শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোনে ‘জনযুদ্ধ’ কমান্ডার মেজর জিয়া পরিচয়ে চাঁদা দাবি করা হয় বলে জানান অধ্যাপক সামাদী।
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে নগরীর মতিহার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তিনি থানায় পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।”
এর আগের অধিকাংশ অভিযোগও অপরিচিত ফোন থেকে হুমকির হওয়ায় কাউকে ধরা যায়নি বলে জানান তিনি। তবে বিষয়টি ‘আইটি এক্সপার্ট’ দিয়ে খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার রাত ৮টা ২৯ মিনিটে একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে ফোন আসে।
পরিচয় জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি নিজেকে বিডিআর সেলিম বলে পরিচয় দেয়।
এক সময় সে তার নেতার হাতে ফোন দিয়ে কথা বলতে বলে। ওই নেতা নিজেকে ‘জলযুদ্ধ’র কমান্ডার মেজর জিয়া নামে পরিচয় দেয়।
“ওই নেতা দলের কিছু কর্মী পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আহত হয়েছে এবং ভারতে তাদের চিকিৎসা চলছে জানিয়ে আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
“পরে অবশ্য সেই দাবি ৫০ হাজার টাকায় নেমে আসে।”
তিনি টাকা দিতে পারবেন না জানালে ‘জিয়া’ তার সন্তানের প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলে জানান অধ্যাপক সামাদী।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, এর আগে ‘লাল বাহিনী’, ‘পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি’সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের কাছে চাঁদা দাবি করেচে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা।
চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বা এ ঘটনাটি পুলিশ কিংবা অন্য কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহা. আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্বদ্যিালয়ে গত ছয় মাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের কাছে ফোন করে চাঁদা দাবি ও নানা হুমকি দেওয়ার মতো উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটেছে।
“অনেকে হয়ত ভয়ে তাদেরকে টাকাও দিচ্ছে, যার কারণে এটা আরও বাড়ছে। আমরা বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতি সভাপতি আনন্দ কুমার সাহার কাছে ‘লাল বাহিনী’র সদস্য পরিচয়ে চাঁদা দাবি করে।
গত ১০ মার্চ ‘লাল বাহিনী’র পরিচয়ে ফোনে চাঁদা দাবি করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. আবুল কাশেমের কাছে।
১২ মার্চ একই ধরনের হুমকি পান দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
২১ মার্চ ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মজুমদার ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাসকেও এভাবে হুমকি দেওয়া হয়।