অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা পরিদর্শক দলের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার বৈঠকের পর সফর নিয়ে শঙ্কা কেটে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল। কিন্তু পরিদর্শক দলের সবাইকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া হুট করেই ডেকে পাঠানোয় আবার দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সফর নিয়ে আরও একবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান। তিনি জানান, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে আশ্বস্ত করতে যা করেছে বিসিবি, তার চেয়ে বেশি কিছু আর করার নেই।
বিসিবি প্রধান জানালেন, অস্ট্রেলিয়াকে যে ধরনের নিরাপত্তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তেমন কিছু কখনও দেখেনি ক্রিকেট।
“আমরা যে পরিকল্পনাটা নিয়েছি, সেটা সর্বোচ্চ। কোনো দেশে এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এর আগে কোনো দলকে প্রস্তাব করা হয়নি। তারপরও যদি ওরা না আসে, তাহলে সেটি হবে দুঃখজনক।”
পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন বলে জানালেন বিসিবি প্রধান।
“সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই সব হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি সরাসরি সম্পৃক্ত না হতেন, তাহলে মাত্র দেড় দিনের মধ্যে সবগুলো নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা সব ফেলে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বসে যেতেন না। মন্ত্রী থেকে শুরু করে সচিব, সবাই সময় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই সব হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাদের বলেছেন, ‘আমি নিজে নিশ্চয়তা দিচ্ছি, কোনো সমস্যা নেই।”
অস্ট্রেলিয়া সরকার বাংলাদেশে ভ্রমণ নিয়ে যে সতর্কতা জারি করেছে, সেটাতে ক্রিকেট দলের ভয়ের কিছু দেখছেন না নাজমুল হাসান।
“ওরা যে অ্যালার্ট দিয়েছে, সেটা তো পর্যটকদের জন্য; সাধারণ ভ্রমণকারীদের জন্য। ক্রিকেট দল এলে তারা তো আর একা একা ঘুরে বেড়াবে না! এমন যদি হতো যে, অস্ট্রেলিয়া সরকার পর্যটকদের বলে দিচ্ছে, ‘বাংলাদেশে যেও না’, বা বাংলাদেশে থাকা অস্ট্রেলিয়ানদের বলতো ফিরে যেতে, তাহলে না হয় বোঝা যেত। এরকম তো কিছু না! বলা হয়েছে সতর্কতার মধ্যে থাকতে। ক্রিকেট দল তো পুরো নিরাপত্তায় থাকবে।”
যে হুমকির কারণে নিরাপত্তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার এই শঙ্কা, সেটি নিয়েও একটি ধারণা দিলেন বিসিবি প্রধান।
“তারা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা পরিদর্শক দল পাঠিয়েছে, সেটাও কোনো বিশ্বস্ত সূত্র না। একটা জায়গা থেকে শুনতে পেরেছিল। এখানে স্থায়ী অস্ট্রেলিয়ানরা প্রতি বছর অক্টোবরে একটা অনুষ্ঠান করে কোনো একটা হোটেলে, ওখানে কিছু একটা গণ্ডগোল হতে পারে বলে তথ্য ছিল।”
বাংলাদেশে ক্রিকেট খেলায় কখনও কোনো সমস্যা ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না বলে বিশ্বাস বোর্ড প্রধানের।
“আমি সব সময় বলে আসছি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশে কোনো দল ক্রিকেট খেলতে আসতে পারছে না, এটা আমি কোনো ভাবেই মানতে পারব না। নিরাপত্তার সমস্যার যে কথা তারা বলছে, সেই ভিত্তিটাই আমি মানি না। এমনকি বিএনপির পক্ষ থেকেও একটা বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এটা তো অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু ক্রিকেটের কারণেই এটা সম্ভব। কিছুদিন আগে তিনটি দেশ এখানে খেলে গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী এসে নানা জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছেন। নিরাপত্তার সমস্যার কথা মানা যায় না।”
২-১ দিনের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া সিদ্ধান্ত জানাবে বলে আশা করছেন বিসিবি প্রধান।