পাকিস্তানে দুটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি ওয়ানডে খেলে বুধবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। সবকটি ম্যাচই হেরেছে বাংলাদেশর মেয়েরা। শক্তি-সামর্থ্যে দুদল প্রায় কাছাকাছিই। কিন্তু জয়ের সম্ভাবনা জাগানো তো বহুদূর, প্রথম ওয়ানডে বাদ দিলে বাকি ম্যাচগুলোয় ন্যূনতম লড়াইও করতে পারেনি মেয়েরা।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে মেয়েদের পারফরম্যান্স নিয়ে। নতুন মৌসুমে গত ৮ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছিল মেয়েদের ক্যাম্প। পাকিস্তান সফরের জন্য তাই প্রস্তুতিটা ছিল দেড় মাসের। প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট ছিলেন কোচ গামাগেও।
বুধবার দেশে ফিরে অধিনায়ক সালমা খাতুন বাজে পারফরম্যান্সের দায় দিয়েছিলেন ব্যাটিং ব্যর্থতাকে। বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কোচও শোনালেন ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা।
“সিনিয়র ক্রিকেটাররা ব্যাটিং ভালো করতে পারেনি। প্রস্তুতি ভালো ছিল। এখানে অনুশীলন হয়েছে, অনুশীলন ম্যাচ খেলেছি আমরা। ব্যাটিং নিয়ে আলাদা করে কাজ করা হয়েছে। কিন্তু টপ অর্ডার ব্যাটারদের কেউই উইকেটে থাকতে পারেনি। ব্যাটিং নিয়ে আমি খুবই হতাশ।”
প্রথম ওয়ানডেতে রুমানা আহমেদের ৭০ ছাড়া পুরো সিরিজে অর্ধশত নেই বাংলাদেশের আর কারও। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার আয়েশা রহমান দুই ম্যাচে ২৩ ও ৩৯ করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শারমিন আখতার, ফারজানা হক, অধিনায়ক সালমা খাতুনরা ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ।
কোচের প্রশ্নের তির মূলত সিনিয়র ব্যাটারদের দিকেই।
“সিনিয়র ব্যাটাররা দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে পারেনি। দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং করেছে। এজন্যই ব্যাটিংয়ের অবস্থা এত বাজে ছিল। নতুন দুজন মেয়ে ভালোই করেছে। কিন্তু সিনিয়র ব্যাটারদের নিয়ে আমি খুশি নই। ওরা দায়িত্বহীন ব্যাটিং করেছে।”
মেয়েদের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন নেই কোচের। এজন্যই টানা ব্যর্থতায় অবাক তিনি।
“মেয়েরা আরও অনেক ভালো ব্যাটিং করতে পারে। অনুশীলনে, ম্যাচে তো ভালো ব্যাটিং করে। পাকিস্তানের বোলিংও এমন ভালো কিছু ছিল না। একজন বাঁহাতি স্পিনার ছিল শুধু ভালো (আনাম আমিন), পেসাররা তো অনেক মন্থর বোলিং করে। উইকেটও অনেক ভালো ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। আমাদের ভালো ব্যাটিং করতে না পারার কারণ নেই। আমি তো জানি, মেয়েদের সামর্থ্য, অনেক ভালো করতে পারে ওরা। কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করতে পারেনি মেয়েরা।”
কোচের দুষ্টি প্রশ্নবিদ্ধ মেয়েদের সিনিয়রদের ক্রিকেটারদের নিবেদনও।
“নাহিদার বয়স মাত্র ১৬। সুযোগ পেয়ে ভালো করেছে। ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট পেয়েছে। ও ভালো করতে পারলে সিনিয়রা কেন পারবে না? জ্যোতি (নিগার সুলতানা) নতুন উইকেটকিপার, ওর পারফরম্যান্সও ছিল ভালো। ওরা দলের জন্য খেলেছে। সিনিয়রা কেন পারবে না?”
অধিনায়ক সালমা খাতুন ১৮টি ওয়ানডে ও ২৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। বাংলাদেশের বিবেচনায় অভিজ্ঞতা অনেক। কিন্ত বোলিং পারফরম্যান্সটা গ্রহণযোগ্য হলেও ব্যাট হাতে তার পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪৩ ইনিংসে পঞ্চাশ ছুঁতে পেরেছেন মাত্র একবার!
অধিনায়কের পারফরম্যান্স নিয়েও আলাদা করে প্রশ্ন তুললেন কোচ।
“সালমা টি-টোয়েন্টির এক নম্বর অলরাউন্ডার, অনেক দিন ধরে খেলছে। ভালো ক্রিকেটার সে। কিন্ত তার মতো একজন ক্রিকেটারের আরও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করা উচিত ছিল।