ব্যাটসম্যানদের পরের চ্যালেঞ্জের কথা জানালেন মুশফিক

দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে থিতু হওয়ার খুব বেশি সুযোগ আসে না। তাই উইকেটে একবার টিকে গেলে সতীর্থদের কাছ থেকে যতটা সম্ভব বড় ইনিংস দেখতে চান মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের অধিনায়ক মনে করছেন, টেস্টে থিতু হওয়ার পর ইনিংস বড় করাটাই এখন ব্যাটসম্যানদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ।  

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2015, 07:33 AM
Updated : 3 August 2015, 07:35 AM

সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক জানান, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি বছরে তাদের শেষ টেস্ট সিরিজে এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করবেন তারা।  

“আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করব। অন্তত যেন একশর বেশি রানের ইনিংস খেলতে পারি। তাতে করে দলের জন্য বড় অবদান রাখা হবে। এটাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ। এ বছর আমাদের আরো দুটি টেস্ট আছে। চেষ্টা করব এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে।”

আগামী অক্টোবরে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজ দিয়ে চলতি বছরে মুশফিকদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও শেষ হবে।

নিজেদের সর্বশেষ চার টেস্টে ১৮টি ৩০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, যার সর্বোচ্চ সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৮৯ রান। ঢাকা টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে পাঁচজন ব্যাটসম্যান ৩০ বা তার বেশি রান করলেও অর্ধশতকে পৌঁছান কেবল মুশফিক (৬৫)। গত রোববার তাই সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন, টেস্টে উইকেটে থিতু হয়ে ফিরে যাওয়া অপরাধ। তার সঙ্গে একমত মুশফিকও।

“টেস্ট ক্রিকেটে ৩০/৩৫ রান করে আউট হয়ে যাওয়া অবশ্যই ‘ক্রাইম’। আমরা টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দল। প্রতিদিন আমাদের সামনে বড় দলের বিপক্ষে দারুণভাবে থিতু হওয়ার সুযোগ আসবে না। সুতরাং যেদিনই থিতু হবেন, আপনার উচিত হবে যতোটা সম্ভব বড় স্কোর করা।”

“প্রথমত নিজের জন্য তো বটেই, বড় স্কোর করলে সেটা দলের জন্যও কাজে লাগবে। একশ’ হোক বা তার বেশি, টেস্ট জেতা বা ড্র করার জন্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা করতে না পারলে কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। সে দিক থেকে চিন্তা করলে এটা অবশ্যই একটা বড় ক্রাইম,” যোগ করেন স্বাগতিক অধিনায়ক।  

মুশফিক জানান, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ব্যক্তিগতভাবে সবাই থিতু হয়ে ফিরে যাওয়া সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন। তিনি মনে করেন, থিতু হওয়ার পর ইনিংস বড় করার ভাবনাটাও একটা চাপ হয়ে থাকতে পারে। এই সময়ে নির্ভার খেলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

“অনেক সময় অনেকে ভেবে থাকে যে, এই সময়টা আসছে এখন, আমাকে টিকে থাকতে হবে। এভাবে চিন্তা করলে শট খেলা বন্ধ হয়ে যায়, চাপ তৈরি হয় এবং ভুল করে ফেলে। আমার মনে হয়, ওই সময় শুধু পরিস্থিতি চিন্তা করে খেলতে হবে। বড় একটা জুটি গড়ার কথা চিন্তা করতে হবে। কিছু কিছু জিনিস আছে, যেখানে আমরা উন্নতি করার চেষ্টা করছি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে খেলার সময় তা মনে থাকে না।”

ঘরোয়া ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে পার্থক্যটা বিশাল। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় ইনিংস খেলার অভ্যাস তৈরি হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তা কাজে লাগবে বলে মনে করেন অধিনায়ক।

“এখন দেখা যাচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটের ১০০ রানের ইনিংস খেলি, এখানে এসে তা ৩০/৪০ হচ্ছে। তবে রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ, আর রাতারাতি এর পরিবর্তন হবে না। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে যতো বেশি ১০০/২০০ বা ২৫০ রানের ইনিংস খেলা যাবে আত্মবিশ্বাস ততো বাড়বে।”