২ টেস্টের সিরিজ খেলতে এখন বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সফর স্থগিত করে দেয় দেশটি। বাংলাদেশের ক্রিকেট আঙিনা ছাপিয়ে সব মহলেই প্রচণ্ড সমালোচিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার না আসা। বিতর্ক, প্রশ্ন, সন্দেহ, আলোচনা-সমালোচনা চলছে এখনও।
এসব নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বুধবার বিসিবির সভায়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে কথা বললেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান। ব্যাপারটায় আবেগের একটু বাড়াবাড়ি দেখছেন তিনি।
“আমরা জানি, অস্ট্রেলিয়া না আসার দেশের মানুষ কষ্ট পেয়েছে। সবাই হতাশ। আপনারা হতাশ, আমরা হতাশ। কিন্তু তার পরও, একটু বেশিই হচ্ছে…আমরা বাঙালিরা একটু বেশিই আবেগপ্রবণ বলে কি না জানি না, একটু বেশিই হচ্ছে ব্যাপারটি।”
নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অতি সতর্কতার ইতিহাস মনে করিয়ে দিলেন বিসিবি প্রধান।
“একটা সাধারণ ব্যাপার মনে রাখা উচিত, অস্ট্রেলিয়া কিন্তু এমনিতেই অনেক স্পর্শকাতর। আগেও এই অ্যালার্টের জন্য ওরা নানা দেশে যায়নি, এমনকি বিশ্বকাপেও যায়নি। কিন্তু গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তো অ্যালার্ট থাকা সত্ত্বেও ওদের আমরা এনেছিলাম! এবারও আইসিসি বা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না সফরে আসার জন্য।”
নিজেদের উদাহরণ দিয়ে নাজমুল হাসান বললেন, বাংলাদেশে আসতে না পেরে অস্ট্রেলিয়া আসলেই হতাশ।
“আমাদেরও পাকিস্তানে দল পাঠানোর কথা ছিল, আমরা পাঠাইনি। তারপর কি আমাদের অধিনায়ক কোনো বিবৃতি দিয়েছে? বা দেওয়ার মত অবস্থা ছিল? অধিনায়ক বা প্রধান নির্বাহী বা কোচ কি বিবৃতি দিয়েছিল যে ‘আমরা খুব মর্মাহত যেতে পারলাম না বলে। কিছু করার ছিল না। আমরা উদগ্রীব হয়ে আছি’, এসব কেউ বলে? ওরা কিন্তু বারবার ক্ষমা চেয়েছে, দু:খপ্রকাশ করেছে। সত্যি সত্যিই মর্মাহত ওরা।”
বিসিবি প্রধানের দাবি, এই সিদ্ধান্ত আসলে ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে।
“ওদের বোর্ড প্রেসিডেন্ট ওয়ালির (এডওয়ার্ডস) সঙ্গে শেষ দিনেও কথা হয়েছে আমার। ওরা আসবে, নিশ্চিত ছিল। পরে সে বলল যে, ‘আমি আর পারলাম না।’ আইসিসিও ওদেরকে বলেছিল আসতে। কাজেই আইসিসির ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কিছু করার ছিল না। আগেও বলেছিলাম আমি, এখানে যা হয়েছে সেটা ক্রিকেটের বাইরে। আমাদের সীমার বাইরে চলে গেছে। না হলে ওরা আসত।”
এসব নিয়ে অনুমান নির্ভর কথায় উল্টো ক্ষতি হচ্ছে, দাবি নাজমুল হাসানের।
“টিভিতে দেখি, প্রতিদিন টক শো হচ্ছে। কেউ বলছে তিন মোড়লের ব্যাপার, কেউ বলছে আমাদের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র, কেউ বলছে নারীদের দল পাকিস্তানে পাঠানো হলো বলে…এসব বলে উল্টো আমাদেরকে বেকায়দায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। আমি আইসিসিতে যাচ্ছি, গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। সেখানে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন সৃষ্টি করা হচ্ছে। যারা বলছে, তারা তো জানে না! এভাবে একেকজন টিভিতে যা ইচ্ছা বলছে, আমাদের জন্য এসব খুব ক্ষতিকর হচ্ছে।”