বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের খেলা দিয়ে শুরু হবে পাঁচ জাতির এই প্রতিযোগিতা। টুর্নামেন্টের অপর তিন দল হল ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান।
আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) বাংলাদেশ-এর হেড অব ডেলিগেশন ক্রিস্টন চিপোলা জানান, এই টুর্নামেন্ট নিয়ে খেলোয়াড়দের চোখে আলো দেখছেন তারা।
“শারীরিক প্রতিবন্ধকতা দায় নয়; ওরাও দেশের সম্পদ হতে পারে। এই টুর্নামেন্ট নিয়ে সবাই রোমাঞ্চিত। সবার চোখে আলো দেখছি আমরা। এটা কেবলই শুরু, ভবিষ্যতে আরও অনেক কিছুই হবে।”
আইসিআরসির সঙ্গে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) ও বিসিবি। টুর্নামেন্ট ও বিসিবির শারীরিক প্রতিবন্ধীদের নিয়ে ক্রিকেট দলের শুভেচ্ছা দূত হয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই টুর্নামেন্টের মিডিয়া পার্টনার দেশের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
বিসিবি আশা করছে, এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীতার সঙ্গে যে চিরায়ত কুসংস্কার ও বৈষম্য জড়িয়ে আছে, তা কমবে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গীরও পরিবর্তন হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বেশি গুরুত্ব পাবে।
নিজাম উদ্দিন মনে করেন, এই টুর্নামেন্টের মধ্য দিয়ে সবার কাছে এই বার্তা পৌঁছাবে, শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও সমাজের মূলধারায় অংশ নিতে পারে এবং স্বাভাবিক মানুষের মতোই খেলাধূলায় অংশ নিতে পারে।
“শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজে নানা বাধার সম্মুখীন হয়। তারা খুব সহজেই নেতিবাচক মানসিকতা ও বৈষম্যের শিকার হয়। শুধু তাই-ই নয়, সামাজিকভাবেও নানা রকমের অবমাননার শিকার হতে হয় তাদের। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্যের ওপর নির্ভরশীল হিসাবে দেখা হয় এবং ধরেই নেওয়া হয় তারা কোনো কাজ করতে পারবে না।”
“খেলাধুলায় (তাদের) অংশগ্রহণ এ ধরনের অবমাননা, কুসংস্কার ও বৈষম্য কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এখনই সময় খেলাধুলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে, তাদের দক্ষতা তুলে ধরে একজন স্বতন্ত্র ও পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে তাদের দেখার। আমরা ইতিহাস গড়তে যাচ্ছি”, যোগ করেন তিনি।
এমনিতে এসব টুর্নামেন্টের সঙ্গে আইসিসির সম্পৃক্ততা নেই। তবে প্রথমবারের মত এত বড় টুর্নামেন্ট হচ্ছে দেখে ভবিষ্যতের ভাবনায় একজন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। সব ঠিক থাকলে সে পর্যবেক্ষক হতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও দেশের অভিষেক টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল।
বুধবার সকাল ১০টায় টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে। এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী বীরেন শিকদার, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ও আইসিআরসির ক্রিস্টিন চিপোলা।
মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইসিআরসি বাংলাদেশের ফিজিক্যাল রিহ্যাবিলিটেন প্রজেক্ট ম্যানেজার গার্ড ভ্যান ডে ভ্যালডে ও মাশরাফি বিন মুর্তজা।