মুশফিকদের জন্যও নতুন অভিজ্ঞতা

বৃষ্টির কারণে প্রথম দিনের পর আর খেলাই হয়নি মিরপুর টেস্টে। তবে শেষ দিনের খেলা বাতিলের সময় বৃষ্টির ছিটেফোটাও ছিল না। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলছেন, এভাবে খেলা বাতিল হওয়াটা তাদের জন্যও নতুন অভিজ্ঞতা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 09:12 AM
Updated : 4 August 2015, 09:11 AM

এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো টেস্টে পাঁচদিনের চারদিনই খেলা হলো না। সোমবার ম্যাচ ড্র ঘোষণার পর যখন সংবাদ সম্মেলনে এলেন মুশফিক, ঘেমে নেয়ে তখন তিনি একাকার। প্রায় কাঠফাটা রোদে কিছুক্ষণ ফুটবল খেলেছেন, ঘেমে যাওয়ারই কথা। দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে নটায়। কিন্তু তখন ফুটবল নিয়ে ড্রেসিংরুম থেকে বেরুলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ক্রিকেট নয়, শুরু হলো ফুটবল! রোদে তখন চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার মত অবস্থা।

বৃষ্টি নেই, অথচ খেলা হলো না। সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বললেন, তাদের জন্যও এটি নতুন অভিজ্ঞতা।

“আমরা ওয়ার্ম আপের আগেই শুনতেই পাই খেলা হচ্ছে না। সিদ্ধান্তটি ম্যাচ অফিসিয়ালরাই নিয়ে থাকেন। এটা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা, এর আগে কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি।”

মুশফিক জানালেন, মাঠের অবস্থা দেখে আম্পায়াররাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

“যেটা জানতে পারলাম, আউটফিল্ডের কিছু জায়গায় ভেজা রয়েছে। সূর্যের দেখা মিললেও যা শুকাতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগবে। তারপর যতক্ষণ খেলা হবে, ততক্ষণে ফল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। এসব ভেবেই হয়তো তারা মনে করেছে, খেলা বাতিল করার এটাই সবচেয়ে ভালো সময়।”

সেই সিদ্ধান্তে মুশফিকদের বিস্মিত হওয়ার কারণ আছে যথেষ্টই। তবে এসব ব্যাপার নিয়ে মুখ খোলায় নিয়মের কড়াকড়িও আছে। বিস্মিত হওয়ার ভাবনাটা হয়তো তাই মুখে আনলেন না মুশফিক।

“বিস্মিত বলতে...আগে যেটা বললাম, কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। আমরা খেলার জন্য উন্মুখ ছিলাম। আমরা এখন যদি ইনিংস ঘোষণাও করতাম ওদের কিন্তু পুরো দিন খেলতে হত। হয়তো ফল হতো না, কিন্তু আমরা কিছু অর্জন করতে পারতাম। হয়তো ম্যাচ অফিসিয়ালরা যা ভেবেছেন সেটা তাদের ব্যাপার। নিয়ম নিয়ে তো আর আমরা কিছু বলতে পারব না।”

রোববার দুপুর ২টার পর থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি মিরপুরে। তারপরও খেলা না হওয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে শের-ই-বাংলার ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মুশফিকের মনে অবশ্য প্রশ্ন নেই।

“এখানকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অন্যান্য মাঠের মতোই অনেক ভালো। আউটফিল্ডের ৯০ শতাংশ ঢাকা ছিল। এত বড় মাঠের পুরোটা কাভার করা খুব কঠিন। সূর্য যতক্ষণ থাকলে মাঠ শুকানো যেত, সেটা হয়তো পাওয়া সম্ভব হয়নি। এই জন্য ম্যাচ রেফারি যেটা ভেবেছেন সেটাই করেছেন।”

তারপরও হয়ত মাঠ শুকানোর অপেক্ষা করে পরে খেলা চালানো যেত। কিন্তু ফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই দেখেই বাতিলের সিদ্ধান্ত, ধারণা মুশফিকের।

“ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি হলে বা ফল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে হয়তো খেলা হতে পারতো। তারা হয়তো মনে করেছেন, এই সময়ে তিনটা ইনিংস শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।”

মাঠে নেমে দেখা গেছে বাউন্ডারি সীমানার কাছের জায়গাগুলো বেশ ভেজা, স্যাঁতস্যাঁতে। অনেক জায়গাই কালো হয়ে আছে। তিনদিন কাভারের নিচে থাকা জায়গার ঘাস সবুজ থেকে হয়ে গেছে হলদেটে।

খেলা শুরুর নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৫০ মিনিট আগে তাই আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয় দিনের খেলা। ম্যাচের মতো তাই সিরিজেও সমতা।

খেলা বাতিল করার পর আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো গাজী টিভিকে বলেছেন, আউটফিল্ড এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটের উপযোগী নয়। খেলার জন্য মাঠ প্রস্তুত করতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগবে। ম্যাচের যা পরিস্থিতি তাতে শেষ দিনে চার/পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে খেলা শুরুর কোনো অর্থ হয় না।