যেভাবে বাছাই হল বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দল

সুঠাম শারীরিক গড়ন আর মাঠে চটপটে নড়াচড়া- ক্রিকেটপাগল বাংলাদেশ এতদিন এমন ক্রিকেটার দেখে অভ্যস্ত হলেও এবার শারীরিক ঘাটতি নিয়ে চলা তরুণরাও মাঠ মাতাবে ব্যাটে বলে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2015, 05:35 AM
Updated : 24 August 2015, 10:39 AM

নানা ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা ২০ জন প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারকে নিয়ে বিকেএসপিতে চলছে ‘বিসিবি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টিম’ এর অনুশীলন শিবির। এ দলটিই ২ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় প্রতিবন্ধীদের নিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় পাঁচ জাতির টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে অংশ নেবে।

স্বাগতিকরা ছাড়াও এই টুর্নামেন্টে খেলবে আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা এ টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। টুর্নামেন্টের মিডিয়া পার্টনার দেশের প্রথম ইন্টারনেট সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। 

খেলাধুলায় প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) সহযোগিতায় কয়েকটি ধাপে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ দলের এই মেধাবী খেলোয়াড়দের বাছাই করা হয়।

রেডক্রস ২০১৩ সালে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করা সাভারের সিআরপিকে (সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলেটেশন অফ দ্য প্যারালাইজড) একটি ক্রিকেটদল গড়তে সহায়তা দেয়। ওই বছর প্রতিবন্ধীদের নিয়ে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনেও সহায়তা দেয় রেডক্রস।

সিআরপির প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলটি ওই বছরের ১৭ থেকে ২০ মার্চ ভারতের ডিজ্যাবলড স্পোর্র্টিং সোসাইটির (ডিএসএস) দলের বিরুদ্ধে তিন দিনের একটি টুর্নামেন্টে খেলে।

গত বছর সিআরপির প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের পাশাপাশি, বাংলাদেশ ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ডিজ্যাবলড অ্যাসোসিয়েশন এবং ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) প্রতিবন্ধীদের মধ্যে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু করে।

এ বিষয়টি আরও এগিয়ে নিতে ২০১৪ সাল জুড়ে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি), প্যারালিম্পিকস, স্পেশাল অলিম্পিকস এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় আন্তর্জাতিক রেডক্রস।

গত নভেম্বরে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট নিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিনার আয়োজনের পাশাপাশি প্রতিবন্ধী ক্রিকেটার ও কোচদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। বিসিবি, ব্রিটিশ হাই কমিশন এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড ওই আয়োজনে সহায়তা দেয়।

ওই কর্মশালার মাধ্যমে ক্রিকেটার, কোচ, কর্মকর্তা, ফিজিও এবং আগ্রহীরা প্রতিবন্ধী ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা পান।

এরপর চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পিডিএফ ও সিআরপির তত্ত্বাবধানে থাকা পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী ক্রিকেটারদের উপযোগী খেলার সরঞ্জাম দেয় আন্তর্জাতিক রেডক্রস।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জন্য এরপর শুরু হয় প্রতিবন্ধী ক্রিকেটদল গড়ার কাজ। রেডক্রসের সহযোগিতায় মার্চে হয় ‘ট্যালেন্ট হান্ট ক্যাম্প’। এই ক্যাম্পে আসা ১৪৯ জন প্রতিবন্ধীর মধ্যে থেকে প্রাথমিক দলের জন্য নির্বাচিত হন ২৬ জন ক্রিকেটার।

কোন ধরনের প্রতিবন্ধীরা এই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে- তা ওই ‘ট্যালেন্ট হান্ট ক্যাম্প’ চলাকালেই ঠিক করা হয়।

যারা হুইলচেয়ার ব্যাবহার করেন, তারা আঞ্চলিক ক্রিকেটে খেলতে পারলেও পাঁচ জাতির এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবেন না।