বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আইসিআরসি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের এমন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এটিই প্রথম। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী দিনে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। টুর্নামেন্টের বাকি তিন দল-ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
মঙ্গলবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্ট শুরুর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে ৫ দলের অধিনায়ক মুখোমুখি হয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমের।
টুর্নামেন্টের সুদৃশ্য ট্রফিকে সামনে রেখে অধিনায়কেরা শোনালেন শিরোপা জয়ের স্বপ্নের কথা। তবে একটি স্বপ্ন তাদের পূরণ হয়েই যাচ্ছে। এমন একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলতে পারাই তাদের কাছে প্রায় স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো। ৫ অধিনায়কই শোনালেন সেই রোমাঞ্চ, ভালো লাগার কথা।
আলম খান অধিনায়ক, বাংলাদেশ
এতদিন আমাদেরকে যারা অন্যভাবে দেখত, তারা এখন খেলার মাঠে আমাদেরকে দেখে নতুন করে ভাববে। তারা বুঝবে যে আমরাও দেশের জন্য কিছু করতে পারি। সমাজে চারপাশে যারা আছেন, তারাও হয়ত এগিয়ে আসবেন আমাদের পাশে।
টুর্নামেন্টে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি অনেক দিন ধরেই খেলছে। সেখানে আমাদের প্রস্তুতি মাত্র ৩-৪ মাসের। স্যাররা আমাদের কোচিং করিয়েছেন। তারপরও আমরা চেষ্টার কমতি রাখব না।
আর এইরকম টুর্নামেন্ট নিয়মিত হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে আরও ক্রিকেটার বের হবে। এমন শারীরিক সমস্যা আছে যাদের, তারা স্বপ্ন দেখবে দেশের হয়ে খেলার।
ইয়ান নাইন অধিনায়ক, ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ড দলের সবাই খুব রোমাঞ্চিত। আইসিআরসি, বিসিবিসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এখানে আসার পর থেকে সবচেয়ে যেটা ভালো লাগছে, প্রতিবন্ধী ক্রিকেট নিয়েও সবার এখানে যতটা আগ্রহ। আমাদের জন্য অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশে এসে দারুণ লাগছে। প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছি আমরা। আমরা এখানে এসেছি ট্রফি নিয়ে ফিরে যেতে। আশা করি, সেটা করতে পারব। তবে অন্য চারদলও নিশ্চয়ই এটাই চাইবে! সবার প্রতি শুভকামনা।
হাসনাইন আলম অধিনায়ক, পাকিস্তান
আইসিআরসি ও বিসিবিকে ধন্যবাদ এত বড় একটি উদ্যোগ নেওয়ায়। প্রতিবন্ধী ক্রিকেটের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক ও স্মরণীয় মুহূর্ত। বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধীদের ক্রীড়ার ক্ষেত্রেও এটি একটি বড় মাইলফলক হয়ে থাকবে।
আশা করি, আইসিসিও এখন প্রতিবন্ধী ক্রিকেটে মনোযোগ দেবে। ভালোবাসার এই খেলা যেন আমরা আরও বেশি খেলতে পারি, সেটির ব্যবস্থা করবে।
তবে শিরোপার লড়াই ছাপিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই টুর্নামেন্টে যারা খেলবে এবং যারা দেখবে ও জানবে, সবাই বুঝতে পারবে যে, ইচ্ছাশক্তিই হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সামর্থ্য ব্যাপারটি নির্ভর করে আত্মবিশ্বাসের ওপর। পাকিস্তান প্রতিবন্ধী ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন দেশজুড়ে ৬০০-৭০০ প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারকে সেই আত্মবিশ্বাসটা জুগিয়েছে।
আমাদের চাই শুধু সুযোগ। সুযোগ পেলে আমরা লুফে নেব। আশা করি, এই টুর্নামেন্ট এই বাস্তবতাকে প্রতিষ্ঠায় বড় ভূমিকা রাখবে।
দিনেশ কুমার অধিনায়ক, ভারত
আইসিআরসি ও বিসিবিকে হৃদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাই যে, এমন একটি আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের প্রতিবন্ধী ক্রিকেটের পাশে দাঁড়িয়েছে, এত বড় অনুপ্রেরা জুগিয়েছে। আশা করি, সামনেও এই আয়োজন নিয়মিত হতে থাকবে নানা দেশে।
আমার একটু বেশিই ভালো লাগছে, কারণ মনেই হচ্ছে না আমি দেশের বাইরে এসেছি। মনে হচ্ছে দেশেই আছি। সবাই অনেক আন্তরিক, অনেক সহায়তা করছে।
মোহাম্মদ আশরাফ অধিনায়ক, আফগানিস্তান
সবার মতো আমিও আইসিআরসি ও বিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের দলের হয়ে। অসাধারণ একটি সুযোগ এটি। প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার হয়েও এমন বহুজাতিক একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাব, একসময় ভাবতে পারিনি।