অর্ধশতকে পৌঁছাতে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান খেলেন ৫৪ বল, রান তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে খেলেন আরও ১৯ বল।

ভারতে ওয়ানডেতে সর্বশেষ ৭ ইনিংসে এটি ডি ভিলিয়ার্স পঞ্চম শতক।

৫ চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন বেহারদিন।

আগামী বুধবার ইন্দোরে হবে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টি।